স্টাফ রিপোর্টার:
বাল্যবিয়ে রোধে নানামুখী প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি কঠোর অবস্থানে সরকার প্রধান। বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে কাজও করে যাচ্ছে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসন। অপরদিকে করোনা সংক্রামণ এড়াতে জন-সমাগম এড়িয়ে চলার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে প্রশাসন।
এরই মধ্যে মহা-ধুমধাম করে শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে সকল বিষয় তদারকি করে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করলেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোনায়েম খান। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ এবং উপযুক্ত বয়সের আগেই কন্যা সম্পাদন করতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। এ বিষয়ে কন্যার পরিবার থেকে নেওয়া হয় মুচলেকা।
এসব বিষয়ের তোয়াক্কা না করে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করে কনেকে বরের হাতে তুলে শশুড় বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এলাকা জুড়ে চলছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। এসব বিষয়ে জানতে উইপি সদস্যকে তলব করেছে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার রাতে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের গোলড়া পূর্বপাড়া এলাকায় বাল্যবিয়ের এই ঘটনা ঘটে। একই ইউনিয়নের কাজীপাড়া কৈট্টা এলাকার মৃত কানাই মিয়ার ছেলে রিপনের সাথে গোলড়া পূর্বপাড়া এলাকার অখিল মিয়ার মেয়ের সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়। শনিবার দুপুরে রিপনের বাড়িতে ধুমধামে চলছে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কনের ফুফাতে ভাই মজনু মিয়া বলেন, কনের বয়স এখনো ১৮ হয়নি। তবে ভালো ছেলে পাওয়ায় আগেই বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে পন্ড করে দেওয়ার জন্য উপজেলা থেকে লোকজন আসলেও তারা চলে যাওয়ার পর কনেকে বরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এসব সকল বিষয়ে মোনায়েম মেম্বার তদারকি করেন বলেও জানান তিনি।
ধানকোড়া ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোনায়েম খান বলেন, সামাজিকতা রক্ষার জন্য স্থানীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেম্বারদের যাওয়া লাগে। এছাড়া মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হলেও মেয়েটি বিয়ের উপযুক্ত। তবে ইউএনও অফিস থেকে লোকজন আসার পর মেয়েকে ছেলের বাড়িতে না পাঠানোর জন্য তিনি মেয়ের অভিভাবকদের বলেছেন বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক এলাকাবাসী বলেন, বাল্যবিয়ে হলেই জেল দেয় জেলা প্রশাসন। বাল্যবিয়ের দায়ে বর-কনে ছাড়াও বর-কনের অভিভাবকদের জেল-জরিমানা হয়। তবে ইউএনও অফিস থেকে লোকজন আসার পরও বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করলেন খোঁদ মেম্বার সাহেব নিজেই। ইউপি মেম্বার হয়ে তিনি বেশ ক্ষমতার পরিচয় দিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে লোকজন পাঠানো হয়েছিল। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে কনেকে বরের বাড়ি পাঠাবে না বলে মুচলেকা দিয়েছে কনের অভিভাবক। এছাড়া এই বিষয়ের সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।