1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৮ অপরাহ্ন

সড়ক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু এখন কে তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিবে- প্রশ্ন শিশু শিশিরের !

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৯
  • ১২১৫ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

আমার বাবার স্বপ্ন ছিলো আমাকে ডাক্তার বানাবেন। কিন্তু এখন আমার লেখাপড়ার খরচ কে দিবে? হয়ত আমার আর লেখাপড়া হবে না। বাবার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। কথাগুলো বলে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ঢাকা-আরিমহাসড়কের ধামরাই এলাকার বাথুলীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শাহিনুল ইসলাম হালিমের একমাত্র সন্তান শিশির আহমেদ (১১)।

গত ১৬ জুলাই দুপুর একটার দিকে শুভ বসুন্ধরা পরিবহনের বেপরোয়া বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তার বাবা সাভারের সাহারা মেমোরিয়াল হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসার শাহিনুর ইসলাম হালিম।

এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী শাহিনুর ইসলাম হালিমের মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন গৃহবধূ ফরিদা আক্তার। ছেলের ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কিত তিনি। কিভাবে সংসার চলবে, কোথা থেকে আসবে ছেলের লেখাপড়ার খরচ সেই চিন্তায় চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন তিনি।

ফরিদা আক্তার জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার আইড়মারা চরে। স্বামী শাহিনুর ইসলাম হালিম ও একমাত্র ছেলে শিশির আহমেদকে নিয়ে ভালোই চলছিলো তাদের সংসার। অতিরিক্ত আয়ের আশায় গত বছর স্বামী হালিম ভিটেমাটি বিক্রি করে ও এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে ধারকর্য করে কাতার যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি দালালের প্রতারণার শিকার। একপর্যায়ে হাজতবাস করে দেশে ফিরে আসেন। এ সময় এলাকায় পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। পরে বাধ্য হয়ে এলাকা থেকে সাভারে আশ্রয় নেন। সেখানে সাহারা মেমোরিয়াল হাসপাতালে মার্কেটিং অফিসার হিসেবে চাকরি নেন। চাকরির টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি মানুষের ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করতে থাকেন। গত ১৬ জুলাই পাওনাদারের এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে সাভার থেকে মানিকগঞ্জে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর পর এখন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কি করব বুঝতে পারছি না।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গোলড়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম জানান,  ১৬ জুলাই দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকা জেলার ধামরাই থানার বাথুলী বাসস্ট্যান্ডের রোড ডিভাইডারের পশ্চিম পাশে ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জগামী শুভ বসুন্ধরা পরিবহনের একটি বাসের (নম্বর : চট্ট মেট্রো ব-১১-০০৩৪) চালক বেপোরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে একটি মোটরসাইকেলকে (নম্বর : ঢাকা মেট্রো হ-১২-০২৮২) সজোরে আঘাত করলে, তার চালক ও আরোহী  ছিটকে পড়ে যায়। একই সঙ্গে উক্ত বাসের চালক দ্রæত ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা শাহিনুর ইসলাম হালিমের মোটরসাইকেলকে স্বজোড়ে আঘাত করে। ফলে ওই মোটরসাইকেলসহ হালিম বাসের চাকার সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় বাসের চালক গাড়িটি না থামিয়ে হালিমকে বাসের সঙ্গে আটকে আনুমানিক ১৫/১৬ ফিট চেঁছড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি ছিটকে পড়ে যান এবং তার ডান হাত ও ডান পায়ের হাড় ভেঙ্গে ও থেতলে যাওয়াসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখমপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার মোটরসাইকেলটি গাড়ির নিচে আটকে থেকে আনুমানিক ৫ শত ফিট যাওয়ার পর বাসটির চালক গাড়িটি মহাসড়কে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গাড়ির চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ফরিদা আক্তার অভিযোগ করেন, ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো চালকের সন্ধান বের করার চেষ্টা করেনি। গাড়ির মালিক কে বা গাড়ির কাগজপত্র আছে কিনা তাও  জানে না পুলিশ। এমতাবস্থায় তিনি ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কাবোধ করেন।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury