মিথিলাকে বিয়ের পর প্রথমবার ঢাকায় এসে শ্বশুরবাড়িতে গরুর মাংস দিয়ে ভুরিভোজ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় সিনেমা নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি। এতে তার ওপর অনেক ভারতীয় নাখোশ হলেও কেউ কেউ তার প্রশংসাও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন কলকাতার জনপ্রিয় নায়ক ও তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য দীপক অধিকারী দেব এবং নায়িকা নুসরাত জাহানও।
বাংলাদেশে এসে শ্বশরবাড়িতে গরুর মাংস দিয়ে ভুরিভোজ করায় সৃজিতের প্রশংসা করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেব। আর নুসরাত জাহান পরিচালক সৃজিতের গরুর মাংস খাওয়ার জন্য ‘good Done’ বলে মন্তব্য করেছেন।
চলতি মাসে কলকাতার জনপ্রিয় এই নির্মাতা বিয়ে করেছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলাকে। বিয়ের পর তারা হানিমুনে যান জেনেভায়। হানিমুন সেরে সরাসরি বাংলাদেশে পাড়ি দেন সৃজিত-মিথিলা।
প্রথমবার শ্বশুরবাড়িতে জামাই আদর পেয়ে বেজায় খুশি ছিলেন সৃজিত মুখার্জি। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন শ্বশুরবাড়ির বাহারি রান্নার ছবি। মেনুতে ছিল ঝিরি ঝিরি আলুভাজা, লটে শুঁটকি, পাবদা মাছ, মুরগির ঝোল এবং বাঁধাকপি দিয়ে গরুর গোস্ত। ক্যাপশনে সৃজিত লেখেন, ‘শ্বশুরবাড়ির প্রথম অফিসিয়াল ভুরিভোজ…।’
কিন্তু তার গরুর মাংস খাওয়া ভালো লাগেনি কারো কারো। হিন্দু হয়ে কী করে গরুর মাংস খাচ্ছেন সৃজিত? টুইটারে সৃজিতের সেই ছবির নীচে এমন প্রশ্নই তুললেন এক টুইটার ব্যবহারকারী। সৃজিতকে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করার উপদেশ দিয়ে তিনি লিখলেন, ‘হিন্দুর নামে কলঙ্ক আপনি। আপনাকে খুব সম্মান করতাম। কিন্তু এই পোস্টটার পর থেকে আপনাকে এখন খুব ঘৃণা করি। আপনি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করুন।’
এমন মন্তব্য চাইলেই এড়িয়ে যেতে পারতেন সৃজিত। কিন্তু তিনি সেটা না করে মোক্ষম উত্তর দিলেন টুইটার ব্যবহারকারী সেই উপদেশকারীকে। সৃজিত লিখলেন, ‘হিন্দুধর্ম নিয়ে কথা আপনার মতো অশিক্ষিতের মুখে বেমানান। ঋগ্বেদ, মনুস্মৃতি ও গৃহসূত্রের কিছু শ্লোক দেব খাওয়া-দাওয়া নিয়ে, রোজ সকালে কান ধরে ছাদে দাঁড়িয়ে মুখস্থ করবেন। ভদ্রভাবে বোঝালাম, নয়ত মনে রাখবেন, বাইশে শ্রাবণের সংলাপ কিন্তু আমারই লেখা।’
অন্যদিকে, এমন উত্তর দেওয়ায় অনেকে আবার ব্যাপক প্রশংসা করছেন ‘অটোগ্রাফ’ খ্যাত এই নির্মাতার। সৃজিতের কড়া জবাবের সেই স্ক্রিনশটটি অসংখ্য মানুষ তাদের টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করছেন। সৃজিতকে বাহবা দিচ্ছেন, কট্টর মনোভাব সম্পন্ন মানুষের মন্তব্য এড়িয়ে না গিয়ে মোক্ষম জবাব দেয়ার জন্য!
৬ ডিসেম্বর বিয়ে করেছেন মিথিলা ও সৃজিত। এর পরদিনই মিথিলা পিএইচডিতে ভর্তির জন্য উড়াল দিয়েছিলেন জেনেভার উদ্দেশ্যে। সেখানে কাজ শেষ করে হানিমুনের জন্য সৃজিত-মিথিলা গিয়েছিলেন গ্রিসে। প্রায় সপ্তাহ খানেকের বেশি সময় একান্তে কাটানোর পর মিথিলার সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন সৃজিত।