আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবশেষে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের প্রতীক্ষার অবসান হলো। শনিবার দুপুরে উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জেস চ্যাপেল গির্জায় জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাঁধা পড়লেন ব্রিটিশ যুবরাজ প্রিন্স হ্যারি ও মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেল। সেন্ট জর্জেস চ্যাপেল গির্জায় ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ ও ৬শ’ আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তারা বিয়ের শপথ নেন এবং আংটি বদল করেন। ব্রিটিশ ডিজাইনার ক্লেয়ার ওয়েইট কেলারের তৈরি পোশাক পরে মেগান মার্কেল গির্জায় পৌঁছান। মেগানের বাবা টমাস মার্কেল অসুস্থ হওয়ায় বিয়েতে অনুপস্থিত ছিলেন। শ্বশুর প্রিন্স চার্লস মেগানের হাত ধরে তাকে বিয়ের মঞ্চ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যান। বিয়ের পর এই দম্পতি ডিউক এবং ডাচেস অব সাসেক্স নামে পরিচিত হবেন। এই বিয়ে উপলক্ষে লক্ষাধিক মানুষ উইন্ডসরে হাজির হন। সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ টেলিভিশনে এই বিয়ের অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমরিকান টক-শো হোস্ট ওপরাহ্ উইনফ্রে, অভিনেতা জর্জ ক্লুনি ও তার স্ত্রী আমাল, সাবেক ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যাম ও তার স্ত্রী ভিক্টোরিয়া, টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস এবং গায়ক এল্টন জন। রানি এলিজাবেথ এবং তার স্বামী এডিনবরার ডিউক বাদে রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে প্রিন্স হ্যারির ভাই ডিউক অফ কেমব্রিজ উইলিয়াম, মামা আর্ল স্পেন্সার, ডাচেস অফ ইয়র্ক সারাহ্ ফার্গুসন বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান না হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে সহ কোনো রাজনীতিককে এই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে এক টুইট বার্তায় টেরেসা মে নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রথমবারের মতো উইন্ডসর প্রাসাদে সাধারণ জনগণের মধ্য থেকে ১২০০ ব্যক্তি আমন্ত্রণ পেয়েছেন। বিয়ের পর সাদা ঘোড়ায় চড়ে উইন্ডসর ঘোরেন এই নব দম্পতি। নবদম্পতিকে শুভকামনা জানাতে সকাল হওয়ার আগেই ভিড় জমা শুরু হয় উইন্ডসরের রাস্তাগুলোতে। অনেকে আবার বিয়ের দৃশ্য নিজ চোখে দেখতে উইন্ডসর ক্যাসেলের কাছাকাছি সবচেয়ে সেরা পজিশনটা দখল করে বসেছিলেন একদিন আগে থেকেই। শুধু উন্ডসর না, গোটা যুক্তরাজ্যে চলছে উৎসবের আমেজ। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে চুটিয়ে প্রেম করছেন৩৩ বছর বয়সী হ্যারি ও ৩৬ বছর বয়সী মেগান। প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ছেলে হ্যারির পুরো নাম হেনরি চার্লস আলবার্ট ডেভিড। রয়্যাল মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনা করা হ্যারি ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন। ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের পঞ্চম উত্তরসূরী তিনি।
লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেওয়া মেগানের মা সমাজকর্মী ও যোগব্যায়াম পরামর্শক ডরিয়া র্যাগল্যান্ড ও বাবা আলোক নির্দেশক টমাস মার্কেল। মেগান পড়াশোনা করেছেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে। যুক্তরাজ্যের জনগণের কাছে অনেকটা অপরিচিত হলেও হলিউডে আছে মেগানের বেশ জনপ্রিয়তা।