আধুনিক সময়ে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য আরও সহজ হয়েছে। শরীর সুস্থ রাখার নানা খুঁটিনাটি আমাদের জানা। আর তাইতো অতীতের তুলনায় বর্তমানের মানুষেরা আরও বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। এরই ধারাবাহিকতায় শরীর সুস্থ রাখতে আমরা অনেকেই হালকা নাস্তা হিসেবে কাজু বাদাম খেতে পছন্দ করি। কাজু বাদাম খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো- ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ফাইটোকেমিক্যালস, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি। কাজু বাদামের উপকারিতা নিয়ে লিখেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বিল্লাল হোসেন-
হৃদরোগ প্রতিরোধ করে
আমাদের দেশে হৃদরোগের কারণে প্রতি বছর অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে।। কাজুবাদামে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড যা শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর পরিমাণ কমিয়ে দেয় ও ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেকাংশে।
চোখ ভালো রাখে
যারা শহরে বসবাস করেন, ধুলোবালি ও দূষিত বাতাস তাদের জন্য পরিচিত এক সমস্যার নাম। এভাবে প্রতিদিন যদি চোখের ভেতরে ধুলো যেতে থাকে তবে খুব সহজেই চোখের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। তাই যারা ধুলোর রাজ্যে বসবাস করেন তাদের উচিত নিয়মিত কাজু বাদাম খাওয়া। কারণ কাজু বাদামে আছে জিয়াজ্যানথিন নাম একটি পিগমেন্ট যা আপনার চোখের রেটিনাতে একটি আবরণ তৈরি করে চোখকে ধুলোবালি ও আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। এছাড়া এটি ম্যাকুলার ডিজেনেরেশন নামক চোখের রোগ প্রতিরোধ করে।
অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে
এতে উপস্থিত কপার অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা নামক রোগ প্রতিরোধ করে। কপার একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি আমাদের শরীর থেকে ফ্রি র্যাডিকেল বের করে দেয় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে যেসব নারীর অ্যানেমিয়া আছে তাদের প্রতিদিন কাজু বাদাম খাওয়া উচিত।
ত্বক সুরক্ষিত রাখে
কাজু বাদামের তেলে রয়েছে সেলেনিয়াম, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস। যা আপনার ত্বককে দেবে দারুণ সুরক্ষা। তাছাড়া এতে উপস্থিত সেলেনিয়াম একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত কাজু বাদাম খেতে পারেন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
ওজন কমাতে কাজু বাদামের জুড়ি মেলা ভার। এতে উপস্থিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট বার্নিং করতে সাহায্য করে। কাজু বাদামে উপস্থিত ফাইবার ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়। তবে ওজন কমানোর জন্য কাজু বাদাম খেতে হবে কাঁচা ও লবণবিহীন ভাবে। আবার একবারে অনেকগুলো খেয়ে ফেলবেন না। প্রতিদিন একমুঠো বাদাম খেলেই যথেষ্ট।
চুল সুন্দর করে
সুন্দর চুল পেতে চান সবাই। সেজন্য খেতে হবে চুলের এমন কিছু খাবার যা চুল সুন্দর করে, ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। তেমনই একটি খাবার হলো কাজু। নিয়মিত এই বাদাম খেলে মিলবে সুস্থ ও সুন্দর চুল। কাজু বাদামে উপস্থিত কপার চুলের রঞ্জক পদার্থ মেলাটোনিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ফলে চুল হয় মসৃণ ও স্বাস্থ্যবান।
/মহিদ