স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে প্রেম ঘটিত বিষয়ে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের জেরে কলেজ ছাত্র মো. তানভীর আহাম্মদ জিসান হত্যার অভিয়োগে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ। নিহত জিসান ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ এলাকার শাহিন আলমের ছেলে এবং মোহাম্মদপুর হাজী মুকবুল হোসেন ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। প্রাথমিক ভাবে হত্যা কান্ডের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে আটককৃতরা। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) আসামিদের ১০ দিন রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শিবালয় উপজেলার পাচুরিয়া এলাকার জুলহাসের ছেলে রাব্বি হোসেন ওরফে প্রান্তিক(১৮), ছোট শাকরাইল এলাকার ঝাড়ু মোল্লার ছেলে নাজমুল(১৮), সমেজ মোল্লার ছেলে শরিফ হোসেন(১৮), জামাল মোল্লার ছেলে আজিজুল (১৮), ঢাকাইজুড়া এলাকার শামীম হাসানের ছেলে হাসিবুন হাসান(১৮)।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৫ তারিখে জিসান ঢাকা থেকে নানার বাড়ি যাবার কথা বলে বাসা থেকে নিখোঁজ হন। জিসানের পরিবার অনেক খোঁজাখুজির পর মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করেন। এদিকে গত ১৮ তারিখে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের কাছে পদ্মায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জিসিানের পরিবার ওই যুবকের জামাকাপড় দেখে নিশ্চিত হন ওই অজ্ঞাত যুবক তাদের জিসান। পরে বিষয়টি ঢাকার মোহাম্মদপুরের পুলিশের মাধ্যমে শিবালয় থানায় বিষয়টি অবগত করে। এঘটনায় শিবালয় থানা পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের আটক করতে সক্ষম হন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) তানিয়া সুলতানা জানান, আসামিদের ভাষ্য মতে প্রধান আসামি রাব্বির সাথে এক মেয়ের সাথে প্রেমের সর্ম্পক ছিল। ওই মেয়ের সাথে দেখা করতে ঢাকায় গেলে জিসানের কয়েক বন্ধু ঢাকা থেকে রাব্বির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং অপমান করে। এর পর থেকে রাব্বি প্রতিশোধ নেবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। জিসানের পূর্ব পরিচিত থাকার সুবাধে রাব্বি সুযোগ খুঁজতে ছিল। জিসানের প্রেমিকার নানীর বাড়ি শিবালয়ের ছোট শাকরাইল এলাকায় থাকায় তাকে দেখা করতে খবর দেয় রাব্বি। চলতি মাসের ১৫ তারিখে রাতে সিজান গাড়ি যোগে পাটুরিয়া ঘাটে এসে নামে। এসময় রাব্বিসহ পাঁচ বন্ধু মিলে তাকে পাটুরিয়া ট্রাক টার্মিনালের কাছে নদীর চরে নিয়ে রশি দিয়ে হাত বেঁধে চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে জিসানকে। ৩২ টি চাকুর আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির বলেন, আমরা জিসানের বিষয়টি ওই থানা থেকে অবগত হবার পরই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল টেক্স করতে ছিলাম। তখন জিসানের কল লিস্টে প্রান্তি নামের একজনের ঠিকানা পাই। কিন্তু কোন ভাবে আসামির বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। পরে অনেক তদন্ত করে জানতে পারি প্রান্তিক নামের ছেলেটির আরেক নাম রাব্বি। পরে তাকে আমরা অভিযান করে আটক করলে বিষটি সামনে আসতে থাকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আশীষ কুমার সান্যাল জানান, এ ঘটনায় জিসাসের বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিদের কোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টার মধ্যে শিবালয় সার্কেল ও শিবালয় থানার যৌথ প্রচেষ্টায় মামলার রহস্য উদঘাটনসহ আসামিদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি আদায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক উদাহরণ।