স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার অন্যতম এই হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রি করে থাকে। ৩২ টি আড়তের মধ্যে বর্তমানে ২৬টি চালু রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার বস্তা পণ্য ক্রয় বিক্রয় হয় এখানে। হাট পরিচালনার জন্য সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ডাকের মাধ্যমে ইজাররদার নিয়োগ করা হয়। প্রতিবছরের বৈশাখ থেকে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইজারাদার স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত হারে ইজারার টাকা উত্তোলন করে থাকেন।
আড়তের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মোল্লা জানান, আমাদের জানামতে প্রতি মন পণ্যের খাজনা সোয়া দুই টাকা। সেই হিসেবে ৭২ কেজি বস্তার খাজনা হওয়ার কথা ৪ টাকা। কিন্তু এবার হাটের নতুন ইজারাদার নিচ্ছেন ৮ টাকা। একদিকে ইজারা বেশী নিচ্ছেন। অন্যদিকে ইজারার রশিদও দিচ্ছেন না। ইজারাদারকে বারবার বলেও কোন লাভ হচ্ছে না। সরকার দলীয় নেতা হওয়ায় তিনি কাউকে পাত্তা দিচ্ছেন না।
বরঙ্গাইল হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক বলেন, আমাদের অঞ্চলে প্রচুর কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। কৃষকদের উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ সহজে বাজারজাত করার লক্ষ্যে আমরা কয়েকজন বন্ধু এবং এলাকার বড় ভাইদের সাথে নিয়ে এই হাট তৈরী করেছি। আশে পাশের অন্তত ১০ গ্রামের চাষী তাদের উৎপাদিত পণ্য এই হাটে বিক্রি করেন। দিনে অন্তত দুই হাজার বস্তা পন্য কেনা-বেচা হয়। ইজারাদার রশিদ ছাড়াই ইজারার টাকা উত্তোলন করছেন এবং নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি টাকা নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টায় আছি।
হাট ইজারাদার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুব হোসেন নুরে আলম বলেন, আমি ব্যক্তি নামে ডাক নিয়েছি। সবমিলে ডাকের মূল্য ২১ লাখ টাকা। পহেলা বৈশাখ থেকে ইজারা উত্তোলন করছি। করোনার কারণে এখনও রশিদ তৈরী করতে পারিনি। অতিঅল্প সময়ের রশিদ তৈরী হয়ে যাবে।
অতিরিক্ত খাজনা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, খাজনা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন থেকে কোন রেট চার্ট পাইনি। বিগত সময়ে ইজারাদার যেভাবে নিয়েছে, এখনও সেইভাবেই নেওয়া হচ্ছে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম রুহুল আমিন রিমন বলেন, এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাটের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুধুমাত্র কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ বিক্রি থেকেই ইজারাদার দিনে ২০ হাজার টাকা আদায় হয়। এভাবে, বছরে তার আয় হচ্ছে প্রায় ৭২লাখ টাকা। হাটের অন্যান্য পণ্য বিক্রি থেকে আয় প্রায় দুই কোটিরও ওপরে। ইজারাদার যদি নির্ধারিত দর অনুযায়ী ইজারা উত্তোলন করে তাহলেও তা বছরে পৌনে দুই কোটি টাকা আয় হবে। অতিরিক্ত ইজারা আদায় বন্ধে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবী করেছেন পণ্য বিক্রেতা ও আড়তের মালিকরা।