ভাবমূর্তি সংকটে থাকা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে শেখ ফজলে শামস পরশ এবং মঈনুল হোসেন নিখিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী তিন বছর যুবলীগের নেতৃত্ব দেবেন তারা। শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কংগ্রেস উদ্বোধনের পর বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বসে কাউন্সিল অধিবেশন। অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সর্বসম্মতভাবে তাদের নাম ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, কাউন্সিলের নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিবেশনে কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান চয়ন ইসলাম পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে পরশের নাম প্রস্তাব করেন। এ সময় বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ তা সমর্থন করেন। সভাপতি হিসেবে আর কোনো নামের প্রস্তাব না ওঠায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন পরশ। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ছয়জনের নাম প্রস্তব করা হয়। তারা হলেন- মাঈনুল খান নিখিল, মহিউদ্দিন মহি, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন, সুব্রত পাল, মনজুরুল আলম শাহীন, ইকবাল মাহমুদ বাবলু, বধিউল আলম বধি।
তবে শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিখিলের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে মাঈনুল খান নিখিল ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এ যুবনেতা বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে জড়ান। পরে মিরপুরে ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক থেকে মহানগর ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ মনিরের বড় ছেলে পরশ এতদিন নিজেকে রাজনীতি থেকে দূরেই সরিয়ে রেখেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির সাবেক এ ছাত্র বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। তার ছোট ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস ইতোমধ্যে রাজনীতিতে এসে সংসদ সদস্য হয়েছেন, আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবী সংগঠনের নেতাও হয়েছেন।
পরশ-তাপসের চাচা শেখ ফজলুল করিম সেলিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীতে রয়েছেন। শেখ সেলিমও এক সময় যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন।
শেখ সেলিমের ভগ্নিপতি ওমর ফারুক চৌধুরীও হয়েছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান। অর্থাৎ পরশের ঠিক আগেই যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছিলেন তারই ফুপা ওমর ফারুক।
ওমর ফারুকের দায়িত্ব পালনের মধ্যেই বিতর্কের মধ্যে পড়তে হয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয় যুবলীগকে।
সম্প্রতি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে যুবলীগের অনেক শীর্ষ নেতা বিতর্কিত হওয়ায় ক্লিন ইমেজের নেতা খোঁজে আওয়ামী লীগ। প্রথম থেকেই শেখ ফজলে শামস পরশ চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমা, দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিল্পব বড়ুয়া প্রমুখ।