স্টাফ রিপোর্টার :
মানিকগঞ্জে আলোচিত কাফাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর স্কুল ছাত্র আশরাফুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে নিখোঁজের দেড় মাস পর জানা গেছে সে নিখোঁজ হয়নি। নিখোঁজের দিনই তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। শনিবার রাতে মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে দুই আসামী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত ) হানিফ সরকার জানান, গত ৬ আগষ্ট বিকালে স্কুল ছাত্র আশরাফুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এঘটনায় পরে দিন আশরাফুলের দাদা নাজিম উদ্দিন মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।
পরে জিডিটি মামলা আকারের রেকর্ড করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিখোঁজ স্কুল ছাত্রের সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। ২৫ আগস্ট আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় সিংগাইর আজিজমপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওই মোবাইলের সূত্রে ধরে গত বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার কাফাটিয়া গ্রামে মনোয়ার হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন (২৪) ও সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে আরিফ হোসেনকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক নিখোঁজ আশরাফুলের মরদেহ উদ্ধারের জন্য উত্তর জামশা এলাকায় কালিগঙ্গা নদীতে ডুবুরি দিয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গ্রেফতারকৃতরা পুলিশ ও আদালতকে জানিয়েছেন ঘটনার দিন গত ৬ আগস্ট স্কুল ছাত্র আশরাফুলকে তার ব্যবহৃত সুজিকি মোটরসাইকেল নিয়ে আসামী ইব্রাহিম হোসেন সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা যায়। সেখানে আশরাফুলসহ চার আসামী উত্তর জামশা গ্রামে আলমের বাড়িতে মাদক সেবন করে। এরপর একটু রাতে হলেই আশরাফুলকে নিয়ে ইউনুসের বাশঝাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামীরা আশরাফুলকে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে লাশ পাশের কালিগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়। ওই রাতেই আশরাফুলের মোবাইলের ইমু ব্যবহার করে আসামীরা তার প্রবাসী পিতা মোহাম্মদ আলীর কাছে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে ও বিভিন্ন বিকাশের নম্বর দেন টাকা পাঠানোর জন্য। ঘটনার কয়েকদিন পর আশরাফুলের সুজকি মোটরসাইলটি রাজবাড়ি জেলার সাজ্জাদ হোসেনের কাছে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করে ওই টাকা আসামীরা ভাগ করে নেয়। আশরাফুলের ওই মোটরসাইকেলটি শুক্রবার সিলেটে উদ্ধার করা হয়েছে।
অপর দিকে চারজন আসামীর মধ্যে একজন সম্প্রতি বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বাকী জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। শনিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে দুই আসামী আশরাফুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।