স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশ্যে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না,ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ লি: ,জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল ও আবুল খায়ের টোবাকো লি:।
শহর ও এর আশপাশের এলাকাসহ উপজেলা পর্যায়ে উল্লেখিত তামাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন নামি দামি ব্যান্ড্রের প্রচার ও প্রসারের জন্য বসানো হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র। হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল,স্কুল-কলেজের আশপাশে সুবিধাজনক স্থানকে বেছে নেওয়া হচ্ছে এই কাজে। কোম্পানির নিয়োগ করা কর্মীদের দিয়েই চলছে এই আইনবিরোধী কাজ।
এতে করে স্কুল ও কলেজ গামী কোমলমতি উঠতি বয়সি অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুনেরা তাদের চটকদার বিজ্ঞাপনে উৎসাহিত হয়ে তামাকজাত দ্রব্য সেবনে ঝুকে পড়ছে।
শহরের পৌর হকার্স বাসস্ট্যান্ড এলাকা,টেম্পু স্ট্যান্ড, শহীদ রফিক সড়ক এলাকা,সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ সংলগ্ন স্থান, আদালত চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়ে কোম্পানিগুলোর ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র।
আর এদিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে (বি,এ,টিবি)। সিগারেটের নাম ও দামসহ ব্যানারে উল্লেখ করা হচ্ছে ‘এখানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সিগারেট বিক্রয় করা হয়। আইন ফাঁকি দিতে সঙ্গে বিক্রি করা হচ্ছে চকলেট। দোকানে সিগারেটের মুল্যে তালিকার পাশাপাশি কৌশলে লিখে দেওয়া হচ্ছে পানির মুল।
এদিকে জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই তাদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এক রঙা টি-শার্ট,জাপানিজ কোয়ালিটি লেখা ভ্যান আর নানা বিজ্ঞাপন ও প্রচার সামগ্রী নিয়ে নগরব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মী জানান, চাকরির শর্ত অনুযায়ী কোম্পানির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই আমরা এ কাজ করছি।
তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ এর (ক) ধারায় প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনো বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা বা করানো যাবে না। (খ) ধারায় তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়ে প্রলুব্ধ করার উদ্দেশ্যে, এর কোনো নমুনা, বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে, জনসাধারণকে দেওয়া যাবে না এবং (ছ) ধারায় তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে যেকোন উপায়ে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। আইনে ৬ এর (ক) (১) ধারায় কোনো ব্যক্তি অনধিক আঠারো বৎসর বয়সের ব্যক্তির কাছে তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করতে পারবে না।
অন্যদিকে ২০১৯ অর্থ বছরে বাজেটে ১০ শলাকা সিগারেটের সবনিম্ম মুল্য ৩৭ টাকা নিধারণ করা হলে কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় টোব্যাকো কোম্পানী বিশেষ করে (বি,এ,টিবি) , (জেটিআই) ও আবুল থায়ের টোব্যাকো সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রচারের নামে সরকারে সর্বনিম্ম মুল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি করছে তাদের উৎপাদিত পন্য । বিশেষ করে ডারবি , শেখ , ম্যারিজ ইত্যাদি । খুচরা বাজারে এই সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। । কম দামে বিক্রির কারণে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব ।
এই তিন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন , কোম্পানির ছাড় দিলে আমাদের তো করার কিছু নেই । আইনি কোন জটিলতা হলে অফিস দেখবে ।
অথচ মানিকগঞ্জ শহর ও গ্রামে প্রকাশ্যে ভ্রাম্যমান ও স্থায়ী দোকানগুলোতে প্যাকেট ও লিফলেট প্রদর্শন করে,সরকার নির্ধারীত মুল্যের চেয়ে কম মুল্যে সিগারেট বিক্রি করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করা হলেও তা বন্ধে ভূমিকা রাখছে না স্থনিীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো।
এসমস্ত আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে সিগারেট বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তামাক বিরোধী বিভিন্ন সংগঠন গুলো। পাশাপাশি অভিভাবকদেরও পারিবারিক,শিক্ষা সুরক্ষা ও সচেতনতা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।