1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ অপরাহ্ন

ঘরের যেসব জিনিসে বেশি জীবাণু থাকে

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৫৩০ বার দেখা হয়েছে

যেভাবেই হোক, আমাদের মনে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে টয়লেট সিটের চেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া (জীবাণু) ঘরের আর কোথাও থাকতে পারে না। আসলে আমরা যেমনটা ভাবছি, গবেষকরা তেমনটা বলছেন না। হ্যাঁ, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, টয়লেট সিটে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরে এমনকিছু জিনিস রয়েছে যেখানে টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান। প্রায়সময় টয়লেট সিট শুষ্ক থাকে বলে ও নিয়মিত পরিষ্কার করার কারণে ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধির সুযোগ কম পায় (প্রতিনিয়ত ভেজা ও অপরিষ্কার টয়লেট সিটের ক্ষেত্রে একথা প্রযোজ্য নয়)। এখানে টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে জিনিসপত্রের তালিকা দেয়া হলো।

* কাটিং বোর্ড: ইউনিভার্সিটি অব আরিজোনার মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও গৃহস্থালি জিনিসপাতিতে ব্যাকটেরিয়া দূষণ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার অন্যতম গবেষক চার্লস জেবরা বলেন, ‘গড় কাটিং বোর্ডে টয়লেট সিটের চেয়ে ২০০ গুণ বেশি ফেকাল ব্যাকটেরিয়া (মলের ব্যাকটেরিয়া) থাকে।’ এর বড় কারণ হলো কাঁচা মাংস (প্রাণীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ফেকাল ব্যাকটেরিয়া থাকে)। কাটিং বোর্ডে যে প্রাণীর মাংসই কাটেন না কেন, কিছু না কিছু ব্যাকটেরিয়া লেগে থাকে। তাই ব্যাকটেরিয়া দূষণ দূর করতে মাংস কাটার পর কাটিং বোর্ডকে জীবাণুনাশক তরলে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

* পোষা প্রাণীর খাবারের বাটি: অলাভজনক সংস্থা এনএসএফ ইন্টারন্যাশনালের (জিনিসপত্র পরীক্ষা করে ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যমান নির্ধারণ করে) গবেষণা অনুসারে, আপনার পোষা কুকুর বা বিড়ালকে যে পাত্রে খেতে দেন তা হলো ঘরের সবচেয়ে জীবাণুযুক্ত জিনিসগুলোর একটি। আপনার কুকুর একটা টয়লেট সিটটকে লেহন করলে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ২৯৫ ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসবে, কিন্তু এটি তার অপরিষ্কৃত খাবারের বাটিকে লেহন করলে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ২,১১০ ব্যাকটেরিয়া মুখে চলে আসবে। তাই আপনার পোষা প্রাণীকে সুস্থ রাখতে খাওয়ানোর পর খাবারের বাটিকে গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

* ওয়াশিং মেশিন: আন্ডারওয়্যার থেকে ওয়াশিং মেশিনে লক্ষ লক্ষ ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া (ডায়রিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া) স্থানান্তর হতে পারে। একারণে আন্ডারওয়্যার ওয়াশিং মেশিনের সংস্পর্শে আসলে যন্ত্রটিও ব্যাকটেরিয়ার ব্রিডিং গ্রাউন্ড (বংশবৃদ্ধির স্থান) হয়ে যায়। ফ্রন্টিয়ারস ইন মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়াশিং মেশিনের ব্যাকটেরিয়া অন্যান্য কাপড়েও ছড়িয়ে পড়ে। ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশারে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেশি, কারণ তলাতে যে পানি থেকে যায় তা ব্যাকটেরিয়ার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। সাধারণত টয়লেট সিট শুষ্ক থাকে বলে ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধির সুযোগ পায় না। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) প্রতিমাসে একবার ব্লিচ দিয়ে ওয়াশিং মেশিনকে জীবাণুমুক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছে। এর পাশাপাশি যেখানে আধোয়া কাপড় রাখেন সেটাও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া জীবাণুর বিস্তার এড়াতে আন্ডারওয়্যারকে গরম পানি ও কালার-সেইফ ব্লিচ দিয়ে আলাদাভাবে ধোয়ার কথা ভাবুন।

* স্মার্টফোন: স্মার্টফোনের ব্যবহার দিনদিন বেড়েই চলেছে। আমাদের হাতে প্রায়সময় যে ডিভাইসটি থাকে তা হলো স্মার্টফোন। কিন্তু ডিভাইসটিতে যে কি পরিমাণে জীবাণু রয়েছে তা সম্পর্কে অনেকের ধারণাই নেই। ডা. জেরবা বলেন, ‘একটা ব্যবহৃত স্মার্টফোনে একটা টয়লেট সিটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি জীবাণু থাকতে পারে। ডিভাইসটি সবসময় জীবাণুর সংস্পর্শে আসছে। কেউ কেউ তো টয়লেটেও স্মার্টফোনে কথা বলেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘টয়লেটে জীবাণু থাকে বলে আমরা এটাকে ঘনঘন পরিষ্কার করলেও হাতে চালিত কিছু জিনিসকে জীবাণুমুক্ত করার কথা ভাবি না, যেমন- স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও রিমোট কন্ট্রোল। কিন্তু এসব জিনিসকেও ক্লিনিং রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’ স্ক্রিন ওয়াইপ অথবা অল্প ভেজা কাপড় দিয়ে ডিভাইসের স্ক্রিন মুছে নিলে জীবাণুর সংখ্যা কমে যাবে।

* কার্পেট: ব্যাকটেরিয়া আমাদের ত্বকের মৃতকোষ খেতে খুব ভালোবাসে। গড় মানুষের ত্বক থেকে প্রতিঘণ্টায় প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মৃতকোষ ঝরে পড়ে। আমরা ঘরে থাকলে এর বেশিরভাগই পড়ে কার্পেটের ওপর। এর সঙ্গে খাদ্যকণা, পোষা প্রাণীর ত্বকের মৃতকোষ, ফুলের রেণু ও অন্যান্য নোংরা যুক্ত হয়ে কার্পেটকে ব্যাকটেরিয়ার খাবারের আধার বানিয়ে ফেলে। কাজেই কার্পেটে যে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি কত বেশি হয় তা অকল্পনীয়। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যানগোন মেডিক্যাল সেন্টারের ইমিউনোলজিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও দ্য সিক্রেট লাইফ অব জার্মসের লেখক ফিলিপ এম. টিয়েরনো বলেন, ‘প্রতি বর্গ ইঞ্চি কার্পেটে প্রায় ২০০,০০০ ব্যাকটেরিয়া বাস করে (যা টয়লেট সিটের চেয়ে ৭০০ গুণ বেশি, যেমন- ই. কোলাই, স্ট্যাফাইলোকক্কাস ও স্যালমোনেলা।’ তাই নিয়মিত কার্পেট পরিষ্কার করা উচিত। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কার্পেটের তলা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না বলে বছরে অন্তত দু’বার ডিপ স্টিম ক্লিনিং করুন। সম্ভব হলে মেশিনে ধোয়া যায় এমন কার্পেট ব্যবহার করুন।

 

/মহিদ

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury