এস.এম আকরাম হোসেন:
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাফাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র আশরাফুল ইসলাম নিখোঁজ হওয়ার মাস পার হলেও এখনো কোন হদিস মেলেনি। এতে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছে ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের লোকজনসহ শিক্ষক ও সহপাঠিরা। নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থী আশরাফুলকে ফিরে পেতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ পালন হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার মানিকগঞ্জ-বালিরটেক আঞ্চলিক সড়কে ঘন্টাকালব্যাপী ওই মানববন্ধনে তিনটি বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী-শিক্ষক, এলাকাবাসী ও স্বজনরা অংশ নেয়। মানববন্ধন চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কাফাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান, প্রধান শিক্ষক মো.মফিজ উদ্দিন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মো.আক্কাস উদ্দিন, লেমুবাড়ি বিনোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বীনবন্ধু রায়, কাফাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্ধ্যা রানী রায়, সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও পুটাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: জামাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য আরশেদ আলী, নিখোঁজ আশরাফুলের বাবা মোহাম্মদ আলী, মা ফাতেমা বেগমসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থী আশরাফুল নিখোঁজের পর পরই পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন ও র্যাবকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এক মাস পার হলেও প্রশাসন থেকে কোন ধরনের অগ্রগতি পাওয়া যায়নি। এতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর বাবা-মা, সহপাঠীসহ এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। নিখোজ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে পুলিশের ভুমিকা নিয়েও অনেকে মন্তব্য করেন। তারা বলেন, পুলিশ চাইলে দ্রæত আশরাফুলের হদিস করতে পারে। কিন্ত পুলিশ কোন কার্যকর ভুমিকা রাখছে না। বক্তারা দ্রæত আশরাফুলের খোঁজ পাওয়ার দাবী জানান।
এলাকাবাসী জানায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর একই এলাকার আরশেদ আলীর ছেলে দশম শ্রেনীর ছাত্র সোহান মিয়াও নিখোঁজ হলে পরের দিন বরিশাল জেলায় তাকে পাওয়া যায়।
এদিকে মানববন্ধনে অংশ নেয়া আশরাফুলের পিতা মোহাম্মদ আলী বলেন, তার ছেলে আশরাফুল নিখোজ হওয়ার পর ইমো নাম্বারে তাকে সৌদি আরবে কল দিয়ে ৫০লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করা হয়। এরপর তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে থানায় ছেলে অপহরণের মামলা করেন। মামলার পরও কয়েক দফায় অপহরণকারীরা তার কাছে মুক্তিপনের টাকার পরিমান কমিয়ে ৫লাখ টাকা দাবী করেন। পুরো বিষয়গুলো তিনি সদর থানা পুলিশ ও র্যাব-৪ কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ করেন। কিন্তু এক মাস পার হলেও কোন প্রশাসনই আশরাফুলের খোঁজ মিলাতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে পুত্রকে ফিরে না পেয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছে আশরাফুলের মা ফাতেমা বেগম। যে কোন মূল্যে তিনি তার সন্তানকে ফিরে পেতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, আশরাফুল নিখোঁজে প্রথমে থানায় জিডি ও পরে মামলা নেয়া হয়। তাকে উদ্ধারে পুলিশী অভিযান অব্যহত আছে। এরই মধ্যে আশরাফুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আশরাফুলকে উদ্ধারসহ জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৬সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে সদর উপজেলার কাফাটিয়া গ্রামের শিক্ষার্থী মো.আশরাফুল ইসলাম নিখোঁজ হয়।