একই মাঠ, একই প্রতিপক্ষ। প্রথম ওয়ানডেতে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে তারা হারল সব বিভাগে ছোটখাটো ভুলের কারণে। ৪ উইকেটের এই হারের জন্য ব্যাটিং ও বোলিংয়ে কিছুটা ঘাটতি, এমনকি বাজে ফিল্ডিংকে দায়ী করলেন মাশরাফি মুর্তজা।
সংবাদ সম্মেলনে ঢুকতেই প্রথম প্রশ্ন বাংলাদেশের ম্যাচ হারার কারণ নিয়ে। মাশরাফিও তৈরি ছিলেন। কোনও রাখঢাক না রেখেই তিনি বলেন, ‘ব্যাটিং-বোলিং দুটোই দায়ী। ব্যাট হাতে আমরা ১৫ থেকে ২০ রান কম করেছি। তামিম, সাকিব ও মুশফিক ভালো শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত খেলতে পারেনি। সাকিব আর মাহমুদউল্লাহ যদি আরও ৬ থেকে ৭ ওভার ব্যাটিং করতে পারতো, আমাদের রান ২৭০ থেকে ২৮০ হতো।’
ব্যাটিংয়ের ঘাটতি বোলিং আর ফিল্ডিংয়ে পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই আক্ষেপ মাশরাফির, ‘ব্যাটিংয়ে রান কম হলেও ফিল্ডিংয়ে পুষিয়ে দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু কিছু সুযোগ হাতের কাছে পেয়েও কাজে লাগাতে পারিনি আমরা। তাছাড়া বোলিংয়ে শুরুটা খুব ভালো ছিল আমাদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপর চাপটা শেষ দুই ওভার পর্যন্ত ছিল। কিন্তু সেঞ্চুরি করা একজন ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত থাকলে বোলারদের আর কিছুই করার থাকে না।’
তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের সঙ্গে মাশরাফি বাংলাদেশের ক্রিকেটে পঞ্চপান্ডব নামে পরিচিত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছিল তাদের মাইলফলকের ম্যাচ। একসঙ্গে তারা এনিয়ে খেলতে নেমেছিলেন শততম ম্যাচ। এমন মুহূর্তকে রাঙাতে পারলেন না তারা। মাশরাফির কণ্ঠে আফসোস, ‘জিতলে অবশ্যই ভালো লাগতো। বিশেষ করে সিরিজটা জিতে যেতাম এক ম্যাচ আগেই। একসঙ্গে পাঁচজন শততম ম্যাচ খেলছি, দারুণ এটা। কয়েকজন ভালো খেলেছে, কিন্তু আরও একটু সময় খেলে যেতে পারলে আর ভুলগুলো না হলে আমরাই জিততাম।’
ডেথ ওভারে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বোলার রুবেল হোসেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে তার ওপর আস্থা ছিল মাশরাফির। কিন্তু ইনিংসের শেষ প্রান্তে এসে ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে শাই হোপ সোজা ব্যাটে ছয় মারেন রুবেলকে। পরের বলগুলো নিয়ন্ত্রিত হলেও ওই ছয়ে বাংলাদেশের ছন্দপতন হয়েছিল একটু হলেও। তারপরও এই পেসারের পাশে থাকছেন মাশরাফি, ‘আজকের ওভারটা সে (রুবেল) খারাপ করেনি। হয়তো প্রথম বলে ছয় হয়েছে। বাকি ৫ বল বেশ ভালো করেই ম্যাচে দলকে ফিরিয়েছে। দুটি সুযোগও তৈরি করেছিল।’
লিটন দাস মাঠ ছাড়ায় বদলি ফিল্ডার ছিলেন নাজমুল ইসলাম অপু। রুবেলের ওই ওভারের শেষ বলে কিমো পলের ক্যাচ ফেলে দেন ডিপ স্কয়ার লেগে। তার বাজে ফিল্ডিংয়ের ব্যাখ্যায় মাশরাফি বলেন, ‘ফিল্ডিংয়ে অন্যতম সেরা অপু। কিন্তু ওর উল্টো পাশ থেকে ফ্লাড লাইটে বল দেখতে সমস্যা হচ্ছিল।’
জিততে শেষ ওভারে ৬ রান ঠেকাতে হতো বাংলাদেশকে। খুব একটা সহজ ছিল না কাজটা। কঠিন দায়িত্ব দেওয়া হয় মাহমুদউল্লাহকে, অথচ রুবেলের হাতে আরও এক ওভার ছিল। এমন সময় কেন অনিয়মিত বোলারের হাতে বল তুলে দেওয়া হলো, মাশরাফির জবাব, ‘রুবেল আগের ওভারে ১০ রান দিয়েছে। একজন থিঁতু হওয়া ব্যাটসম্যান ক্রিজে থাকলে পেসারদের বিপক্ষে ব্যাটিং করা সহজ হয়। আর স্পিনারের বলে শট খেলে রান নিতে হয়। তখন একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই চিন্তা থেকেই মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে আনা।’