গ্রেফতার হেফাজত নেতাদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশি সাপ্তাহিক গণমাধ্যম ব্লিটজ জানায়, খেলাফতপন্থী হেফাজতে ইসলামের গ্রেফতার হওয়া নেতারা জিজ্ঞাসাবাদে ‘রাবেতাত-উল-ওয়াইজিন’ নামে একটি সংগঠনের বিষয়ে জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী ইসলামিক ওয়াজ মাহফিল যারা করতেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হতো।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ওয়াজ মাহফিলগুলিতে চরম উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া হতো। আর এ ধরনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে আপলোড করা হলে সারাবিশ্বে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়তো।
আরো জানা গেছে, হেফাজতে ইসলাম পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতে বেশ কয়েকটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। পাশাপাশি হিজবুল মুজাহেদীনের মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে এদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
তদন্ত সূত্রের বরাতে ব্লিটজ আরো জানায়, রাবেতাত-উল-ওয়াইজিনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের ওয়াজ মাহফিলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং সেসব অনুষ্ঠানে বক্তৃতা হিসাবে হেফাজত সদস্যদের চাপ দেয়া।
ওয়াজ মাহফিলগুলিতে অংশ নেয়া এসব বক্তাদের উগ্র ইসলাম ও জঙ্গিবাদ প্রচার এবং ধর্মবিরোধের পাশাপাশি ভারতবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে ভালোভাবে অবহিত করত হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা। বক্তাদেরও ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি ও সংস্থার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মুল করারও দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। হেফাজতে ইসলামের প্রত্যক্ষ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের ওয়াজ মাহফিলরা এরই মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রচারের উৎসাহিত হয়ে উঠেন।
এছাড়া ইউটিউবে শত শত চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করে হেফাজতে ইসলাম। এর মাধ্যমে খিলাফতপন্থী সংগঠনটি ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদের উন্মাদনা ছড়িয়ে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়।
জানা গেছে, খিলাফতপন্থী সংগঠন এবং এর কর্মীরা প্রতিদিন ইউটিউব চ্যানেল থেকে কয়েক হাজার ডলার উপার্জন করছে। যা হেফাজতে ইসলামের সাইবার ইউনিটগুলির চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
হেফাজতে ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষত ফেসবুকের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাদরাসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে সাইবার যোদ্ধাদের একটি দল গঠন করেছে।
ব্লিটজের তথ্য অনুসারে, খেলাফতপন্থী গোষ্ঠীর হাই-কমান্ডের নির্দেশে ২০ থেকে ২৫ হাজার মাদরাসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমন্বিত প্রতিটি দল নিয়ে সাইবার যোদ্ধার বেশ কয়েকটি দল রয়েছে। এ সাইবার যোদ্ধাদের দায়বদ্ধতা হলো হেফাজতে ইসলাম বা এর নেতাদের বিরুদ্ধে পাওয়া যেকোনো পোস্টে মন্তব্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলিতে নজর রাখা।
এ অনুযায়ী হেফাজতের সাইবার যোদ্ধারা বেশিরভাগ পোস্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় রয়েছে। এটি হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে হোক আর ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে বা যেকোনো বিষয়েই হোক।