মোঃ সাইফুল ইসলাম
মানিকগঞ্জের ঘিওরে তেরশ্রী গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। আজ তেরশ্রী গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামের ৪৩ জন লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল । তাঁদের স্মরণে এখানে সরকারি অনুদানে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান করা হয়েছে। প্রতি বছর এই দিনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে পুস্পস্তম্ভক অর্পন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮টার দিকে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় পয়লা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এস.এম ফেরদৌস। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আ’লীগ সভাপতি বীরমুক্তি যোদ্ধা এ্যাড.গোলাম মহীউদ্দীন, বীরমুক্তি যোদ্ধা জেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক পিপি আব্দুস সালাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার তোবারক হোসেন লুডু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি সরকার রাখী, সহকারী কমিশনার ভুমি সৈয়দা সামিরা, বীরমুক্তি যোদ্ধা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন খান জকি,উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল আজিজ মিয়া, সাংবাদিক মোঃ মজিবর রহমান ,মুক্তিযোদ্ধা টাইগার লোকমান হোসেন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে এক আলোচনা সভা হয়, সভায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। ৭১ সালের নভেম্বর মাসে মানিকগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে কোনঠাঁসা হয়ে পড়ে পাক বাহিনী। ২২ তারিখে ভোরে তেরশ্রী গ্রামে রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী পুরো গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। বাড়ির পর বাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। গ্রাম জুড়ে শুরু হয় নরকীয় হত্যাযজ্ঞ। বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে টানা ৭ ঘণ্টায় তেরশ্রীর জমিদার সিদ্ধেশ্বর প্রসাদ রায় চৌধুরী, তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ হত্যা করা হয় ৪৩ জনকে। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় পুরো তেরশ্রী গ্রাম। হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া পরিবারের অনেকেই আজও মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদিকে নতুন প্রজন্মকে তেরশ্রী গণহত্যাসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে স্মৃতিস্তম্ভের পাশে একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও পাঠাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।