স্টাফ রিপোর্টার :
সারা বাংলাদেশে হতদরীদ্র গৃহহীনদের একটি ঘর ও একটি টয়লেট এবং ঘর সম্পর্ন করতে যাবতীয় সবকিছু দেওয়ার উদ্দ্যোগ হাতে নিয়েছেন সরকার। তারই ধারাবাহীকতায় মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে অতি দরীদ্র গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার কার্যক্রম ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,অনিয়ম আর দূর্নীতি মহা উৎসব যেন চলছে সাটুরিয়াতে। সাটুরিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজ ইউনিয়ন ঘুরে ঘুরে গৃহহীন ত্রিশ জনের নামের লিস্ট করে প্রাথমিক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট জমা দেন। কিন্তু তার চেয়ে বেশি নাম লিস্ট করে জমা দেন সদর ভূমি অফিসের নায়েব আজাহার আলী। তার কয়েক বছর পরে ২০১৮ জুলাইতে ঘর দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম পর্যায় নায়েবের লিস্টের বাইশ জন ঘর পেয়েছেন। যারা পেয়েছেন তাদের বাড়িতে খবর নিয়ে যানা যায় একই বাড়িতে ৫ জনকে ঘর দেওয়া হয়েছে। আবার যাদের বাড়ি ঘর উঠানোর যায়গা নাই তাদের কে ও ঘর দেওয়া হয়েছে। একই বাড়ি আপন দুই ভাই চাচাতো ভাই সহ পাচ জনকে এক সাথে দেওয়া হয়েছে।এদের ভিতর ভান্ডারি পাড়ার ইসরাফিল(৪৫)ও তার ভাই শফিকুল(৪২) বলেন,আমরা সবাই নায়েব সাহেবের কাছে নাম দিয়েছি। তার কাছে টাকা দিয়ে ঘর এনেছি। কিন্তু সরেজমিনে তাদের বাড়িতে ঘড় দেওয়ার কোন যায়গা নেই।
সাটুরিয়া সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পিন্টু বলেন,আমার লিস্টের বাহিরে আরও লিস্ট দেওয়া হয়েছে। শুনেছি সদর ভূমি অফিসের নায়েব আজাহার আলী বেশ কিছু লোকের নাম দিয়েছে। তার নাম দেওয়ার কোন নিয়ম আছে কিনা আমার জানা নাই। তিনি তো আর এলাকা ঘুরেন না, কোন বাড়ির কি অবস্থা জানেন না,তাহলে তিনি কি ভাবে লিস্ট দেন। টাকার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,নিতেই পারে টাকা না পেয়ে তো কাজ করেন নি এলাকার লোকই তো বলেছে। টাকা পেয়েই তো তিনি কাজ করেছেন। এক বাড়িতে ৫ টি ঘড় পাওয়ার কোন নিয়ম নেই। বাড়িতে ১-১০ শতাংশ যায়গা থাকলে সে একটা ঘড় পাবে।
নায়েব আজাহার আলী বলেন,আমাকে ইউএনও স্যার বলেছেন তাই ত্রিশ জনের নাম দিয়েছি। জমা দেওয়া লিস্টের মধ্যে কয়জন ঘড় তা আমি জানিনা। আর ঘড় নিতে কোন টাকা পয়সা লাগে না। সরকার যাদের যায়গা আছে কিন্তু ঘড় নাই শুধু তাদেরকেই ঘর দিচ্ছে। ৫১ পিছ টিন, সিমেন্টের খুটি, মিস্ত্রি খরচ ও একটা টয়লেট এখন দিচ্ছেন। আপনি টাকা নিয়েছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,আমাকে যে টাকা দেওয়ার কথা বলেছে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ ফারজানা সিদ্দিকী বলেন,যার জমি নাই তাকে ঘড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ প্রকল্পের নামই হচ্ছে জমি আছে ঘর নেই। আর এটার প্রত্যায়ন দিতে হয় এসিলেন্ট এর কাছে। তাদের জমির কাগজপত্র ভাঙা ঘরের ছবি দিয়ে দরখাস্ত জমা দিতে হবে।
১ থেকে ১০ শতাংশ যায়গা যাদের আছে তারা পাবেন। তিন ক্যাটাগরিতে (এ,বি,সি)তালিকা দেওয়ার নিয়ম। (এ)যাদের যায়গা আছে ঘর নাই,(বি)ঘর যায়গা কোনটাই নাই (সি) ঘর আছে যায়গার পরিমান একেবারেই কম। সাটুরিয়াতে প্রায় আড়াই তিন হাজার লিস্ট দেওয়া হয়েছে। বর্তমান ১৩১টি পরিবারকে প্রাথমিক পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে। আস্তে আস্তে লিস্টের সকলেই পাবে।