স্টাফ রিপোর্টার: মানিকগঞ্জে জাপান টোব্যাকো ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় কিছু ঠিকাদাররা। তাদের অভিযোগ, পূর্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এরই জেরে স্থানীয় কিছু ঠিকাদাররা আজ শনিবার সকালে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার জাগির মেঘশিমুল এলাকায় ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত কোম্পানিটিতে কোন শ্রমিককে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা ভেতরে ঢুকতে না পেরে গেটের বাইরে দাড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেনে এবং কোম্পানির কাজও বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমানে কাজটি চট্টগ্রামভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম কে ট্রেডার্সকে দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় ঠিকাদারদের দাবি, তাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল কাজটি তাদের দিয়েই করানো হবে। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে একজন আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, কোম্পানিতে বিগত দিনে আওয়ামী লীগের জাকির চেয়ারম্যান ছিল এখন বর্তমানে চিটাগাংয়ের এম কে ট্রেডার্স ওনারা কাজ করতেছেন। ঘুরেফিরে সেই আওয়ামী লীগের লোকজনই। কোম্পানি আমাদের বার বার আশ্বস্ত করছে যে আমরা আপনাদের কাজ দিব এই বলে আমাদের অনেক কাগজপত্রও করাইছে। কাগজপত্র করছি আমরা সেগুলো জমাও দিছি। আমাদের কাজ দিব বলে দিতাছে না। আমাদের সাথে প্রতারনা করতাছে শুধু। আমাদের দাবি বেন্ডার চেন্জ করে এই কাজগুলো যেন আমাদের কাউকে দেয়।

কোম্পানিতে কাজ করতে আসা এক শ্রমিক চরহিজুলীর হালিমা জানান, আমি এখানে আড়াই বছর ধরে চাকরি করি। মোট তিনদিন এইরকম সমস্যা  হইছে। আমরা গরিব মানুষ আমাদের যদি এইরকম করে কাজ বন্ধ কইরা রাখে তাইলে আমরা চলুম কিভাবে। আমরা এইটার যে কোন একটা সমাধান চাই। আমরা সবাই গরিব মানুষ আমরা কর্ম কইরা খাই।

এ সময় ওয়্যার হাউজের সামনে জেলা টিসিবির সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা আবুল কালাম, সদর উপজেলা বিএনপি’র স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ জহির, জাগীর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবু, সদর থানা কৃষকদলের সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম সাজলু, জেলা বিএনপির সদস্য ফরিদুজ্জামান ফরিদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহফুজুর রহমান রবিনসহ ২০ থেকে ২৫ জন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এদের প্রত্যেককেই মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতার অনুসারী। 

এবিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতা বলেন, যারা জাপান টোব্যাকোতে শ্রমিকদের ঢুকতে বাধা দিয়েছে তাদের আমি পাঠাইনাই। তারা জাগীর ইউনিয়ন বিএনপির লোক আমার সাথেই মিছিল মিটিং করে। উই কোম্পানিতে আওয়ামী লীগের দোসরা ব্যবসা করছে। স্থানীয়দের কথা দিলেও কোম্পানি কথা রাখেনি। আমি শুনেছি এজন্য তারা বাধা দিয়েছে।

এবিষয়ে জাপান টোব্যাকোর সিকিউরিটি ইনচার্জ সাইদুজ্জামান বলেন, লেবারদের ওয়্যারহাউজে ঢুকতে না দেওয়ায় স্থানীয় যারা ছিলেন তাদের সাথে কথা বলেছি তারা আউটসোর্সিংয়ের ঠিকাদারি, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা করতে আগ্রহী আমরা তাদের নিয়মমাফিক অফিসিয়াল প্রসিডিওর মেইনটেইন করে ভেন্ডার লাইসেন্স জমা দিতে বলেছি। তারা কাজ করলে আমাদের প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে কোন সমস্যা নেই। তবে প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের ঢুকতে না দেওয়ার মতো ঘটনা কাম্য নয়। পুলিশ এসে ঘটনা সমাধানের চেষ্টা করছে।

এ ঘটনার পর-পরই সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে। আমরা দ্রুত এ সংকট সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।’