ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মানহানি মামলায় তাকে গ্রেফতার তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমান এ আদেশ দেন।
বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রোডাকশন ওয়ারেন্টসহ (একই ব্যক্তি অপর মামলায় গ্রেফতার) জামিনের আবেদন করেন। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, মামলাটি গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলের জন্য ধার্য থাকলেও পরোয়ানা তামিল হয়ে আসে নাই। তাই গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টসহ জামিন শুনানির জন্য আগামী ২৪ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।’
এর আগে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন শুনানি করেন। তিনি শুনানিতে বলেন, ‘আমরা কারাগার থেকে ওকালতনামা স্বাক্ষর করে নিয়ে এসেছি। খালেদা জিয়া কোনও অপরাধ করেননি। রাজনৈতিকভাবে তাকে হয়রানি করতে এ মামলা করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। যে মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন আশা করছি অতি দ্রুত সেই মামলায় তিনি জামিন পেয়ে কারামুক্ত হবেন।’
অন্যদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক নথি পর্যালোচনা করে তা আদেশের জন্য রাখেন। শুনানির সময় মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী আদালতে হাজির ছিলেন। এর আগে গত ২০ জানুয়ারি, কারাগারে থাকা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন একই আদালত।
মামলার অভিযোগে
২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে শুভ বিজয়া অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের কাছে কোনও ধর্মের মানুষ নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে। হিন্দুদের ওপর হামলা করেছে।’ মামলায় বলা হয়, খালেদা জিয়ার এসব বক্তব্যে যেমন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে, তেমনই হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে শ্রেণিগত বিভেদও সৃষ্টি করেছে।
ওই ঘটনায় গত ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর এ বি সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এরপর গত ৩০ জুন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস। পরবর্তীতে এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন করেন তিনি।