স্টাফ রিপোর্টার :
কারাবালার বিয়োগাত্মক ঘটনার সঙ্গে ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মিল খুঁজে পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুটো হত্যাকাণ্ডই ন্যায়ের পথে যারা থেকেছেন তাদের সঙ্গে ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ১৫ আগস্টের শহীদের স্মরণে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যদি আমরা ১৫ আগস্টের দিকে তাকাই…। আপনারা জানেন, আজ আশুরার দিন। সেদিন হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর নাতি ইমাম হোসেনকে কারবালার ময়দানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ, তারা ন্যায়ের পথে ছিল। ১৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের অদ্ভুত মিল আছে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিবিসিতে কর্নেল রশিদ, ফারুকের ইন্টারভিউ এবং বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকায় খবর বেরিয়েছিল যে, এই খুনিরা স্বীকার করেছিলেন, তাদের সঙ্গে জিয়াউর রহমান আছেন। জিয়াউর রহমানের কাছ থেকেই তারা সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছিলেন। আর সেই সঙ্গে বেইমানি করেছিলেন খন্দকার মোশতাক।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে খন্দকার মোশতাক যে সম্পূর্ণ জড়িত…। ১৫ আগস্টের পর মোশতাক নিজেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন এবং তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ছিলেন জিয়াউর রহমান। সে সময়ের সেনাপ্রধানকে সরিয়ে দিয়ে মোশতাক জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান বানান এবং বঙ্গভবনে যতদিন ছিলেন, জিয়া রহমান সেখানে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতেন, ওঠাবসা হতো, আলোচনা হতো।’
বাংলার মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু সারাজীবন নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনে আমরা একটানা দুই বছর বাবাকে কাছে পাইনি। যদি হিসাব করে দেখি, একটা বছর বাদ গেলে তার পরের বছরই তিনি কারাগারে। ঘরে না যত দেখা হয়েছে তার চেয়ে বেশি জেলগেটে দেখা করতে হয়েছে। তিনি তার জীবনে এত ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন কেন? বাংলাদেশের জনগণের জন্য।’
বঙ্গবন্ধু মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন, মানুষকে উন্নত জীবন দিতে চেয়েছিলেন, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাই কি তার অপরাধ ছিল? পাকিস্তান নামের যে রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল, সে রাষ্ট্রটি নির্মাণের প্রতিও তার অবদান ছিল। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছিলেন। সে সময় তাদের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু।’
‘কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই দেখা গেছে, বাঙালি শোষিত-নির্যাতিত-বঞ্চিত। বাংলাদেশের উপার্জিত অর্থ দিয়েই পশ্চিম পাকিস্তানের মরুভূমিতে ফুল ফোটানো হচ্ছে। আর আমাদের দেশের মানুষ দরিদ্র-বঞ্চিত-শোষিত থেকে যাচ্ছে। এই বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছিলেন,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।