রেল স্টেশনের বেঞ্চে বসে আছেন অপূর্ব। পাশেই ব্যাগ রাখা। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু তার সামনের প্ল্যাটফর্মে উপচে পড়েছে মানুষ। প্রিয় শিল্পীকে এক ঝলক দেখার জন্যই ভিড় করেছেন তারা।
পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত ‘ভাগ্যক্রম’ নাটকের শুটিংয়ের বিহাইন্ড দ্য সিন এটি। অপূর্ব তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এমন একাধিক ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
এ নাটকে অপূর্বর বিপরীতে অভিনয় করছেন মেহজাবিন চৌধুরী। একসঙ্গে ছোট পর্দার দুই হার্টথ্রব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে সামনে থেকে দেখার লোভ সামাল দিতে পারেননি স্থানীয় মানুষ। এক পর্যায়ে তাদের সামাল দিতে পুলিশের সহযোগিতা নেন নির্মাতা। কিশোরগঞ্জ সদর রেল স্টেশনে গত সপ্তাহে নাটকটির শুটিং চলাকালে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
এদিকে করোনার এই সংকটে একসঙ্গে এত মানুষের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে ভয়ের বিষয় বলে নেটিজেনরা মনে করছেন। রাশেদা খানম নামে একজন মন্তব্য করেছেন: ‘অপূর্ব, একজন পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলছি- এ ধরনের ক্রাউডেড এলাকায় এই কঠিন সময়ে শুটিং না করতে। জানি না পরিচালক কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা এড়ানো উচিত। তোমার জন্য শুভকামনা রইল, নিরাপদ ও সুস্থ থাকো।’
স্নিগ্ধা প্রামাণিক লিখেছেন: ‘শুটিং স্পটে এতটা উদাসীনতা বোধকরি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। সমস্যা কোথায়? পুরো টিমের উদ্দেশ্যে বার্তা- মাস্ক ব্যবহার করুন ও সতর্ক থাকুন।
এ বিষয়ে কথা বলতে নাটকটির পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এই নির্মাতা বলেন, ‘নাটকের গল্পের ৭০ ভাগ রেল স্টেশনের। বাকিটুকু ট্রেনে। পুরো গল্পটি রেলস্টেশন ও ট্রেনে। যে কারণে শহর ছেড়ে কিশোরগঞ্জে শুটিংয়ের জন্য আসি। এখানে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের অনেক লোকজন ছিলেন। র্যাব, পুলিশ ও ডিবির প্রায় শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সবাই অনেক সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সবার উপরে তো জনগণ। স্থানীয় মানুষজনই বলছিলেন— এখানে পুরো কিশোরগঞ্জ চলে এসেছে!
উপস্থিত মানুষের উন্মাদনার কথা ব্যাখ্যা করে আরিয়ান বলেন, ‘এমনও দেখেছি সকালে এসেছে, তারপর মানুষগুলো সারাদিন থেকেছে। আবার রাতে রেলস্টেশনেই ঘুমিয়েছে। কারণ একটাই- পরের দিন আবার মেহজাবিন-অপূর্ব ভাইকে দেখবে! এরকম অনেক মানুষ ছিল। এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। অপূর্ব-মেহজাবিনকে ভালোবাসে কিংবা আমার কাজ পছন্দ করে বলেই মানুষ দেখতে এসেছে। কিন্তু আমরা চাইনি এমন হোক। মানুষের ভিড় যাতে না হয় সেজন্য চারদিক ঘিরে ফেলারও চেষ্টা করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি।
নাটকটির আরো দুই দিনের শুটিং বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা। এটি চ্যানেল আইয়ের নিজস্ব প্রোডাকশন।