স্টাফ রিপোর্টার:
চারটি পৌরসভায় কবরস্থান, শশ্মানঘাট, পাবলিক টয়লেট ও লেক উন্নয়নে সাড়ে ২৪ কোটি টাকার যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছে না পরিকল্পনা কমিশন।
জলবায়ু সহিঞ্চু নগর অবকাঠামামো উন্নয়নের মাধ্যমে পৌরসভাগুলোর নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করতে চায় সরকার। দেশের প্রত্যেকটি পৌরসভা সৌন্দর্যবর্ধন ও চিত্তবিনোদনের সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে পৌরসভার পরিবেশগত উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
এ লক্ষে ‘বরগুনা জেলার চারটি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পটির জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের পর চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এ প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করার জন্য কার্যপত্র তৈরি করেছে পরিকল্পনা কমিশন। কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পিইসি সভার জন্য কার্যপত্রে পরিকল্পনা কমিশনের সেক্টর ডিভিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পৌরসভাগুলোর, মাস্টার প্ল্যান রয়েছে কি না তা পিইসি সভাকে জানাতে হবে। যদি মাস্টার প্ল্যান থাকে তাহলে প্রস্তাবিত প্রকল্পের কার্যক্রমের সাথে প্ল্যান সংগতিপূর্ণ কি না তা সভায় আলোচনা করতে হবে।
প্রকল্পের আওতায় চারটি রোড রোলার ক্রয়ের জন্য তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ সকল সরঞ্জাম সাধারণত ঠিকাদারের মাধ্যমে সরবরাহ করে পূর্ত কাজ সম্পন্ন করা হয়। রোলার ক্রয়ের বিষয়টি সভায় আলোচনা করতে হবে। যদিও এ সকল যন্ত্রপাতির কোনো স্পেসিফিকেশন ডিপিপিতে উল্লেখ করা হয়নি, যা উল্লেখ করা প্রয়োজন।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় সরবরাহ ও সেবা খাতে দুই কোটি ৬২ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ব্যয়ের বিস্তারিত বিবরণ ডিপিপিতে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। রাজস্ব খাতে এ পরিমাণ অর্থ প্রাক্কলনের যৌক্তিকতা সভাকে জানাতে হবে।
কার্যপত্রে দেখা গেছে, পৌর উদ্যান উন্নয়ন বাবদ চার কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। কিন্তু পৌর উদ্যানের পরিমাপ উল্লেখ করা হয়নি। এ অঙ্গের ব্যয়ের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা যেতে পারে।
সড়ক বাতি উন্নয়ন বাবদ সাত কোটি টাকা, স্মৃতি কমপ্লেক্স উন্নয়ন বাবদ এক কোটি টাকা, চারটি কবরস্থান উন্নয়নে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা, তিনটি শশ্মানঘাট উন্নয়ন বাবদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, সাতটি পাবলিক টয়লেট উন্নয়ন বাবদ এক কোটি ৪০ লাখ টাকা, পাঁচটি লেক উন্নয়ন বাবদ ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ ব্যয়ের যৌক্তিকতা কি তা সভায় আলোচনা করতে হবে।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৩৫ কিলোমিটার বিটুমিনাস কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণে ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ১৮ কিলোমিটার আরসিসি রাস্তা নির্মাণে ২৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ১৮ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণে ২৭ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ সব অঙ্গে অধিক ব্যয় প্রাক্কলনের যৌক্তিকতা সভায় আলোচনা করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে উদ্যান উন্নয়ন, লেক উন্নয়ণ, কবরস্থান উন্নয়ণ, শশ্মানঘাট ইত্যাদি অঙ্গের প্রয়োজন আছে কি না তা সভায় আলোচনা করতে হবে।
মতামতে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পের ৯নং অনুচ্ছেদে পরামর্শক খাত প্রস্তাব করা না হলেও ডিপিপির ২২নং পৃষ্ঠায় পরামর্শক সেবা ক্রয় বাবদ এক কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।
একনেকের নির্দেশনা অনুযায়ি ২৫ কোটি টাকার বেশি প্রকল্প হলে সেটির সমীক্ষা করে তা ডিপিপিতে যুক্ত করতে হবে। সম্ভব্যতা সমীক্ষা করা হলে প্রকৃত কি কাজ করা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করা সম্ভব। ডিপিপির ক্রয় পরিকল্পনা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম) উল্লেখ করা হয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির পরিবর্তে উন্মুক্ত ক্রয় পদ্ধতি উল্লেখ করতে হবে।