জয়পুরহাট জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পসহ ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৫২৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবনের থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘যশোর, সৈয়দপুর ও শাহ মখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহীর রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দু’টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প ও ‘মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে বৃহত্তর দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলায় সেচ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় একনেক সভায় অংশ নিতে পারেননি। ফলে একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন করেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।
তিনি জানান, অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি নতুন এবং একটি সংশোধিত প্রকল্প।
আজকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর তথ্য তুলে ধরে আসাদুল ইসলাম জানান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও শাহ মখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহীর রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ’ প্রকল্প ৫৬৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা খরচে বাস্তবায়ন করা হবে। তার মধ্যে ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ দেবে সরকার এবং ১১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পে খরচ হবে ৩০১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। তার মধ্যে সরকার দেবে ২৭১ কোটি ১৯ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
আর একই মন্ত্রণালয়ের ‘মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী আনা হয়েছে একনেকে। এতে প্রকল্পের খরচ ৫৪৯ কোটি ৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫৬০ কোটি ১৫ লাখ থেকে করা হয়েছে ২ হাজার ১০৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া প্রকল্প ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আজকের সংশোধনীতে ১ বছর সময় বাড়িয়ে তা করা হয়েছে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।
সবশেষ ও চতুর্থ অনুমোদিত প্রকল্পটি হলো কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে বৃহত্তর দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলায় সেচ সম্প্রসারণ’। ২৫১ কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচে এ প্রকল্প ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।