স্টাফ রিপোর্টার: মানিকগঞ্জে শিষ্যের স্ত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক ভণ্ড পীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবু তাহের(৬৫) নামে ওই কথিত পীরকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় ভুক্তভোগীরা। শুধু শিষ্যের স্ত্রীকেই নয় আরও অনেক নারীকে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় ওই কথিত পীর। এছাড়া গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের নানা ধোঁকায় ফেলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আবু তাহেরের বাড়ি সদর উপজেলার ভাটবাউর গ্রামে। সাটুরিয়া উপজেলার চরতিল্লি গ্রামের এক শিষ্যের অভিযোগ, তার স্ত্রীকে আবু তাহের প্রথমে কুপ্রস্তাব দেয়। এরপর ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চান ওই শিষ্য। বুধবার ছিল শালিসের নির্ধারিত দিন। দুপুরে দিঘী ইউনিয়ন পরিষদে শালিসে উপস্থিত হন ভণ্ডপীরের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৩০টি পরিবার। শালিস শুরু হলেও শিষ্যের স্ত্রী সাক্ষ্য দেয়ার আগ মুহূর্তে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড খিচুনীসহ তার মুখে রক্ত আসে। এরপরই হৈ-চৈ পড়ে যায়। তাদের ধারণা, পীরের বিরুদ্ধে যেন সাক্ষ্য না দিতে পারে এ জন্যই তিনি কেরামতি করে কিছু করেছেন। এর আগেও ওই গৃহবধূ কয়েক দফায় একইভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন। পীরের চিকিৎসাতেই পরে সুস্থ হন। অসুস্থ নারীর স্বামী জানান, আবু তাহের তার পীর। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার স্ত্রীকে জীন দিয়ে এমন কষ্ট দিচ্ছেন। পরে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা কথিত পীর আবু তাহেরকে ধরে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। শালিসে উপস্থিত একাধিক ভুক্তভোগী জানান, আবু তাহের গ্রামের অনেক মেয়েকে নানা ফাঁদে ফেলে যৌন হয়রানি করেছেন।তার প্রথম স্ত্রী মারা গেলে জোর করে এক শিষ্যর মেয়েকে বিয়ে করেন। এছাড়া বিদেশে ভালো চাকরি, পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়া, মামলায় জামিন করানো, জমির খারিজ করে দেয়াসহ নানাভাবে তিনি গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা সবাই ভণ্ডপীর আবু তাহেরের বিচার দাবি করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে স্লোগান দেন। দিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মতিন মোল্লা জানান, আবু তাহের একজন ভণ্ডপীর। তার বিরুদ্ধে নারীদের যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। যৌন হয়রানির অভিযোগের বিচার ইউনিয়ন পরিষদে করার এখতিয়ার না থাকায় তাকে পুলিশে দেয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান জানান, কথিত পীর আবু তাহেরের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছেন তার শিষ্য লুৎফর রহমান। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।