স্টাফ রিপোর্টার:
সম্প্রতি বলিউড অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তার স্ত্রী আলিয়া। ডিভোর্স ও ভরণপোষণের খরচ চেয়ে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি।
নওয়াজ ও আলিয়ার দীর্ঘ ১০ বছরের সংসার। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালে তাদের বিচ্ছেদের খবর চাউর হয়। তবে নিজেদের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে নিয়েছেন বলে জানান তারা। এক সাক্ষাৎকারে ডিভোর্স চাওয়ার কারণ ও নওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন তার স্ত্রী।
আলিয়া সিদ্দিকী বলেন, ‘সমস্যা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল, নওয়াজকে যখন বিয়ে করি তখন থেকেই। কিন্তু এতদিন এগুলো সম্মুখে নিয়ে আসিনি। আমি এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। চাইছিলাম তারা ভালো হোক। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আসলে আমার আত্মমর্যাদা দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছিল। যেভাবে বড় হয়েছি, মা ও ভাই যেভাবে যত্ন নিয়েছে, এরপর হঠাৎ ধর্ম পরিবর্তন করতে হলো। যাহোক, বিয়ে করার জন্য সেটি প্রয়োজন ছিল। তাই যখন নওয়াজ আমাকে বলে আমি রাজি হই। কিন্তু তারপর জীবন পাল্টে গেলো, বুঝতে পারলাম তার কাছে আমি কিছুই না, কখনো ছিলামও না। গত দশ বছর ধরে সন্তানদের নিয়ে একা থাকছি, সবকিছু একা সামলাচ্ছি। তাই এই সম্পর্ক শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি সবকিছু একাই করতে হয় তাহলে একা থাকলেই হয়।’
তবে নওয়াজ কখনো শারীরিক নির্যাতন করেননি বলে জানান আলিয়া। কিন্তু এই অভিনেতা তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘সে আমার গায়ে কখনো হাত তোলেনি। কিন্তু তার চিৎকার করে কথা বলা অসহ্য হয়ে পড়েছে। বলতে পারেন শুধু গায়ে হাত তোলাটাই বাকি রয়েছে। তবে হ্যাঁ, তার পরিবার আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে অনেক নির্যাতন করেছে। এমনকি তার ভাই আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে। তার মা, ভাই, ভাবি মুম্বাইয়ে আমাদের বাড়িতে থাকত। তাই অনেক বছর আমাকে এগুলো সহ্য করতে হয়েছে। এই কারণে তার প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে গেছে। এটি তাদের পরিবারের একটি প্যাটার্ন। ইতোমধ্যে বাড়ির বউরা তাদের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা করেছে, চারটি ডিভোর্স হয়েছে। আমারটা পঞ্চম। বাবা-মা নেই, আমার ভাইও গত ডিসেম্বরে মারা গেছেন। বোন আমাকে অনেক সহযোগিতা করছে।’
নওয়াজউদ্দিন সন্তানদের সময় দেন না বলে অভিযোগ করেছেন আলিয়া। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানরা মনে করতে পারে না শেষ কবে তাদের বাবার সঙ্গে দেখা হয়েছে। ৩-৪ মাস আগে সন্তানদের সঙ্গে তার দেখা হয়। এমনকি বাচ্চারাও এখন এই বিষয়ে অভ্যস্ত, তার কথা জিজ্ঞেসও করে না। আমি একা বাচ্চাদের দায়িত্ব চাই। কিছু মানুষ খ্যাতি সামলাতে পারে না, নওয়াজ তাদের একজন। অনেক অসম্মান সহ্য করেছি। এখন আমার জীবন থেকে তার নাম মুছে ফেলতে ও নিজের পরিচয় তৈরি করতে চাই। বিয়ের পর বলেছিল, সে শুধু একা উপার্জন করবে এটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। জানি না আমি এখন কি করব। তবে একজন তারকার স্ত্রী হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে নিজের সম্মান নিয়ে থাকব।’
আলিয়ার দাবি তিনি সবসময় নওয়াজের পাবলিক ইমেজের কথা ভেবেছেন কিন্তু বিনিময়ে এই অভিনেতা তাকে হেয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘নওয়াজ আমাকে সবসময় বলত, আমি কিছু পারি না। কিভাবে কথা বলতে হয় শিখিনি, এজন্য আমাকে সবার সামনে নিয়ে যায় না। আমি কথা বলতে চাই না, কিন্তু নিজের স্ত্রীকে কি কেউ এভাবে অসম্মান করে? কিছুদিন আগে আমার প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে। সবকিছু দুঃস্বপ্ন ভেবে আমার জীবন থেকে মুছে ফেলতে চাই।