স্টাফ রিপোর্টার
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ঘুষের টাকাসহ এসকে সফিকুল ইসলাম নামে এক পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এসময় তার কাছ থেকে ঘুষের ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ওই ঠিকাদদার মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার গঙ্গাধর পট্টির মো: কাজিমুদ্দিনের ছেলে ও বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আরএসএস ইঞ্জিনিয়ারিং ও লামিয়া এন্টার প্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বুধবার সন্ধায় সিঙ্গাইর পৌরসভার আজিমপুর এলাকায় সরকারি খরচে (মাস্টার প্লান) বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের গ্রাহকদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণকালে তাকে হাতে নাতে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ঠিকাদার সফিকুল ইসলামকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সিঙ্গাইর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষে সরকারি খরচে (মাস্টার প্লান) সিঙ্গাইর পৌরসভাসহ পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। পৌর এলাকার আজিমপুর, মধ্য সিঙ্গাইর ও আঙ্গারিয়া মহল্লার দেড় কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের কাজ পান মেসার্স আরএসএস ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেসার্স লামিয়া এন্টার প্রাইজ। পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সমেজ উদ্দিন জানান, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসকে সফিকুল ইসলাম কাজ পাওয়ার পর শুধু আজিমপুর মহল্লায় ২২ খুটির জন্য ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে লাইন নির্মাণ করা হবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ লাইনের গ্রাহক জসিমুদ্দিন ও আলম মিয়া বলেন, ঠিকাদারকে গ্রাহকদের আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়ে বারবার কাজ করার জন্য বলা হলেও তিনি নানা টালবাহানা শুরু করে। পরে বাধ্য হয়ে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে চাঁদা তুলে ঠিকাদার সফিকুল ইসলামকে ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপরও তিনি কাজ শুরু না করে আরো টাকা দাবি করতে থাকে। বুধবার বিকালে সাইড পরিদর্শনে এসে বাকি টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এসময় ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু দাবিকৃত পুরো টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু না করার হুমকি দেন তিনি। তখন এলাকার মানুষ ক্ষুব্দ হয়ে ঠিকাদার সফিকুল ইসলামকে আটক করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। এঘটনায় নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ লাইনের গ্রাহক জসিমুদ্দিন বাদি হয়ে ঠিকাদার এসকে সফিকুল ইসলামকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সিঙ্গাইর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক মো: মাহবুবুর রহমান জানান, সরকারি খরচে নির্মিত বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ পেতে প্রত্যেক গ্রাহককে জামানত বাবদ ৪০০ ও সমিক্ষা ফি ৫০ টাকাসহ মোট ৪৫০ টাকা অফিসে জমা দিতে হয়। এর বাইরে গ্রাহকের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেওয়ার বিধান নেই। কিন্তু এক প্রকার অসাধু ঠিকাদার ও স্থানীয় দালালরা গ্রাহকদের জিম্মি করে হাজার হাজার টাকা আদায় করছে। ঘুষের টাকাসহ ঠিকাদার এসকে সফিকুল ইসলামকে আটকের ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এঘটনায় সব ভুক্তভোগীর পক্ষে গ্রাহক জসিমুদ্দিন বাদি হয়ে ঠিকাদার সফিকুল ইসলামকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।