1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

গণফোরামে আবারও উত্তেজনা

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৪১২ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

ঢাকা: করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে। দলটির একটি অংশ বর্ধিত সভা ডাকায় পাল্টা কমিটিও হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরেই দলটির মধ্যে বিবাদ চলছে।

জানা গেছে, দলটির বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও অধ্যাপক আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাবে বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) এই বর্ধিত সভায় দাওয়াত দিতে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান। এর একদিন পরই ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়ার নামে (একদিন আগের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর দিয়ে) একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘সকলের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখ শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের নামে আহুত কথিত বর্ধিত সভার সঙ্গে গণফোরামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ’

অ্যাডভোকেট সুব্রত বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া গণফোরামকে শেষ করে দিচ্ছেন। ১৮ মাস ধরে তিনি অফিসে আসেন না। কোনো কাজও করেন না। আমরা মিটিং ডাকতে বললে তাও ডাকেন না।

বর্ধিত সভা কে ডেকেছে জানতে চাইলে সুব্রত চৌধুরী বলেন, গত ১৮ মাস ধরে বললাম মিটিং দেন, এটা করেন ওটা করেন। তিনি (ড. রেজা কিবরিয়া) কিছুই করেন না, অফিসেও আসেন না। কমিটি ভেঙে দিল। তারপর কামাল সাহেবকে নিয়ে আহবায়ক কমিটি করলো। ইতোমধ্যেতো অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। এ অবস্থায় ১৪ মার্চ একটা বর্ধিত সভা করলাম। কামাল সাহেবকে বললাম সংগঠনের মধ্যে এসব জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। কিবরিয়াতো গঠনতন্ত্র মানে না। গঠনতন্ত্র ফেলে দেয়, বলে যে এরকম একশ’ গঠনতন্ত্র আমি নিজে করতে পারি। গুলশানের বাসায় ২/৩ জন করে ডেকে গ্রুপ করে।

তিনি বলেন, আমরা কামাল সাহেবকে বললাম, আপনি একটা উদ্যোগ নেন, গণফোরামকে বাঁচান। ১৪ মার্চ মন্টু ভাই, অধ্যাপক আবু সাইয়িদসহ বিভিন্ন জেলার অনেকে মিলে তাকে এটা বলেছিলাম। এরও আগে কেন্দ্রীয় কমিটির ৭০ জন সদস্য তাকে মিটিং ডাকতে বলেছিলাম। মোস্তাককে ২ নম্বর সহকারী সেক্রেটারি বানিয়েছিল। আমরা বললাম, সে সিনিয়র, সে হবে এক নম্বর। মেজর আমিন নামে একজনকে এক নম্বরে নিয়ে আসছিল। পরে আমরা প্রতিবাদ করাতে মোস্তাককে এক নম্বরে রাখা হয়। পরে সেই মোস্তাক তার সঙ্গে (রেজা কিবরিয়া) হাত মিলিয়ে ফেললো। যে ৭০ জন চিঠি দিলাম সেখানে মোস্তাকও ছিল। যাই হোক, মিটিং ডাকে না ডাকে না করতে করতে আমরা ওই (১৪মার্চ) মিটিংটা ডাকলাম। সেখানে আমাকে মুখপাত্র করা হলো। সেই চিঠি আমরা ১৪ মার্চ কামাল সাহেবকে দিয়েছি। কিবরিয়া অসাংগঠনিক কাজ করেছে। বাইরের লোক এনে প্রেসিডিয়াম মেম্বার বানায়। কাউকে ওপরে তোলে কাউকে নিচে ফেলে। কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং ডাকে না। সবকিছু মিটিংয়ে পাস করতে হয়। এগুলো করে না। মোস্তাককে দিয়ে আবার চারজনকে সে বহিষ্কার করে। পুরা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজগুলো করতে থাকে। যাদের বহিষ্কার করেছে তাদের ৪০/৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবন। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে। কামাল সাহেবকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। উনিতো কিবরিয়া প্রেমে মজে গেছেন। এর মধ্যে ৩০ আগস্ট আমরা চারজন দেখা করলাম (ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে)। স্যারকে বললাম, স্যার এ পর্যায়ে আপনি কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না। তিনি বললেন, কেন নেব না। ইত্যাদি ইত্যাদি।

ড. কামাল হোসেন-রেজা কিবরিয়ার পাঠানো মেইলের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ওনারা চিঠি দিয়ে বলেছেন এই মিটিংয়ের সঙ্গে ওনাদের কোনো সম্পর্ক নেই, সেটাতো? ভালইতো, আমরাতো বলিনি, যে ওনাদের সম্পর্ক আছে। ১৪ মার্চের ধারাবাহিকতায় এই মিটিং। আমরাতো বলিনি কিবরিয়ার সংশ্লিষ্টতা আছে। কারণ উনিতো ১৮ মাসে দলটাকে জিরোতে নামিয়ে ফেলেছেন।

মিটিংয়ে ড. কামাল হোসেনকে দাওয়াত দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাওয়াত দিছি, দেখাও করেছি। সোমবার আমি বাসায় গিয়েছিলাম, কথা হয়েছে। তিনি বললেন, আসবেন। তার মধ্যে আবার দেখি সোমবারের তারিখ দিয়ে মঙ্গলবার প্রেস রিলিজ পাঠিয়েছে। তার মানে কি, আগেই রেডি ছিল। আমাকে বললো মীমাংসা করবে। পাল্টাপাল্টির দরকার নেই। মানে আমাদের সাথে যখন বলে খুব ভাল। আবার ওরা গিয়ে যখন বলে…, আসলে বয়স হয়ে গেছেতো, মনে রাখতেও পারে না।

পাল্টা কমিটি করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কী করবো সেটা ২৬ তারিখের মিটিংয়ের পরে বোঝা যাবে।

কমিটি রেডি আছে কি না, এমন প্রশ্নে হেসে দিয়ে সুব্রত চৌধুরী বলেন, আপনারাতো অনেক রকম প্রশ্ন করতে পারেন। তবে আমরা গণফোরাম করবো নাকি অন্য কিছু করবো সেটা ২৬ তারিখেই বলবে।

জানতে চাইলে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, সুব্রত চৌধুরী ও সাবেক সেক্রেটারি মোস্তফা মহসীন মন্টু মিটিং ডেকেছেন। তাদেরতো মিটিং ডাকার রাইট নেই। সেক্রেটারি ছাড়া কেউ মিটিং ডাকতে পারে না। এমনিতেই আমরা করোনা ভাইরাসের কারণে কোনো মিটিং ডাকছি না। আপনারা বুঝতে পারছেন কি না জানি না, তবে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আগামী জুন পর্যন্ত এটা থাকবে। এক মাসে করোনা শেষ হচ্ছে না। তারা মিটিং ডাকছে এগুলো সবই অবৈধ। গঠনতন্ত্রে সেক্রেটারি ছাড়া কেউ মিটিং ডাকতে পারে না। আমি করোনা ভাইরাসের জন্যে কোনো মিটিং ডাকছি না। তাদের ছোট একটা গ্রুপ এটা করছে। এটা কোনো সিরিয়াস ব্যাপার না।

আপনার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেটা ঠিক আছে। আমি মিটিং ডাকি না, কিছু করি না, এসব অভিযোগ চেজ করতে রাজি আছি। আমি করোনার মধ্যে কোনো মিটিং ডাকবো না। আমি তাদের বুদ্ধিতে চলি না। আমি জানি এখন বড় একটা মিটিং ডাকা দেশ ও দলের জন্য ক্ষতিকর।

তিনি বলেন, সুব্রত চৌধুরী, মন্টু, আবু সাইয়িদসহ অনেক সিনিয়র নেতা বসেছিলাম। সেই বৈঠকে আমাদের সিনিয়র নেতা মফিজ কামালের প্রস্তাবে কমিটি ভেঙে আহবায়ক কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটিতে সুব্রত চৌধুরী ও মন্টু নেই।

যাকে তাকে এনে আপনি দলের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বানান এমন অভিযোগের জবাবে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, যাকে তাকে বলতে একজন আর একজনকে পছন্দ নাও করতে পারেন। তবে আগে যেভাবে হয়েছে সেভাবে এখন হয় না। ব্যাপার হলো, কেন্দ্রীয় কিছু নেতা ভাবতো, তারাই দলের সবকিছু। ড. কামাল হোসেনের অফিসে বসে তারা সব ঠিক করতো। কিন্তু জেলার নেতা আছে ২৬ বছরের সিনিয়র অ্যাডভোকেট। বরিশাল বার, ময়মনসিংহ বারের প্রেসিডেন্ট তাদেরকে জুনিয়র নেতা বানিয়ে রেখেছে। আমরা বলেছি তারাও আমাদের সিনিয়রদের অংশ। আমি দুতিনজনকে এনেছি, তার মধ্যে একজন হয়তো বিতর্কিত। বাকি যারা এসেছে সবাই দলের পুরনো লোক। সেলিম আকবর দলের পুরোনো প্রথম থেকে আছে। তাকে জুনিয়র নেতা বানিয়ে রেখেছিল, কিন্তু চাঁদপুরে তার বেশ প্রভাব আছে। আমি যাদেরকে এনেছি কেউ সিনিয়র নেতা, অ্যাডভোকেট তাদেরকে আগে কেউ ঢাকায় পাত্তা দেয়নি। জাতীয় একটা দল হতে হলে জেলা নেতাদের সম্মানজনক পদে রাখতে হবে। আমার এই চিন্তা। ঢাকা মতিঝিলে বসে দল করা যায়, কিন্তু সেই দল ক্ষমতায় যাবে বা জনগণের কাছে যাবে সেটা আমি বিশ্বাস করি না।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে সবারই পছন্দ আছে। কেউ যদি ড. কামাল হোসেন-রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্ব পছন্দ না করে মন্টু-সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্ব পছন্দ করে সেটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে তারা দলটাকে যে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে এটা ঠিক না, এটাতে আপত্তি জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury