স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের বড় চারিগাঁও মৌজায় সরকারি রাস্তা সংলগ্ন পানি প্রবাহের খাল ভরাটের প্রতিযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। কালিগঙ্গাঁর শাখা নদী নূরালী গঙ্গাঁ থেকে উৎপত্তি হওয়া এ খালটি দাশেরহাটি-চারিগ্রাম হয়ে বালিয়াডাঙ্গি পর্যন্ত প্রবাহিত ছিল। বিগত সময়ে খালটির বিভিন্ন স্থানে ভরাট করে বসতবাড়ি, মার্কেট ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই। সর্বশেষ শনিবার (২২ আগস্ট) জনৈক হাজী আব্দুল মান্নান ওই খালের একটি বড় অংশে মাটি ভরাট শুরু করলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। স্থানীয় ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে ভরাটে দেয়া হয়েছে বাঁধা।
সরেজমিন মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৭ সাল থেকে খালটির চারিগ্রাম বাজারের পূর্বপাশ থেকে খাঁনপাড়া কবরস্থান হয়ে বালিয়াডাঙ্গী পর্যন্ত একাধিক স্থান দখল করা হয়েছে। শুরুতে দাশেরহাটি এলাকার বদু বেপারী পরবর্তীতে রুস্তম মাষ্টার, লিটন খান, অফেল মাষ্টার ও জগদীশ চন্দ্র ঘোষ খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেন।
খালটির পূর্ব পাশে মাটি ভরাট করে প্রবাহমান খালটির পানি আটকে দিয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তির মালিকানাধীন এএইচএম নামের একটি ইটভাটা। সর্বশেষ চারিগ্রামের মৃত নূরুল হকের পুত্র স্বর্ণ ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল মান্নান ওই খালের দক্ষিণ পাশে ৩৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে রাস্তা সংলগ্ন খালসহ মাটি ভরাট শুরু করেন। নূরালী গঙ্গায় বালু ভর্তি বড় বড় বুলগেট এনে পাইপ যোগে রাতারাতি বেশীর ভাগ ভরাট সম্পন্ন করেন। পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি ভরাট হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পাশাপাশি ফসলের ব্যপক ক্ষতির আশংকা করছেন আশপাশের গ্রামের মানুষ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে ইউনিয়ন ভূমি অফিস মাটি ভরাটে বাধা দেয়।
অভিযুক্ত হাজী আব্দুল মান্নান নিজের ক্রয়কৃত জমির সাথে সরকারি কিছু জায়গা ভরাটের কথা স্বীকার করে বলেন, এখানে একটি মাদরাসা নির্মাণ করা হবে। ভরাটকৃত সরকারি অংশে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হবে না বলেও তিনি জানান।
চারিগ্রাম ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারি কর্মকর্তা মোঃ খায়রুল বাশার বলেন, খাল ভরাট বন্ধে নোটিশ করা হয়েছে। সার্ভেয়ারের মাধ্যমে পরিমাপ করে দেখা গেছে, রাস্তার দক্ষিণ পাশে ২৬ ফুট প্রশস্ত সরকারি জায়গা ভরাট করা হয়েছে। সরকারি জায়গায় ভরাটকৃত মাটি অপসারণের জন্য বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা বলেন, ভরাটকৃত মাটি অপসারণসহ সরকারি জমি উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।