স্টাফ রিপোর্টার:

মানিকগঞ্জে পয়লা বৈশাখের মোটিফ বানানো বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

গতকাল মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর এলাকায় দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে মানবেন্দ্রের পরিবার। আগুনে তাঁর মূল্যমান জিনিসপত্র সহ ঘরের সব পুড়ে গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, পয়লা বৈশাখে ঢাকায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর অভিযোগ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে মানবেন্দ্র ঘোষের দাবি, তিনি শুধু বাঘের মোটিফ তৈরি করেছেন, শেখ হাসিনার মুখাকৃতি নয়।

এ বিষয়ে মানবেন্দ্র বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের দুই দিন আগে থেকেই আমাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার রটানো হয়। সেখানে বলা হচ্ছিল পতিত সরকার শেখ হাসিনার মুখাকৃতি আমি বানাচ্ছি। এটা আমি বানিয়ে অন্যায় করেছি এবং আমার নাম ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্ন আইডি থেকে এমনটা প্রচার করা হয়েছে। সেখানে নেটিজেনরা বিরূপ মন্তব্য করেছে। আসলে এই ঘটনা সত্য নয়। আমি শেখ হাসিনার মুখাকৃতি তৈরি করিনি বরঞ্চ আমি একটি বাঘের অবয়ব তৈরি করেছি। আমার সাথে চক্রান্ত করে এমনটা করা হয়েছে। আমিসহ আমার পরিবার জীবনের নিরাপত্তায় ভুগছি। এই মুহূর্তে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি এবং সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাড়ি একই এলাকায়। ধারণা করা হচ্ছে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার মুখাকৃতি তৈরির ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন তার পরিবার এবং স্বজনেরা।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন  মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা, মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু ও জেলা ছাত্রদলের ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ সহ যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। 

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু বলেন, এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসলে তাৎক্ষনিক নির্দেশ কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতিআব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের তত্বাবধানে এখানে আসা এবং আসলে ক্ষয়ক্ষতির কি অবস্থা  ও পরিবেশটা কি এটা দেখা এবং এই পরিবারের পাশে দাড়ানো আমাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা। আমরা আগেও হিন্দুদের ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো।

এই এলাকাতেই  শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাড়ি। তার মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে এলাকার পরিবেশ অশান্ত করতে চায়।এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনেও তাদের হাত থাকতে পারে বলে আমরা সন্দেহ করছি। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করি এবং প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহবান জানাই।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘ঘটনা অনুসন্ধানে পুলিশ এবং সিআইডির চৌকস টিম কাজ করছে। আমরা আশাবাদী দ্রুত ঘটনা অনুসন্ধান করে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ সম্পর্কে জানতে পারব। কারণ জানার পর আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।##