স্টাফ রিপোর্টার :
আজ মানিকগঞ্জের কৃতি সন্তান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র, সাবেক মন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সাবেক সদস্য মরহুম কর্ণেল অব: এ.মালেক-এর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর গ্রামে এক সভ্রান্ত পরিবারে ১৯৩৫ সালের পহেলা মার্চ জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মরহুম এম.কে মোল্লা এবং মাতার নাম ইসাতুন্নেছা। বাল্যকাল হতেই তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ইংরেজী সাহিত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ ভর্তি হন এবং ১৯৫৯ সালে দতানীন্তন পাকিস্থান সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত হন। সেনাবাহিনীতে তিনি বহু গুরুত্তপূর্ন পদ অলংকৃত করেন। ব্রিগেড মেজর হিসেবে ইন্ডিপেন্ডেট ব্রিগেড গ্রুপের দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্ণেল (অব:) এ মালেক ১৯৫৬ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ নামক গ্রামে বিশিষ্ট মুসলিম পরিবারের মরহুম মফিজ উদ্দিন খানের কন্যা মিসেস ফৌজিয়া মালেকের সহিত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কর্ণেল (অব:)মালেকের চিন্তা ও চেতনা ছিল সুদূর প্রসারী। বাংলাদেশ এ্যালুমিনিয়াম শিল্পের প্রথম উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ বিভিন্ন বহুতল বিশিষ্ট ভবনে এ্যালুমিনিয়ামের ব্যবহারে এক আলোড়ন সৃষ্ঠি করেন এবং একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণেল (অব:) এ মালেক সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। মানিকগঞ্জ-সাটুরিয়া নির্বাচনী এলাকা হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ঐ বছরই ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লাভ করেন। পরবর্তিতে তিনি ১৯৮৯ সালে বস্ত্রমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রী পরিষদে যোগদান করেন। ১৯৯৬ সালে কর্ণেল (অব:) এ মালেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৮ সালে আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য লাভ করেন। তার মৃতে্যুর কয়েকদিন পূর্বে অর্থাৎ ৯ই জুলাই ২০০০ সালে সোনারগাঁও হোটেলে তিনি সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্ধোধন করেন। তিনি কর্পোরেশনে মানিকগঞ্জের অনংখ্য লোকের চাকুরীর ব্যবস্থা করেন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীতে মানিকগঞ্জে অজস্র লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বিশিষ্ট সমাজ সেবক, বিচক্ষনণ রাজনীতিবদি, দানবীর হিসেবে খ্যাত কর্ণেল (অব:) এ মালেক এর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মানিকগঞ্জ তথা বাংলাদেশের উন্নয়নের অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র থাকাকালীন ঢাকা মহানগরীকে তিলোত্তমা ঢাকা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিনি জনগনের কল্যাণে সর্বদা নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। এমনকি তিনি তার জীবনের শেষ দিনেও জনসমাবেশে বক্তব্য দান কালে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৬ ই জুলাই ২০০০ সালের ভোর ৫টায় জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে হৃদযন্তের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি তার স্ত্রী, এক সুযোগ্য পুত্র ও একগুণবর্তী কন্যাসহ বহু বন্ধুবান্ধব ও গুনগ্রাহী রেখে গেয়েছেন। কর্ণেল (অব:) এ মালেকের এর সুযোগ্য ছেলে আলহাজ্ব জাহিদ মালেক স্বপন যিনি বর্তমানে সানলাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী ও বাংলাদেশে থাই এ্যালুমিনিয়াম কোম্পানীর চেয়ারম্যান। তিনি গত ২৯ শে জানুয়ারী ২০০৯ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন এবং বিদূষী কন্যা রুবিনা হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও উক্ত কোম্পানীর সুযোগ্য ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মৃত্যুবাষির্কীতে তার গ্রামের বাড়ীতে দোয়া মাহফিল,কাঙ্গালীভোজ ও দলীয় নেতাকর্মীরা মরহুমের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাবেন।