স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় চার মাস যাবৎ মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে অজ্ঞাত নামা তিনজন রোগী ভর্তি রয়েছেন।এদের মধ্যে একজন বাকপ্রতিবন্ধী,বাকী দুইজন মানসিকপ্রতিবন্ধি।এদের মধ্যে একজন একটু কথা বলতে পারলেও বাকী দুজন কোন কথা বলতে পারেনা।এদের নাম ও ঠিকানাও বলতে পারেনা তারা।এনিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরেছে বিপদে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,প্রায় চার মাস আগে গুরুত্বর অবস্থায় (১৪) বয়সী বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে কে বা কারা হাসপাতালের সামনে রেখে যায়।এরপর গত অক্টোবর মাসের প্রথমে (৬৫) বছর বয়সী একবৃদ্ধ ও ২০ অক্টোবরে (১৪) বছর বয়সী একশিশু মানসিক রোগীকে কে বা কারা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে চলে যায়।এসময় তাদের শরীর.হাত-পা ও মাথার বিভিন্ন জায়গায় রড় ধরণের আঘাত ছিল।অজ্ঞাতপরিচয়ে প্রথমে তাদের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়।বেড না থাকায় পরে তার ঠাঁই হয় বারান্দায়।কয়েকদিন পরে তাদের ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬ষ্ঠ তলার পুরুষ ওয়ার্ডে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। তিনজনের মধ্যে বাকপ্রতিবন্ধী একজন শিশু ও মানসিক প্রতিবন্ধী একবৃদ্ধ বারান্দায় রয়েছে।অপরজন একটি রুমের ফ্লোরে শুয়ে আছে।এদের মধ্যে কেউই কথা বলতে পারেনা।শুধু ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকে আর মুচকি মুচকি হাসে।তিনজনের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন ও সেলাই রয়েছে।
পুরুষ ওয়ার্ডর পরিস্কারপরিছন্নতার দায়িত্বে মিনু জানান,প্রায় চার মাস যাবৎ ওই তিনজনের সেবা করতে হচ্ছে।এদের অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে তারা হাসপাতালের ফ্লোরে ও বারান্দায় পেশাব-পায়খানা করত।কোন কথা বলতে পারতনা।মাঝে মধ্যে শুধু তাকিয়ে থাকতে।এদের জন্য অন্যান্য রোগীদের সমস্যা হত।দিনে তিন-চারবার গোসল ও পরিস্কার করতে হত।তাদের জন্য রোগীদের আতœীয়-স্বজনরা গালাগাল করতেন।কিন্তু তারাও তো মানুষ।তাই সেবা করে আসছি। মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ লুৎফর রহমান জানান,যখন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।তখন তাদের অবস্থা খুবিই আশংখ্যাজনক ছিল।দীর্ঘদিন চিকিৎসা ও সেবা করার পর তারা এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো।এরমধ্যে মানসিকপ্রতিবন্ধী শিশুটির অবস্থা বেশি খারাপ ছিল।শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।মাথায় দশ থেকে বারোটি সেলাই দিতে হয়েছে।বাঁ হাতের বগলের কাছে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন। তা দেখে মনে হচ্ছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। মাথার আঘাতটি শুকিয়ে গেলেও হাতে এখনো বড় ক্ষত আছে। শিশুটি কেন কথা বলে না, তা বোঝা যাচ্ছে না। নির্যাতনের কারণে এমনটা হতে পারে। কিংবা হয়তো ভয়ে কথা বলছে না।শিশুটির অবস্থার আগের চেয়ে অনেক ভালো।আরেকটু উন্নতি হলে ঢাকায় পাঠানো হবে।তবে তার আগে পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।