স্টাফ রিপোর্টারঃ
ধামশ্বরে ধানের শীষের এজেন্ট এখন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী:
সংবাদ নিয়ে জানা যায় বিগত ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলাধীন ধামশ্বর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন এ্যাড: মো: ইদ্রিস আলী এবং ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন এ্যাড: মো: আলেক মিয়া। তৎকালীন সেই ইউপি নির্বাচনে ৩নং ওয়ার্ডে বড়হাতকোড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে এজেন্ট ছিলেন মো: তারেক হাসান ও তার স্ত্রী লিপি আক্তার। তখন দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে এজেন্ট থাকা তারেক হাসান ভোল পাল্টিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করেই রাতারাতি বাগিয়ে নেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির পদ। বিএনপি হতে আওয়ামীলীগে এসে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য আলোচনায় এসেছেন বারবার। বর্তমানে আসন্ন ধামশ্বর ইউপি নির্বাচনে তিনিই আবার চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী বলে জানা যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে তৎকালীন নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী এ্যাড: ইদ্রিস আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “বিষয়টি হাস্যকর হলেও এটা সত্যি যে গত নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে গিয়ে ধানের শীষের এজেন্ট থাকা ব্যক্তি বড়হাতকোড়া গ্রামের মো: তারেক হাসান এবার নিজেই নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রার্থী হওয়ার অধিকার সকলেরই আছে তবে আওয়ামীলীগের মতো গুরুত্বপূর্ণ দলকে কেউ যেন এত সস্তা না ভাবে যে, ধানের শীষের এজেন্ট থাকা কোন লোক রাতারাতি নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেই দল তাকে মনোনয়ন দিবে। এটা লোক হাসানো ছাড়া আর কিছুই নয়” এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত তারেক হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তেমন কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। বিগত নির্বাচনে তারেক হাসান যার পক্ষে ধানের শীষের এজেন্ট ছিলেন সেই বিএনপির মনোনিত প্রার্থী এ্যাড: আলেক মিয়ার সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এ ব্যাপারে ধামশ্বর ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড: ফয়জুল ইসলাম নাজমুল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান “বিগত ইউপি নির্বাচনে তারেক হাসান ও তার স্ত্রী যে বড়হাতকোড়া কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট ছিলেন এটা ধামশ্বর ইউনিয়নবাসী সবাই জানেন, এমনকি উপজেলা ও জেলা পর্যাযের নীতিনির্ধারণী সকল নেতৃবৃন্দও বিষয়টা অবগত রয়েছেন তাই এ নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নাই। তিনি দু:খ প্রকাশ করে আরও জানান, কতিপয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দের চাপে সেসময় ধানের শীষের এজেন্ট থাকা তারেক হাসান কে পরবর্তীতে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি করা আমাদের একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো”
এই প্রতিবেদক সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে প্রকাশ্যে ও গোপনে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং কৃষকলীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ তারেক হাসানের ধানের শীষের এজেন্ট থাকার বিষয়টি এক বাক্যে স্বীকার করে তারা বলেন রাতারাতি এরুপ হাইব্রীড নেতা দলের জন্য বিপদজনক। তাছাড়া তারেক হাসানের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন। খবর নিয়ে জানা যায়, উক্ত তারেক হাসান ৮ম শ্রেণী পাশ না করার সত্ত্বেও বড়হাতকোড়া সরকারি প্রাইমারী স্কুলে দপ্তরি কাম নৈশ্য প্রহরীর চাকুরী লাভের আশায় কলিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৮ম শ্রেণি পাশের ভুয়া সার্টিফিকেট উত্তোলন করে জমা দিলে চাকুরীপ্রত্যাশী অপর প্রার্থীর চ্যালেঞ্জে তার নৈশ্য প্রহরীর চাকুরীর আবেদন টি বাতিল হয়ে যায়। তারেক হাসান ৮ম শ্রেণী পাশ না থাকায় নৈশ্য প্রহরীর চাকুরী না পাওয়া, অতপর ধানের শীষের এজেন্ট হতে দল পাল্টিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হয়ে বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ার ব্যাপার টি ভালো চোখে দেখছে না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। বিষয়টি নিয়ে ধামশ্বর ইউনিয়নের সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে।