1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
মানিকগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত সাবেক সদস্য জাপান গমনেচ্ছুকদের নিয়ে অবহেলার অভিযোগ সাটুরিয়ায় বিএনপি’র সদস্য নবায়ন ফরম বিতরণ সাটুরিয়ায় আ. লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছাড়াতে থানা ঘেরাও সিংগাইরে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ সভা অনুষ্ঠিত মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার ও উচুটিয়া মাদরাসার আয়োজনে মশক নিধন কার্যক্রম আজ পবিত্র আশুরা, মানিকগঞ্জে গড়পাড়া ইমামবাড়ী থেকে ১০১তম শোক মিছিল বিকেলে আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মা আর নেই মানিকগঞ্জে শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ঘিওর বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ালেন বিএনপি নেতা এস এ জিন্নাহ কবীর

অভিযোগের শেষ নেই মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সহকারী নার্স মোতালেব মিয়া বিরুদ্ধে

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২
  • ১১৮৫ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী নার্স মো. মোতালেব মিয়া এবং তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা দিহান আহম্মেদ তন্ময়ের দাপুটে অসহায় হয়ে পড়েছেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা। একজন সহকারী নার্স হয়ে নিজের প্রভাব বিস্তারে নিজের বখাটে ছেলেকে দিয়ে সহকর্মী ও কর্মচারীদের গায়ে মারপিট, চিকিৎসকদের সাথে অশোভন আচরন বাপ-ছেলের নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি পালন না করে নিজের ইচ্ছেমত নামমাত্র ডিউটি করে হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে নিয়ে প্রাইভোট ক্লিনিকে ভর্তি করে অবৈধ টাকা-পয়সা অর্জন করছেন। আর ক্ষমতার দাপুটে তারই আপনজন সহ বহিরাগত রোগীদের হাসপাতালের ফার্মেসী থেকে জোরপুর্বক নামীদামি ঔষুধ সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত ভাবে। মোতালেব মিয়া মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাসিন্দা হলেও মানিকগঞ্জের একজন প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার নিকট আত্মীয় পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন অনিয়ম-সেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সহকর্মীরা। হাসপাতালের ভেতর মোতালেব মিয়ার অসৌজন্যমূলক আচরনে অতিষ্ঠ হয়ে গত নয় মাসে তিন দফায় নাসিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (শিক্ষা ও শৃংখলা) উপসচিব বরাবর তাকে বদলীর দাবীতে গণ-স্বাক্ষর সংযুক্ত অভিযোগ দিয়েছেন হাসপাতালে কর্মরত শতাধিক নার্স ও কর্মচারীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে সহকারী নার্স হিসেবে যোগদান করার পর যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে তাদের লেজুরবৃত্তি করে অনিয়ম-সেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে অসহায় রোগী বাগিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে অবৈধ টাকা কামিয়ে যাচ্ছেন। পরিমিত আয়ের মোতালেব মিয়ার অবৈধ রোজগারের টাকায় মেয়েকে বেসরকারী একটি মেডিকেল কলেজে মোটা অংকের টাকা খরচ করে ডাক্তারী লাইনে পড়াচ্ছেন। আর ছেলেকে কিনে দিয়েছেন তিন লাখ টাকা দামের একটি জিক্সার মোটর সাইকেল সহ ২০ লাখ টাকা দামের অ্যালিয়ন প্রাইভেটকার। এছাড়া নিজেদের থাকার জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী বাসভবনে দামী এসি বসিয়েছেন মোতালেব মিয়া। সংশ্লিষ্টদের মনে প্রশ্ন উঠেছে সামান্ন আয়ের মোতালেব মিয়ার এত টাকা খরচ করার উৎস কোথায় ?

মোতালেব মিয়ার অনিয়ম এবং সেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে হাসপাতালের কোন চিকিৎসক,নাস ও কর্মচারীরা প্রতিবাদ করলে তার ছেলের বাহিনী দিয়ে মারধর করানো হয়। এ নিয়ে মোতালেব মিয়া এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে সহকর্মীকে মারপিটের ঘটনায় মামলা রয়েছে। এছারা অসদাচারনের আওতাভুক্ত অপরাধের কারনে মোতালেব মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে বিভাগীয় মামলা থেকে অঙ্গাত কারনে তাকে খালাস দেয়া হয়।

হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, মোতালেব মিয়ার এমন সেচ্ছাচারীতার কথা উল্লেখ করে চলতি বছরের জুলাই মাসে নাসিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (শিক্ষা ও শৃংখলা) উপসচিব মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর স্বাক্ষরিত কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে অভিযুক্ত মোতালেব মিয়ার বিষয়ে বলা হয়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতালের ভেতর তার ছেলের হাতে ডিউটি পালনকালে সিনিয়র এক নার্সকে মারধর ঘটনায় মোতালেব মিয়াকে অন্যত্র বদলী করা হয়।

কিন্তু সে প্রভাব বিস্তার করে সেই বদলী ঠেকিয়ে দিয়ে এই হাসপাতালেই অবস্থান করে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের সাথে অসদাচরন করে যাচ্ছেন। রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি করার কথা থাকলে মোতালেব মিয়া তা না করে ক্ষমতার দাপটে এক তরফা ভাবে বিকেলে ডিউটি করে যাচ্ছেন। এছাড়া কারনে অকারনে সকাল সাতটা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালের ভেতর ঘুরাঘুরি করেন। মোতালেব নিয়মিত হাসপাতালের ফার্মেসী থেকে জোরপুর্বক নামী-দামী ঔষুদ উত্তোলন করেন, হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও ওয়ার্ড থেকে গ্রামের অসহায় রোগীদের ফুসলিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে পরীক্ষা ও অপারেশন করাতে নিয়ে যান। মোতালেব মিয়ার সেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে হাসপাতালের কোন নার্স,চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা প্রতিবাদ করলে বখাটে ছেলের বাহিনী দিয়ে মারধর করানো সহ অন্যত্র বদলীর হুমকী দিয়ে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাদিক নার্স বলেন, হাসপাতালের ভেতর এমন কোন অনিয়ম দুর্নীতি নেই যা মোতালেব করেন না। বাবা-ছেলের অত্যাচারে হাসপাতালে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। বছর খানেক আগে হাসপাতালের এক সিনিয়র নার্স মোতালেবের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে দুজনকে অন্যত্র বদলী করা হয়। পরে ক্ষমতার দাপুটে মোতালেব মিয়া নিজ কর্মস্থলে থাকলেও প্রতিবাদকারী আর আসতে পারেনি। এ কারনে অনেক নার্স তার অন্যায়-অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করলেও কিছু বলতে শাহস পাননা। বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে নাসিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর গোপনে লিখিত অভিযোগ দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাদিক চিকিৎসক বলেন, একজন নার্স হয়ে তার আয় রোজগারের যে খবর পাই তা সন্দেহজনক। বৈধ চাকরিতে এই আয়রোজগার হতে পারে না। তারা বলেন, আওয়ামীলীগের এক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে সকল চিকিৎসকদের সাথে তিনি অসাদচারন করেন। রোগী বাগিয়ে নিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করেন। আমরা ইজ্জতের ভয়ে তাকে কিছু বলতে পারি না। তার বিরুদ্ধে দপ্তর থেকে গোপন তদন্ত হলে সবগুলো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

নাসিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (শিক্ষা ও শৃংখলা) উপসচিব মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর স্বাক্ষরিত কারন দর্শানোর নোটিশের সত্যতা স্বীকার করে মোতালেব মিয়া বলেন, তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কে বা কাহারা যে অভিযোগটি দিয়েছিল সেটির জবাব তিনি লিখিত ভাবে কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন। ওই কর্তৃপক্ষ তার কারন দর্শানো নোটিশটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে তিনি দাবী করেছেন। তবে কারন দর্শানোর নৌটিশ প্রত্যাহারের কোন প্রমান আপনার কাছে আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। এছাড়া গাড়ী কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ব্যাংক থেকে ঋন করে গাড়ী কিনেছেন।

বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন মানিকগঞ্জ জেলার সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মোতালেব মিয়ার বিরুদ্ধে মোখিক অনেক অভিযোগ আছে। তার বিরুদ্ধে নাসিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে কারন দর্শানোর যেসব অভিযোগ এসেছে সেগুলো হাসপাতাল প্রশাসনের দেখার কথা। আমরা তার বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, মোতালেব মিয়ার বিরুদ্ধে তিনমাস আগে নাসিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে কারন দর্শানো এসেছে তা শুনেছি। আমাকে অবগত করা হয়েছিল। কিন্তু তার জবাবের প্রেক্ষিতে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা আমাকে জানানো হয়নি। আর মোতালেব মিয়া অসদাচারনের বিরুদ্ধে হাসপাতালের কোন চিকিৎসক,নার্স এবং কর্মচারীরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury