আশুলিয়া প্রতিনিধি : আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মূহুর্মূহু সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে ব্যবসায়ী, আবাসিক এলাকার বসতকারিসহ সাধারণ মানুষকে প্রাণ রক্ষায় দৌঁড়ে পালাতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় ৬টি ব্যবসা কেন্দ্র, ৪টি আবাসিক কক্ষ ও একটি ওয়ার্কশপ ভস্মীভূত হয়েছে। ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস এর সদস্যরা ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এসময় ফলধারী নারিকেল গাছসহ কয়েকটি তরতাজা বৃক্ষ অগ্নিকান্ডের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হয়েছে। এ ঘটনায় একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতকে এম্বুলেন্সযোগে রাজধানীতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেল ৫টায় আশুলিয়ার নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কের বাইপাইল থানা গেটের বিপরীতে কুলফুতনেছা দ্বিতীয় তলা মার্কেটের নিচতলা ও মার্কেটের পিছনে খলিলুর রহমানের মালিকানাধীন ছারছিনা এন্টারপ্রাইজ নামে বিভিন্ন কোম্পানীর সিলিন্ডার গ্যাস বোতল ব্যবসায়ীর গোডাউনে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ মার্কেটের পিছনে খলিলের গ্যাস সিলিন্ডার রক্ষিত গোডাউনে তারা আগুন দেখতে পান। মূহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পার্শ্ববর্তী আবাসিক কয়েকটি কক্ষে এবং দোকানপাটে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পরপর বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আতঙ্কিত হয়ে আবাসিক বসবাসকারি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ প্রাণ রক্ষায় দৌঁড়ে পালাতে থাকে। এসময় স্থানীয়রা ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেন। ঘন্টাব্যাপী চেষ্টায় তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। আগুনে ছারছিনা এন্টারপ্রাইজের গুদাম ঘর, শো-রুম, ডিসটিনাশন টেকনোলজি এন্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, মা ড্রাইভিং এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, দিনাজপুর প্রিন্টার্স এন্ড প্যাকেজিং, সরকার মটরস, একটি ভাংগারির দোকানসহ ৪টি আবাসিক কক্ষ ভস্মীভূত হয়। ফলধারী নারিকেল গাছসহ কয়েকটি বৃক্ষও ভস্মীভূত হতে দেখা গেছে।
ভাংগারি ব্যবসায়ী জাহিদ জানান, তার দোকানের মালামাল সব পুড়ে গেছে। তার ক্যাশে ৭ লাখ টাকাও ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত হয়েছে বলে কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি জানান। আগুনে পুড়ে যাওয়া কক্ষের ভাড়াটিয়ারা জানান, আগুনের ভয়াবহতার কারণে তারা প্রাণরক্ষায় কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাদের সকল আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারও পুড়ে গেছে। বর্তমানে তারা এক কাপড়ে রয়েছেন। কিছুই তারা রক্ষা করতে পারেননি। ছারছিনা এন্টারপ্রাইজের খলিলুর রহমান বলেন, কিভাবে আগুনের সূত্রপাত কিছুই বলতে পারেন না। তবে তার রক্ষিত বসুন্ধরা, যমুনা ও এলপিজিসহ কয়েকটি কোম্পানীর সিলিন্ডার গ্যাস ছিল। এরমধ্যে কয়েক শ’ সিলিন্ডার বিস্ফোরণসহ ভস্মীভূত হয়েছে।
স্থাপনার মালিক হৃদয়, রেহানা, ইদ্রিস, রেখা ও মোস্তফা। তাদের স্বজনরা জানান, ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডে তাদের ভাড়াটিয়াদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ভৌত অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘটনায় তারা স্তম্ভিত ও বিস্মিত।
জানতে চাইলে, ডিইপিজেড দমকল বাহিনীর সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুল হামিদ বলেন, খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। ঘন্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট অংশ নেয়। কিভাবে আগুন লেগেছে এবং কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এ মূহুর্তে বলা মুশকিল বলেও তিনি জানান।
মহাসড়কের পাশে হওয়ায় লাখো জনতার ভিড়ে নবীনগর-কালিয়াকৈর সড়কে তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ওই সড়কে প্রায় ঘন্টাব্যাপী যান চলাচলও বন্ধ থাকে।