গর্ভধারণ সহজ কিংবা কঠিন- দুটো বিষয়ই খাবারের পুষ্টির সঙ্গে সংযুক্ত। জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলা নারীদের গর্ভধারণের জন্য উপকারী হতে পারে। কিছু কিছু অসুখ গর্ভধারণের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করতে পারে। তবে খাদ্যাভ্যাস, ওজন, ধূমপান এবং অ্যালকোহল গ্রহণের মতো বিষয়গুলোও একে প্রভাবিত করতে পারে। খাবার কীভাবে গর্ভধারণকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
আপনি ওজন কমাতে, হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা দূরে রাখতে চান- প্রথম নজর দিতে হবে খাবারের দিকেই। হ্যাঁ, আপনি ঠিক শুনেছেন! যেসব দম্পতি মা-বাবা হতে চান তারা কী খাবেন সেদিকে নজর দেয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি জানেন নারীর খাবার ডিম্বাশয়ের উর্বরতাকে প্রভাবিত করে। সঠিক খাবার না খেলে তা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে। গর্ভধারণে সহায়ক খাবার কোনগুলো এবং কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত তা জেনে নিন-
ট্রান্স ফ্যাট, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার পানীয় বাদ দেয়া উচিত। এগুলো ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে পারে এবং ডিম্বস্ফোটনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত বা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত ফলের রস এড়িয়ে চলুন।
জাঙ্ক, প্রসেসড, তৈলাক্ত এবং মশলাদার খাবারের বদলে শাকসবজি, ডিম এবং দানা শস্য খাওয়ার অভ্যাস করুন । ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো খাবার খান যেমন ফ্লাক্সিড, ফিশ অয়েল, স্যামন ফিশ, সারডাইনস, শিম, মসুর, আভোকাডো, সয়া, জলপাই তেল এমনকি আখরোটও যা আপনার ডিম্বস্ফোটন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। ওমেগা -৩ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আপনার ডিমগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এবং গুণমান বাড়িয়ে তুলতে পারে। ভিটামিন বি এবং ফলিক অ্যাসিডের মতো অন্যরাও উর্বরতার মূল চাবিকাঠি এবং স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার সহায়ক হতে পারে।
সামুদ্রিক খাবার যারা ভালোবাসেন তাদের জেনে রাখা জরুরি, সর্বোচ্চ পারদ সামগ্রীযুক্ত কয়েকটি মাছ হলো ম্যাকেরেল, সর্ডারফিশ এবং টুনা যা খাওয়া এড়ানো উচিত। পরিবর্তে, জিঙ্কে ভরা শেলফিস এবং ওমেগা -৩ সমৃদ্ধ স্যামন ফিশ খাবেন।
সর্বোত্তম ওজন বজায় রাখুন কারণ জাঙ্ক ফুড স্থূলত্বকে ডেকে আনতে পারে। স্থুলত্বের সমস্যা গর্ভধারণের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত প্যাকেটজাত খাবার কিংবা ফাস্টফুড ডিম্বস্ফোটনের ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে, প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোও গর্ভধারণের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ফলিক অ্যাসিডও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। এটি ভ্রূণের অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। ফলিক অ্যাসিড কেবল নারীর জন্য নয়, পুরুষের পক্ষেও উপকারী। কারণ এটি শুক্রাণুর সংখ্যা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।
আয়রন গ্রহণের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য শাক, টোফু, মটরশুটি, কুমড়ো, টমেটো এবং বিটরুটের মতো খাবার বেছে নিন। আয়রন সামগ্রীতে সমৃদ্ধ যেকোনো খাবার ডিম্বাশয়ের বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
সন্তান জন্মদানের জন্য সঠিক খাবার খাওয়া নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরিহার্য। গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময় শুক্রাণুর গুণগত মানও বিবেচনা করা উচিত। কিছু পুষ্টির ঘাটতি এবং কয়েকটি রাসায়নিক রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। সুতরাং, সুষম ডায়েট মেনে চললে তা শুক্রাণুর মান বাড়াতে পারে। ডায়েটে জিঙ্ক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন সি, এবং সেলেনিয়াম যোগ করা উচিত।