1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন

৯ মাসে বন্দি বঙ্গবন্ধুর ওজন কমেছিল ৪০ পাউন্ড: শেখ হাসিনা

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৪৩১ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের হাতে চরম নির্যাতনের শিকার বন্দি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুতর স্বাস্থ্যের অবনতির কথা স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অত্যাচার-নির্যাতনে তিনি (বঙ্গবন্ধু) শুকিয়ে যান, ৪০ পাউন্ড ওজন কমে যায়।

রোববার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন শেখ হাসিনা।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বন্দি শেখ মুজিবের ওপর পাকিস্তানীদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘ নয়টা মাস যে কারাগারে ছিলেন সেখানে তার ওপর যে অত্যাচার, নির্যাতন, আপনারা লক্ষ্য করবেন শুকিয়ে কি রকম দড়ি দড়ি হয়ে যান। ৪০ পাউন্ড ওজন তার কমে যায়। ‘

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, এই দেশটাকে স্বাধীন করার জন্য জাতির পিতা যেদিন থেকে পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল সেদিক থেকেই তিনি সংগ্রাম শুরু করেন।

তিনি বলেন, এই সংগ্রাম করতে গিয়ে জাতির পিতাকে বার বার নির্যাতনের শিকার হতে হয়, কারাগারে বন্দী হতে হয়। একটা মানুষ তার জীবনের সব কিছু ত্যাগ করেছিলেন একটি জাতিকে তার আত্ম-পরিচয়ের ঠিকানা দেওয়ার জন্য, একটি রাষ্ট্র দেওয়ার জন্য। পাকিস্তান আন্দোলনেও কিন্তু তার অবদান রয়েছে। কিন্তু সে পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই তিনি দেখলেন- যেটা তার কথা ছিল এদের সঙ্গে থাকা যাবে না। অর্থাৎ বাঙালিকে আলাদা একটা রাষ্ট্র গঠন করতে হবে, আলাদা একটা জাতি সত্ত্বা হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনে কারাবাসের ইতিহাস তুলে ধরেন।

ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কারাবন্দী হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই ভাষা আন্দোলন থেকে তিনি বার বার গ্রেফতার হতে শুরু করেন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা দিবস হিসেবে পালন করবার জন্য ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে সে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং সেই দিন তিনি গ্রেফতার হন। ১৫ই মার্চ তিনি মুক্তি পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর কারাবাসের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের যত দুস্থ মানুষ তাদের কথা তিনি চিন্তা করতেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির আন্দোলনকে সমর্থন করতে গিয়ে তিনি আবার গ্রেফতার হন ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল। ভিসির বাড়ির সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে তিনি ২৬ জুন মুক্তি পান ১৯৪৯ সালে।

পরবর্তীতে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে জাতির পিতার কারাবন্দী হওয়ার ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

তিনি বলেন, এরপর গোপালগঞ্জে আবার তিনি বন্দী হন, ১৯ জুলাই ১৯৪৯; কিন্তু ওই দিন একই দিন তাকে আবার জামিন দেওয়া হয়। এরপর তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় ফিরে এসে একদিকে ভাষা আন্দোলন, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের আন্দোলন, সেই আন্দোলন তিনি আবার শুরু করেন। আপনারা জানেন সেই সময় লিয়াকত আলী খানের ঢাকায় আসার কথা ছিল তখন ভুখা মিছিল করা হয়, জন সভা করা হয়। সেই সময় আবার তিনি বন্দী হন।

‘৪৯ সালের ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ তিনি গ্রেফতার হন মোঘলটুলী থেকে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি, ৫২ সালে মুক্তি পান। দীর্ঘ সময় পর তিনি মুক্তি পান। কিন্তু ওই সময় বন্দী থাকা অবস্থায় কারাগারে থেকে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ভাষা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সমস্ত নির্দেশনা দেওয়া সেই কাজগুলো তিনি বন্দীখানায় বসেই করেন। এরপর অনশন ধর্মঘট করেন তারপর তিনি ২৭ ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পেয়েছিলেন। ‘

৫৪ সালের নির্বাচনের পর বঙ্গবন্ধুর আবারও বন্দী হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৫৪ সালে নির্বাচন সেই নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে। সেখানেও তার একটা ভূমিকা ছিল। ৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে সেখানে তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন।  সেই মন্ত্রিত্ব বেশি দিন টেকেনি। কারণ বাঙালিরা কখনো ক্ষমতায় থাকুক সেটা কেউ চায়নি। ৫৪ সালের ৩০ শে এপ্রিল আবার তিনি বন্দী হন এবং ১৮ই ডিসেম্বর তিনি মুক্তি পান। ‘

‘তারপর আবার ৫৫ সালে ন্যাশনাল এসেম্বলির মেম্বার হন ইলেকশন করে, ৫৪ সালে তিনি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন,  ৫৬ সালে তিনি মন্ত্রী হন। কিন্তু ৫৭ সালে তিনি মন্ত্রিত্ব গড়ে তোলেন সংগঠন গড়ে তোলার জন্য। ‘

সংগঠন গড়তে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার কথা উল্লেখ করে তার কন্যা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ৪৯ সালে গড়ে উঠেছিল তার সভাপতি ছিলেন মাওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক সাহেব এবং বঙ্গবন্ধুকে বানানো হয়েছিল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; কিন্তু শামসুল হক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন পরবর্তীতে। ৫৭ সালে তাকে যখন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন তিনি মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে সংগঠন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে বোধ হয় একজনই যিনি মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করেছিলেন সংগঠন গড়ে তোলার জন্য সেটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ‘

৫৮ ও ৫৯ সালে বঙ্গবন্ধুর বেশ কয়েকবার বন্দী হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৫৮ সালে ৭ই অক্টোবর আউয়্যুব খান মার্শাল ল জারি করে। ১১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং সরকারি হিসেবে ১২ তারিখে তাকে গ্রেফতার দেখায়। সব সময় নিয়ে যেতো একদিন পরই দেখানো হতো। সেগুণ বাগিচায় আমরা ছিলাম, তিনি টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।  সেই সময় তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়; দলের তিনি সাধারণ সম্পাদক আর তারপরেই দীর্ঘদিন তিনি কারাগারে। এরপর তিনি মুক্তি পান ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখে, সেটা ৫৯ সালে। অর্থাৎ ৫৮ সালে তাকে যে গ্রেফতার করা হয়, প্রায় ১৪ মাস তিনি কারাগারে বন্দী। ‘

‘তার মধ্যে ১৫টা মামলা দেওয়া হয়, দুর্নীতির মামলা, নানা ধরনের মামলা। দুর্নীতির কোন প্রমাণ পাকিস্তান সরকার করতে পারেনি। তিনি সব কিছু থেকে মুক্তি পান এবং কোর্টে … পরে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ, ৫৯ সালে। ‘

আলফা কোম্পানিতে চাকুরী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন রাজনীতি বন্ধ ছিল, ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু নিষিদ্ধ থাকা অবস্থাও তিনি কিন্তু যেকোন ভাবেই হোক… তিনি আলফা ইন্সুরেন্সে চাকরী নেন। এই চাকুরীর সুবাধে তিনি সারা বাংলাদেশে ভ্রমণ করার এবং তখন যেহেতু রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ, ছাত্রদের দিয়ে তিনি, ছাত্রলীগকে দিয়ে সংগঠন করা এবং নিজেদের রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনার ব্যাপক প্রচার করার কাজ তিনি করেছিলেন। ‘

৬২ সালের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘৬২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখে তিনি আবার গ্রেফতার হন। এরপর ১৮ই জুলাই ৬২ সালে তিনি মুক্তি পান। তখন ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

৬৪ সালে বঙ্গবন্ধুর কয়েকবার বন্দী হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর ১৯৬৪ সালের মে মাসের ৩১ তারিখে আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে। মে মাসের ঐ দিনই কারাগার থেকে মুক্তি পান। ২ হাজার টাকা জামিন দিয়ে তিনি মুক্তি পান। এরপর আবার জুন মাসের ৩ তারিখে গ্রেফতার করে ৬৪ সালে। আবার একই দিনে সেভাবে জামিন পান এবং মুক্তি পান। এরপর নভেম্বর মাসের ৭ তারিখ ১৯৬৪ সালে আবার গ্রেফতার হন, আবার একই দিনে জামিন পেয়ে মুক্তি পান।  তখন যেহেতু দল করা নিষিদ্ধ ছিল… আন্দোলন গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন  সেই জন্য বার বার তাকেই গ্রেফতার করা হয়। ‘

‘এরপর ১৯৬৬ সালের ২৮ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করা হয়। আবার সেই একই দিনে জামিনে মুক্তি পান। তিনি একটা বক্তব্য দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা হতো, তাকে বন্দী করা হতো, আবার তিনি জামিনে মুক্তি পেতেন। ‘

৬ দফার পক্ষে জনমত ও আন্দোলন গড়ে তুলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর বার বার বন্দী হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর ৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ তিনি ৬ দফা দিলেন। ৬ দফা দেওয়ার পরই আবার তাকে গ্রেফতার করা হলো ১৮ই এপ্রিল ৬৬ সালে যশোরে তার বক্তৃতা- তখন যশোর, খুলনা,  চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, যখন যেখানে গেছেন, যেখানে বক্তৃতা দিয়েছেন সেখানেই একটা মামলা হয়েছে। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গেছেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবার তিনি জামিন পেয়েছেন। আবার সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে আবার আরেক জায়গায় গেছেন সেখানে আবার বন্দী।  ১৮ই এপ্রিল গ্রেফতার মুক্তি পেয়েছেন, আবার ২৪ এপ্রিল গ্রেফতার হয়েছেন জামিন পেয়েছেন, ৯ই মে গ্রেফতার হয়েছেন, এভাবে যেখানে গেছেন বার বার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ‘

‘৬৬ সালের মে মাসের ৮ তারিখে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আর ৯ তারিখে গ্রেফতার দেখানো হয়।  কারণ সরকারি হিসেবে ৯ তারিখ আছে। এরপর তাকে আর মুক্তি দেয়নি। কারাগারে রেখেই একের পর এক মামলা দিতে থাকে এবং ৬ দফার বিরুদ্ধেই তাদের যত রাগ ছিল। ‘

৬ দফা তৈরির ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৬ দফা তিনি নিজের চিন্তা থেকে এটা তৈরি করেছিলেন, আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানির অফিসে বসে তিনি এটা চিন্তা করতেন এবং আমাদের ঢাকা মহানগরীর হানিফ ভাই তিনি এটা টাইফ করতেন। তাকে দিয়ে এটা টাইফ করাতো। এভাবে ৬ দফা তৈরি করেন এবং সেই ৬ দফা  পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো একটা সম্মিলিত সম্মেলন হয় সেখানে তিনি এটা পেশ করতে যান এবং এটা তারা  গ্রহণ করে না। ‘

‘সেখানে সংক্ষিপ্ত সার বলেন, ঢাকায় এসে এটা প্রচার করেন। তারপর তাকে যে গ্রেফতার করা হয় তাকে আর মুক্তি দেওয়া হয়নি। এরপর জানুয়ারি মাসের ১৭ তারিখে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, মানে মুক্তি নামে প্রহসন। সেই জেলগেট থেকে বন্দী করে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে গিয়ে  সেখানে বন্দী করা হয়। তারপর আপনারা জানেন যে সেই তথাকথিত আগরতলা মামলা। দেশদ্রোহী একটা মামলা দিয়ে তাকে শাস্তি দেওয়া চেষ্টা করা হয়। ‘

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে বাংলাদেশের জনগণ, ছাত্র সমাজ এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব যার ফলে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২২ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে তিনি মুক্তি পান। এরপর ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।  সেই ৬ দফার ভিত্তিতেই নির্বাচনটা হয়। ‘

৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০ দলীয় একটা জোট করেছিলো তখন পাকিস্তানি সরকার এবং তাদের ধারণা ছিল আওয়ামী লীগ কোন মতেই সংখ্যা ঘনিষ্ঠতা পাবে না। কিন্তু সমগ্র পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ। যেটা তাদের চিন্তারও বাইরে ছিল। ‘

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে গেরিলা যুদ্ধের নির্দেশনা ছিল উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ, যে ভাষণে তিনি ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বলেছিলেন। যে ভাষণে তিনি বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম; যে ভাষণে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। এইযে নির্দেশনাগুলো একটা গেরিলা যুদ্ধের একটা প্রস্তুতি গ্রহণ করা। এটাই ছিল নির্দেশিকা। ‘

বন্দী হওয়ার আগ মূহুর্ত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘…সেই ঘোষণা দিয়ে তিনি নির্দেশনা দেন। তিনি সমগ্র বাংলাদেশে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দলীয় নেতাকর্মীরা কিন্তু সেই সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলে। ইপিআরের ওয়ারলেসের মাধ্যমে তিনি বার্তাটা পৌঁছে দেন। পুলিশের ওয়ারলেসে প্রত্যেকটা থানায় থানায় সেটা গ্রহণ করে তারা এটা প্রচার করে দেয়। টেলিগ্রামের মাধ্যমে এটা পৌঁছে যায়। আওয়ামী লীগের নেতা চোঙা ফুঁকিয়ে বা রিক্সায় করে এটা প্রচার শুরু করে দেয়। এদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ শুরু করে বাঙালিরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তারপরই আমাদের যুদ্ধের শুরু। ‘

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের কাছে না গিয়ে আগে জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বন্দী খানা থেকে চলে যান লন্ডন; সেখানে প্রেস কনফারেন্স করেন, প্রাইমমিনিস্টারের সঙ্গে দেখা করেন। আমাদের প্রবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সেখান থেকে তিনি দিল্লী হয়ে আসেন। দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং তাদের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তারপর তিনি ঢাকায় আসেন। সেখান থেকে তিনি সরাসরি রেইসকোর্স ময়দানে চলে যান। তার যে ভাষণ দিলেন একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পরিচালনার সমস্ত দিকনির্দেশনা ওই ভাষণে আছে। ‘

‘তিনি যখন মুক্তি পেলেন এবং ফিরে এলেন বাংলার মাটিতে। আপনারা দেখেন আমি একজন পরিবারের সদস্য হিসেবে এইটুকু বলবো আমার আব্বা কিন্তু আমাদের কাছে আসেন নাই। তিনি পরিবারের কাছে না জনগণের কাছে আগে গিয়েছিলেন। বাংলার মানুষকে তিনি সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন সেই মানুষের কাছেই আগে ছুটে গিয়েছিলেন। ‘

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজন মানুষ একটা জাতির প্রতি, মানুষের প্রতি কতটা নিবেদিত হলে পরে, মানুষকে কতটা ভালবাসতে পারলে এই ভাবে আত্মত্যাগ করতে পারে; এই ভাবে মানুষের কথা বলতে পারে। ৭ই মার্চের ভাষণ, ১০ জানুয়ারির ভাষণ। আমি মনে করি আমাদের সকলের এই ভাষণগুলো শোনা উচিত, নতুন প্রজন্মের শোনা উচিত। তাহলে রাজনীতি করার একটা প্রেরণা, দিক নির্দেশনা পাবে। ‘

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শেখ বজলুর রহমান, আবু আহমেদ মান্নাফী, এসএম মান্নান কচি ও হুমায়ুন কবির। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury