কুড়িগ্রামে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্রের অধিকাংশ চরে উঠতি আউস ও বোরো ধান, কাউন, চিনা, পাটসহ অন্যান্য ফসল ডুবে গেছে। অসময়ের ঢলে হতভম্ব কৃষকরা বাধ্য হয়ে আধা পাকা ধান কাটছেন। এছাড়া বন্যার শঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন চরবাসী।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জেলার ১৬টি নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। এতে সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের দুধকুমার নদের পূর্ব পাড়ে আলোরচর, চর রাউলিয়া, রসুলপুর, যাত্রাপুর ইউনিয়নের রলাকাটা, খাসের চর, গোয়ালপুরি, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের আইরমারী, মশালের চর, নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীর চর, চর কাফনা, কালিগঞ্জ ইউনিয়নের কাঠগিরা, চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুরের দুই শতাধিক ছোট-বড় চরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আধা পাকা বোরো ধানের ক্ষেত ডুবে যাচ্ছে। কৃষকরা বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যরা মিলে কোমর পানিতে নেমে কাঁচা-পাকা ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় চর গোয়ালপুর, রলাকাটা ও খাসের চরে গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র ভারত থেকে এই এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেছে। ফুলে ফেপে উঠেছে নদ। গোয়ালপুরি চরের জেলে মো. আলম জানান, নদীতে মাছ মারি কোনো রকমে সংসার চালান তিনি। দেড় বিঘা জমিতে বোরো ধান-২৯ আবাদ করেছিলেন। সব ডুবে গেছে।’
মশালের চরের কৃষক মুসা মিয়া বলেন, ‘আমগোর চরের কৃষকগো ভরসা চিনার আবাদ। এবার চিনার ক্ষেত সব ডুইব্যা গেছে।’
চর যাত্রাপুরের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ জানান, একটার পর একটা চরে পানি উঠছে। পানি বাড়ার গতি দেখে মনে হচ্ছে এবার আগাম বন্যা হবে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, চরাঞ্চলের মানুষ দেরিতে ধান লাগায়, দেরিতে ধান কাটে। কিছু এলাকার ধান তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি সম্পর্কে মাঠকর্মীদের মাধ্যমে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতির তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলে, আগাম বন্যার লক্ষণ নেই। ভারী বর্ষণের কারণে নদ-নদীতে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা কমতে শুরু করবে।