লিওনেল মেসি ৬১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন। কিন্তু ম্যাচের শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলা কালিয়ান এমবাপে পুষিয়ে দিলেন। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে তার করা গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে রিয়ালের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে প্যারিস সেন্ত জার্মেই (পিএসজি)।
পার্ক দেস প্রিন্সে এদিন মেসি-এমবাপে-ডি মারিয়াকে নিয়ে আক্রমণভাগ সাজিয়েছিল পিএসজি। অন্যদিকে করিম বেনজেমার খেলা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও একাদশে তাকে রাখেন কার্লো আনচেলোত্তি। বেনজেমা-ভিনিসিউস-আসেনসিওকে নিয়ে আক্রমণভাগ সাজায় রিয়াল।
অবশ্য ঘরের মাঠে পুরো ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করে খেলে পিএসজি। ৫৭ শতাংশ বলের দখল ছিল তাদের কাছে। একের পর এক আক্রমণ শানানো পিএসজি ম্যাচে ২১টি আক্রমণ করে। তার মধ্যে ৮টি ছিল অন টার্গেটে। অন্যদিকে রিয়াল আক্রমণ করে মাত্র ১টি। গোলমুখে একটিবারের জন্যও শট নিতে পারেনি তারা। ৭টি কর্নার পায় পিএসজি, রিয়াল মাত্র ১টি।
রিয়ালের বিপক্ষে এদিন পঞ্চম মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল পিএসজি। এসময় বক্সের বামদিক থেকে কালিয়ান এমবাপে ভেতরে বল বাড়িয়ে দেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াকে। আর্জেন্টাইন তারকা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগটি। তিনি উড়িয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন।
১৮ মিনিটে গোলের আরও একটি সুযোগ তৈরি করেছিল পিএসজি। এ সময় লম্বা পাসে বল পেয়ে যান কালিয়ান এমবাপে। তিনি বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। তার সামনে ছিলেন থিবাউট কোর্তোয়া। পেছনে দানি কারবাহাল। কোর্তোয়াকে একা পাওয়ার পাশাপাশি সময়ও পেয়েছিলেন কিছুটা। কিন্তু জোরালো শট নিতে পারেননি। পারেননি গোল করতে। তার নেওয়া শট কোর্তোয়ার ডান পায়ে লেগে কর্নার হয়। প্রথমার্ধে একমাত্র এটিই ছিল পিএসজির অন টার্গেটে শট।
বিরতির পর ৬১ মিনিটে পেনাল্টি পায় পিএসজি। এ সময় কালিয়ান এমবাপেকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন দানি কারবাহাল। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি নিতে আসেন লিওনেল মেসি। তিনি ডানদিকে নিচু শট নন। সেদিকেই ঝাপিয়ে পড়ে রুখে দেন রিয়ালের গোলরক্ষক কোর্তোয়া।
৭৩ মিনিটে নেইমার মাঠে নামেন। তাতে পিএসজির আক্রমণের ধার বাড়ে। তৈরি হতে থাকে গোলের সুযোগ। মিসও হতে থাকে সেগুলো। পিএসজির লাগাতার আক্রমণ আর সুযোগ মিসের মহড়ার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় গোলশূন্যভাবে।
কিন্তু যোগ করা সময়ে (৯০+৪) পিএসজির ত্রাণকর্তা হয়ে উঠেন ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকা এমবাপে। তিনি স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাস আর উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ্য এনে দেন। এ সময় নেইমারের বাড়িয়ে দেওয়া বল বক্সের বামদিকে পেয়ে যান তিনি। সামনে ছিলেন কোর্তোয়া। বুদ্ধিদীপ্ত শট নেন। বল কোর্তোয় দুই পায়ের ফাঁকা দিয়ে জালে প্রবেশ করে।
ঘুমন্ত পার্ক দেস প্রিন্স সমুদ্রের গর্জনের মতো জেগে উঠে। জাগাটাই তো স্বাভাবিক। পুরো ম্যাচে পিএসজি যেভাবে প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে তাতে এই ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হলে পচেত্তিনোর শিষ্যদের প্রতি অবিচার হতো।
হারের পাশাপাশি রিয়ালের জন্য দুঃসংবাদও রয়েছে। এই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখেছেন কাসেমিরো। তাতে করে পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে খেলতে পারবেন না ব্রাজিলিয়ান এই তারকা।