1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
মানিকগঞ্জে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (APA) এর আওতায় উঠান বৈঠকে গ্রাম আদালত Sòng bạc trực tuyến thanh toán tốt hơn 2024 Sòng bạc lớn nhất một khoản thanh toán Прибыльные онлайн-игорный дом Нашей родины 2022 পাচারের টাকা ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বসবে সরকার: প্রেস উইং মানিকগঞ্জে পদ্মায় ধরা পড়ল ৪৪ কেজির বাঘাইর, ৪৮ হাজারে বিক্রি মানিকগঞ্জে বাদাহীন ভাবে মাওলানা সা‘দ এর বাংলাদেশে আসার দাবিতে স্বারকলিপি প্রদান Как выиграть во игорный дом во слоты абсолютно все проверено рабочие методы মানিকগঞ্জে বালু ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন মানিকগঞ্জে নাশকতা মামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতা গ্রেফতার শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে, অধ্যক্ষ মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন

মানিকগঞ্জের ঐতিহ্য হাজারী গুড় শীতের প্রকোপ কম থাকায় বেড়েছে উৎপাদন

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৯
  • ১৮২৪ বার দেখা হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি

এবার শীতের প্রকোপ কম থাকায় মানিকগঞ্জে খেজুর গাছ থেকে ভালো মানের রস সংগ্রহ করতে পারছেন গাছিরা। রস সংগ্রহ বাড়ায় গুড় উৎপাদনও ভালো হচ্ছে, বিশেষ করে হাজারী গুড়ের উৎপাদন। গাছিরা জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় প্রায় ৫০০ মণ হাজারী গুড় উৎপাদন হবে। বর্তমানে উৎপাদক পর্যায়ে এ গুড় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের একটি হাজারী গুড়। জেলার ব্র্যান্ডিংয়েও এ গুড় স্থান পেয়েছে। কথিত আছে, দেড়শ বছর আগে হাজারী প্রামাণিক নামে এক দরবেশ স্থানীয় এক গাছির কাছ থেকে খেজুর রস খাওয়ার পর তাকে গুড় তৈরির বিশেষ কৌশল শিখিয়ে দেন। সে অনুযায়ী গুড় তৈরির পর দেখা যায়, তা খেতে বেশ সুস্বাদু। দরবেশের নাম অনুসারে এ গুড়ের নাম রাখা হয় হাজারী গুড়। সেই থেকে প্রতি বছর শীত মৌসুমে হরিরামপুর উপজেলার চালা, গালা, বাল্লা, গোপীনাথপুর, কাঞ্চনপুর, ঝিটকা, রামকৃষ্ণপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজারী গুড় উৎপাদন হচ্ছে। তবে দিন দিন খেজুর গাছ ও গাছি কমে যাওয়ায় এ গুড়ের উৎপাদন কমে গেছে। এক সময় মানিকগঞ্জের শতাধিক গাছি পরিবার হাজারী গুড় তৈরি করত। বর্তমানে এ সংখ্যা পঞ্চাশে নেমে এসেছে।

হরিরামপুরের ঝিটকা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি গাছি বাড়ির উঠানে হাজারী গুড় তৈরির ব্যস্ততা। বাড়ির নারী সদস্যরাও গুড় তৈরিতে সহযোগিতা করছেন। কথা বলে জানা গেল, প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু করে সকাল ১০টা পর্যন্ত এ গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ চলে। গাছিরা জানালেন, সব খেজুর গাছের রসে হাজারী গুড় তৈরি হয় না। এ গুড় বানাতে হলে সপ্তাহের চারদিন রস সংগ্রহ বন্ধ রাখতে হয়। বাকি তিনদিন গাছ কেটে রস সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ কায়দায় গাছ কেটে রস সংগ্রহের পর বিশেষ পদ্ধতিতে মাটির হাঁড়িতে আগুনে জ্বাল দিয়ে হাজারী গুড় তৈরি করা হয়। এ গুড় তৈরির খাটনি অনেক। তারা জানান, এবারের তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার প্রকোপ কম থাকায় ভালো মানের খেজুর রস পাওয়া যাচ্ছে। এতে হাজারী গুড়ের উৎপাদন বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে জেলায় পাঁচ থেকে ছয় মণ হাজারী গুড় তৈরি হচ্ছে। তবু ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। এবার সব মিলিয়ে জেলায় ৫০০ মণ হাজারী গুড় উৎপাদন হবে।

হরিরামপুর উপজেলার শিকদার পাড়ার বয়োবৃদ্ধ গাছি আবদুস সালাম জানান, তার পরিবার ৪০ বছর ধরে হাজারী গুড় বানিয়ে আসছে। এ তৈরিতে বেশ পরিশ্রম হয়। তবে তিনি এখন বয়সের কারণে আগের মতো খাটাখাটনি করতে পারেন না। বর্তমানে তার দুই ছেলেই এখন গুড় তৈরি করেন।

তিনি বলেন, হাজারী গুড়ের জন্য সপ্তাহের একদিন বাদ দিয়ে একদিন খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করা হয়। তার পরিবার যে পরিমাণ রস সংগ্রহ করে, তাতে দিনে চার থেকে পাঁচ কেজি হাজারী গুড় তৈরি হয়। এ গুড়ের জন্য ক্রেতারা আগে থেকেই অর্ডার দিয়ে রাখেন। তিন-চারদিনের গুড় একত্র করে তাদের কাছে পাঠানো হয়। বর্তমানে প্রতি কেজি হাজারী গুড় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এরই মধ্যে তার পরিবার প্রায় ২০ হাজার টাকার হাজারী গুড় বিক্রি করেছে। তার আশা, এবার সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ মণ গুড় বিক্রি করতে পারবেন।

একই এলাকার আরেক গাছি সিদ্দিক সর্দার বলেন, তিনি ১৬ বছর ধরে হাজারী গুড় তৈরি করছেন। এবার তিনি ১৫০টি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। এর মধ্যে ১০০টি গাছ ৪০০ টাকা দরে চার মাসের জন্য কিনেছেন। বাকি ৫০টি বর্গায় নিয়েছেন। বর্গাদার হিসেবে মালিককে অর্ধেক রস দিয়ে দিতে হয়। বাকি অর্ধেক দিয়ে তিনি গুড় তৈরি করেন।

তিনি জানান, সাধারণত অগ্রহায়ণ থেকে হাজারী গুড় তৈরির জন্য গাছ কাটা শুরু হয়। ফাল্গুন পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা যায়। প্রতিদিন তিন থেকে চার কেজি হাজারী গুড় তৈরি করেন। বাকি রস দিয়ে সাধারণ গুড় তৈরি করেন।

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস জানান, সরকারিভাবে মানিকগঞ্জ জেলাকে হাজারী গুড়ে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথকেও এই গুড় উপহার দিয়ে দেশের বেশ সুনাম হয়েছে।

তিনি বলেন, জেলা ব্র্যান্ড হিসেবে হাজারী গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নতুন করে খেজুর গাছ লাগানো ও গাছিদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। শুধু তিন-চার মাস নয় খেজুর গাছ থেকে যেন সারা বছরই রস সংগ্রহ এবং হাজারী গুড় তৈরি করা যায়, সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা চলছে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury