স্টাফ রিপোর্টার :
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জে কনেস্টবলের বিরুদ্ধে কলেজপড়–য়া দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশ লাইনে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। নির্যাতনের শিকার দুই শিক্ষার্থরা হলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জয়রা এলাকার প্রবাসী আবুল কালামের হাবিবুর রহমান অনিক ও মোঃ দুদু মিয়ার ছেলে রনি।এরা দুজনই মানিকগঞ্জ সরকারী দেবেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী। অভিযোগের বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে।
হাবিবুর রহমান অনিকের পিতা আবুল কালাম আজাদ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে । ওই অভিযোগে জানা গেছে রোববার বিকেলে মানিকগঞ্জ পৌর হকার্স মাকের্টের বিপ্লবের সেলুনের দোকানে কলেজ পড়–য়া অনিক ও রনি একে অপরের সাথে গল্প করছিলো। এসময় জুয়েল নামের পুলিশ সদস্য সেভ হতে সেলুনে আসেন। গল্প করার সময় পুলিশ তাদের পরিচয় জানতে চায় । শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয় দেওয়া সাথে সাথে কনষ্টেবল জুয়েলেও পরিচয় জানতে চান। সাদা পোশাকের ওই পুলিশ সদস্যের তার পরিচয় দেন। কিন্তু তার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পাশের দোকানে বসে থাকা ডিবি পুলিশকে জানানো হয় বিষয়টি। পরে ডিবি পুলিশের এ এস আই জুলফিকার জুয়েলের সাথে কথা বলে জানতে পারে তিনি পুলিশ লাইনে কর্মরত রয়েছেন। এঘটনায় জের ধরে সোমবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ কনস্টেবল জুয়েলের নেতৃত্বে সাদা পোশাকের ১৪/১৫জন লোক মানিকগঞ্জ সিদ্দিক খান সুপার মার্কেটের সামনে অনিক ও রনিকে মারধর করে। এক পর্যায়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে গাড়ীতে করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তারা অনিকের সাথে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগসহ কলেজের আইডি কার্ড ও রনির গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়। এর পর অভিভাবকরা পুলিশ লাইনে গেলে তাদের সামেনই দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করতে থাকে। পরে ওই রাতেই জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তাদের পাঠানো হয়। খবর পেয়ে অনিকের স্বজনরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে যায়। পরে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্বজনদের জিম্মায় ওই দুই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ডিবি অফিস থেকে বাড়িতে ফেরার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতেই তাদেরকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় বর্তমানে অনিক ও রনি জেলা হাসপাতালের ৬ তলায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অভিযুক্ত কনেস্টবল জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনের রিজার্ভ ইন্সপেক্টর ( আরআই) কাজী ফারুক হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সোমবার রাতে কনেষ্টবল জুয়েলসহ কয়েকজন দুইজন যুবককে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসেন। তবে তাদের কোন মারধর করা হয়নি। পরে ওই দুই যুবককে ডিবি কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।
ডিবি ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, দুই যুবকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় সোমবার রাতেই অভিভাবকের জিম্মায় তাদের দিয়ে দেওয়া হয়।
এব্যাপারের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কনেস্টবল জুয়েলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।