শুভংকর পোদ্দার, স্টাফ রিপোর্টার:
জেলার শিবালয়ে আমজাদ মৃধা নামে অসহায় এক দরিদ্র কৃষকের মাঠ থেকে ধান কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। শুক্রবার ও শনিবার প্রায় এক বিঘা জমির ধান কেটে তা মাথায় করে কৃষকের বাড়িতে নিয়ে মাড়াই করে দেন তারা। এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে উপজেলার অন্তত ১৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এ ধান কাটায় অংশ নেন।
উপজেলার ষাইট ঘর তেওতা গ্রামের কৃষক আমজাদ মৃধা জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। অন্যের কাছ থেকে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে এবার বোরো ধান চাষ করেছেন। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় তিনি যতটা খুশি হয়েছিলেন, ততটাই হতাশ হয়েছেন সময় মতো ধান কাটার শ্রমিক না পেয়ে। ৬৫০ টাকা রোজেও শ্রমিক মিলছিলো না। তাই সোনালি ফসল কিভাবে ঘরে তুলবেন তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন আমজাদ।
এ অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তার খেতের ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি খুবই খুশি হয়েছেন। শুধু ধান কেটে দেওয়া নয়, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাথায় করে তার ধান বাড়ি নিয়ে মাড়াই করেও দিয়েছেন। আবেগ আপ্লুত আমজাদ এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জন্য দুহাত তুলে দোয়া করেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া জানান, সারা দেশে যখন শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকের ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজুয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার জন্য। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কৃষক আমজাদ মৃধার ধান কেটে মাড়াই করে দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ নেতা আনিছুর রহমান, রাকিব হাসনাত আওয়াল, মো. সুজন মিয়া, মো. রাজিব হোসেন, মো. জুয়েল, বিশ্বজিৎ, শাহাদত, আকাশ হোসেন, মো. জাকারিয়া, রাকিব, আলামিন ও রনিসহ তের জন ছাত্রলীগ নেতা এই ধানকাটায় অংশ নেন। উপজেলার আরো অসহায় কৃষক থাকলে আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো। আমাদের এ স্বেচ্ছাশ্রম অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক এলাকায় সেচ্ছাসেবী হিসেবে এক বিধবা মহিলার ক্ষেতের ধান কেটে দিয়েছেন উপজেলার মীর নাদিম হোসেন নামে এক যুবক। এবিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার ধান কেটে দেবার উদ্দেশ্য হলো এই ক্ষেতের মালিক এক এতিম মা। তার জামাই মারা গেছে গত দুইবছর আগে কিন্তু দুটো অবিবাহিত মেয়ে রেখে গিয়েছিল। যাইহোক একটা মেয়ে আমরা সামাজিক ভাবে বিয়ে দিয়েছি। আরেক টা মেয়ে আছে ওর ও বিয়ে দিবো। এখন এই বিধবা মায়ের কোনো ছেলে না থাকায় ওরা কাজ করতে পারে না। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে দিলাম। যদিও এই ক্ষেত অনেকটা কেটে রাখা কিন্তু ওদের কাজ ওরা করতে পারে না তাই আমি রোজা থেকেও তাদের কিছুটা সাহায্য করলাম।