স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় করোনা ভাইরাসজনিত কারণে কিস্তি আদায়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদাণ করেন জেলা প্রশাসক। তবে ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে দেদারসে কিস্তি আদায় করে যাচ্ছে গ্রামীন ব্যাংক। খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার ধানকোড়া গ্রামীন ব্যাংক ম্যানেজারকে ২০০ টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামীন ব্যাংক ধানকোড়া শাখার এক কর্মী জানান, সাটুরিয়া উপজেলা ও ঢাকার ধামরাই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন মিলে ধানকোড়া শাখার অধিনে গ্রামীন ব্যাংকের মোট ৫৩ টি শাখা রয়েছে। প্রতিটি শাখায় ৪০ থেকে ৬০ জন করে সদস্য রয়েছে। ম্যানেজারের নির্দেশে প্রতিটি শাখা থেকে কিস্তির টাকা আদায় করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলে দুপুরের পরের কেন্দ্রগুলোতে আর কিস্তি আদায়ে যায়নি কেউ। এসময় তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসজনিত কারণে অনেকের আয় কমে গেছে। কেন্দ্রে গেলে তারা কিস্তি দিতে অনিহা করেন। কিন্তু এসব কথা মানতে নারাজ ব্যাংক ম্যানেজার। এছাড়া কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য নানা শ্রেনী পেশার মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়া এখন নিজেদের জন্যও খুব ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী অচিরেই ব্যাংকের কিস্তি আদায় কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানান তিনি। ধানকোড়া গ্রামীন ব্যাংকের গ্রাহক সাজেদা বেগম বলেন, সকালে জোর করে কিস্তি আদায় করে আসছে ব্যাংকের লোকজন। পরে সঞ্চয়ের টাকা উত্তেলনের জন্য ব্যাংকে আসছি। এখন ম্যানেজার সঞ্চয়ের টাকা দিতে গড়িমসি করছে। অনেক অনুরোধ করার পরে তাদেরকে কিস্তি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ধানকোড়া ইউনিয়নের সাহেবপাড়া এলাকার নাছিমা নামে গ্রামীন ব্যাংকের গ্রাহক জানান, দুই মাস আগে তার কিস্তি শেষ হয়েছে। এখন ডিপিএস’র টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে এসে নাজেহাল হচ্ছেন তিনি। ডিপিএস’র মেয়াদ শেষ হলেও ব্যাংকে টাকা নাই বলে বার বার তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীন ব্যাংক ধানকোড়া শাখার ম্যানেজার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, কিস্তি বন্ধ রাখার বিষয়টি তিনি জানতেন না। ইউএনও জরিমানা করার পর কিস্তি আদায় বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য লেনদেনের জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। আর একসাথে অনেকেই সঞ্চয়ের টাকার জন্য আসায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিস্তি আদায় করায় ব্যাংক ম্যানেজারকে দুইশো টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপরও যদি তারা তাদের কার্যক্রম বহাল রাখে তবে আইন অমান্য করার দায়ে জেল দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।