মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
রাজধানীর কলেরা প্রবণ ছয় এলাকায় চলছে টিকাদান কর্মসূচি। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এ কর্মসূচি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সিটি করপোরেশনের স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রসহ ৩৬০ টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশকে কলেরামুক্ত করতে বুধবার থেকে খাওয়ানো হচ্ছে টিকার প্রথম ডোজ। এক মাস পরে টিকার দ্বিতীয় ডোজ খাওয়ানো হবে।
রাজধানীতে সবচেয়ে কলেরা প্রবণ এলাকা হলো মোহাম্মদপুর। গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া এ তালিকায় রয়েছে আদাবর, দারুসসালাম, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগ ও লালবাগ এলাকা। এই ছয় এলাকার ১৬টি ওয়ার্ডে ১৯ থেকে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ১২ লাখ ডোজ টিকা খাওয়ানো হবে। এক বছরের বেশি বয়সী যে কেউ মুখে খাওয়াতে এই টিকা নিতে পারবে।
১৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌস ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এমিরেটাস বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী এ সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। ডায়রিয়াজনিত রোগের মধ্যে ২০ শতাংশই কলেরার জীবাণুবাহী।
কলোর সংক্রান্ত আইসিডিডিআরবির সর্বশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরে ড. কাদরী বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যারা মহাখালী কলেরা হাসপাতালে আসেন তাদের মধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকার রোগীদের কলোরা প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এদের মধ্যে প্রতি বছর কলেরায় আক্রান্তের হার ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া আদাবর এলাকায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ, দারুসসালাম এলাকার দশমিক ৩ শতাংশ, লালবাগ এলাকার ২ দশমিক ১ শতাংশ, কামরাঙ্গীরচর এলাকার ১ দশমিক ৫ শতাংশ, হাজারীবাগ এলাকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আগামী ৩০ সালের মধ্যে দেশকে কলেরামুক্ত করতে হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণেই এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা করছে গ্যাভি। আপাতত রাজধানীর ছয়টি এলাকায় এ কার্যক্রম শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে সারাদেশেই এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলেও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার ৪৭টি দেশে কলেরার সংক্রমণ ঘটে। প্রতিবছর পৃথিবীতে ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশসহ মোট আটটি দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ মানুষ এ রোগের শিকার হয়ে থাকে।