সংক্ষিপ্ত স্কোর: প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা ২৮২/৫ (৯৭ ওভার); প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ- ৩৬৫/১০ (১১৬.২ ওভার) মুশফিক ১৭৫*।
৯০ ওভার খেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টির বাগড়ায় খেলা হলো ৫১ ওভার। ৩৯ ওভারই বৃষ্টিতে পণ্ড। বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে শ্রীলঙ্কা ব্যাট হাতে দারুণ জবাব দিয়ে ঢাকা টেস্টে শক্ত অবস্থানে আছে।
হাতে ৫ উইকেট রেখে বাংলাদেশর করা ৩৬৫ রানের থেকে ৮৩ রানে পিছিয়ে তারা। মিরপুর শের-ই-বাংলায় তৃতীয় দিনের খেলা শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৮২ রান। ফিফটি পাওয়া ম্যাথুজ অপরাজিত আছেন ৫৮ রানে। তাকে সঙ্গ দেওয়া দিনেশ চান্দিমাল করেছেন ১০ রান।
বাংলাদেশ আজ ৩ উইকেট পেয়েছে। প্রথম সেশনে ইবাদত ও সাকিব অতিথি শিবিরে আক্রমণ করেন। দ্বিতীয় সেশন বৃষ্টিতে পণ্ড হয়। তৃতীয় সেশনে ফিরে সাকিব পেয়ে যান আরেকটি উইকেট।
রিভিউ নিয়ে ধনাঞ্জয়াকে ফেরাল বাংলাদেশ
অসাধারণ এক রিভিউতে সাকিব আল হাসান পেলেন তৃতীয় উইকেট। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান বাঁহাতি স্পিনার। তার হাওয়ায় ভাসানো বল ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করেছিলেন ফিফটি পাওয়া ধনাঞ্জয়া।
সাকিব উইকেটের আবেদন করেননি। কিন্তু পেছন থেকে লিটন, শান্ত এবং ফরোয়ার্ডে থাকা জয় আবেদন করে যান। আম্পায়ার জো উইলসন তাতে সাড়া দেননি। সতীর্থদের আত্মবিশ্বাসী আবেদনে মুমিনুল রিভিউ নেন। রিপ্লেতে দেখা যায় বল ধনাঞ্জয়ার ব্যাটে আলতো চুমু খেয়ে বল লিটনের গ্লাভসবন্দী হয়। ৯৫ বলে ৫৮ রান করে ধনাঞ্জয়া ফেরেন সাজঘরে। পঞ্চম উইকেটে ম্যাথুজ ও ধনাঞ্জয়া ১০২ রানের জুটি গড়েছিলেন।
বাংলাদেশের রিভিউ নেওয়া, না নেওয়া নিয়ে হরহামেশা বিতর্ক তৈরি হয়। কিন্তু এবার দলীয় সিদ্ধান্তে নিজেদের পক্ষে ফল পেল বাংলাদেশ।
সাকিবকে ছক্কায় উড়িয়ে ম্যাথুজের ফিফটি
সাকিবের আরেকটি ধীর গতির বল। ফ্লাইটের বিপরীতে ম্যাথুজের আক্রমণ। উইকেটের পেছন থেকে লিটন ‘ক্যাচ ইট’ বলে উঠেছিলেন। কিন্তু চোখের পলকে বল লং অফ দিয়ে সীমানার বাইরে। ওই ছক্কায় ম্যাথুজ পেয়ে যান ক্যারিয়ারের ৩৮তম ফিফটি। শটে টাইমিং মেলাতে না পারলেও যথেষ্ট শক্তি ছিল। তাতেই বল হাওয়া ভেসে চলে যায় সীমানার বাইরে।
বল হাতে নিয়েই তোপের মুখে খালেদ
বৃষ্টি বিরতির পর বল হাতে নিয়েই খালেদ আহমেদ তার এক ওভারে ৯ রান দিলেন। এর মধ্যে টানা দুটি চার হজম করেছেন তিনি। ৮১তম ওভারের শেষ দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৮৭তম ওভারে তার ওভারে চার হাঁকিয়ে ধনাঞ্জয়া তুলে নেন ফিফটি। ওই ওভারের শেষ বলে পুল করে আরেকটি চার হাঁকান ধনাঞ্জয়া। সব মিলিয়ে ১৫ ওভারে ১ মেডেনে ৬২ রান দিয়েছেন ডানহাতি পেসার।
চার ঘণ্টা পর খেলা শুরু, ম্যাথুজ-ধনঞ্জয়ার প্রতিরোধ
বৃষ্টিতে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হয়েছে। মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়রা। বেলা ১২টায় বৃষ্টি নামে। এরই মধ্যে লাঞ্চ ও চা বিরতি শেষ করা হয়েছে। খেলা ৬টা পর্যন্ত হবে বলে জানা গেছে। দিনের খেলার বাকি এখনও ৩৭ ওভার। চতুর্থ ও পঞ্চম দিন আধঘণ্টা আগে শুরু হবে খেলা।
লম্বা সময় বন্ধ থাকার পর ৪ উইকেটে ২১০ রানে খেলা শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ শক্ত প্রতিরোধ গড়েছেন বাংলাদেশি বোলারদের সামনে।
থেমেছে বৃষ্টি, খেলা শুরু ৪টায়
দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ের বৃষ্টিতে মিরপুরের সবুজ গালিচা ভিজে একাকার। দুপুর ১২টার পর আচমকা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি থামে ২টা ১০ মিনিটে। বৃষ্টিতে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা পণ্ড হয়েছে। এরই মধ্যে চা-বিরতি কল করা হয়েছে।
এর আগে বৃষ্টি থামার পর আম্পায়াররা মাঠে ঢুকে আউটফিল্ড পর্যবেক্ষণ করেছেন। বেলা ৩টায় মাঠ দেখেন তারা। এরপরই খেলা শুরুর সময় জানানোর কথা ছিল। কিন্তু আউটফিল্ড খেলার উপযোগী না হওয়ায় আম্পায়াররা ফের মাঠ পরিদর্শন করেন বেলা সাড়ে ৩টায়। এর কিছুক্ষণ পর তারা ৪টায় খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত জানান।
বাংলাদেশের করা ৩৬৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২১০ রান। এখনো ১৫৫ রানে পিছিয়ে আছে অতিথিরা। সকালের সেশনে মোট ২৪.১ ওভার খেলা হয়েছে। রান হয়েছে কেবল ৬৭। ২ উইকেট তুলে বাংলাদেশই ছিল এগিয়ে।
বৃষ্টির বাগড়ায় বিরতির পরও বন্ধ খেলা
মধাহ্ন বিরতির ঠিক আগে বৃষ্টির বাগড়ায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ৪০ মিনিটের বিরতি শেষে খেলা শুরু করা যায়নি। তুমুল বৃষ্টিতে বন্ধ ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা। মিরপুরের আকাশ কালো মেঘে ঢাকা। সহসাই বৃষ্টি থামবে কিনা বলা মুশকিল। বাংলাদেশের করা ৩৬৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২১০ রান। এখনো ১৫৫ রানে পিছিয়ে আছে অতিথিরা। সকালের সেশনে মোট ২৪.১ ওভার খেলা হয়েছে। রান হয়েছে কেবল ৬৭। ২ উইকেট তুলে বাংলাদেশই ছিল এগিয়ে।
বিরতির আগে বৃষ্টির বাগড়া
মধাহ্ন বিরতির আগে শেষ ওভার করতে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। মিরপুরের আকাশ তখন কালো মেঘে ঢাকা। বোঝা যাচ্ছিল আচমকা বৃষ্টি ঝরবে। সাকিব এক বল করার পরই ঝুম বৃষ্টি। দৌড়ে ক্রিকেটাররা ঢুকলেন ড্রেসিংরুমে। ৫ বল আগে আম্পায়াররা মধাহ্ন বিরতি কল করেন। ১২টা ৪০ মিনিটে আবার খেলা শুরু হবে। এই সেশনে মোট ২৪.১ ওভার খেলা হয়েছে। রান হয়েছে কেবল ৬৭। ২ উইকেট তুলে বাংলাদেশই এই সেশনে এগিয়ে। শ্রীলঙ্কা এখনো ১৫৫ রানে পিছিয়ে।
শ্রীলঙ্কাকে চাপে রেখেছে বাংলাদেশ
সকালে ২ উইকেট তুলে নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে চাপে রেখেছে বাংলাদেশ। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তাদের দ্রুত রান তুলতে দিচ্ছেন না বোলাররা। দুই পেসার ইবাদত ও খালেদের সঙ্গে হাত ঘুরিয়েছেন সাকিব ও তাইজুল। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ম্যাথুজ ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন বোলাররা। শ্রীলঙ্কার রান এরই মধ্যে দুইশ ছাড়িয়েছে। পঞ্চম উইকেটে জুটি বাঁধার চেষ্টায় ম্যাথুজ ও ধনাঞ্জয়া।
টানা ভালো বোলিংয়ের পুরস্কার পেলেন সাকিব
সাকিবের দিনের প্রথম ওভারে করুণারত্নে একটি চার হাঁকিয়েছিলেন। পরের তিন ওভার মেডেন বাঁহাতি স্পিনারের। চতুর্থ ওভারে মোসাদ্দেক মিস ফিল্ডিং না করলে ওই ওভারটিও মেডেন হয়ে যেত। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখা সাকিব পঞ্চম ওভারে পেয়ে গেলেন সাফল্য।
বারবার সুযোগ পাওয়া করুণারত্নকে বোল্ড করে সাকিব দেখিয়েছেন সাজঘরের পথ। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে হাওয়ায় ভাসানো বল অফস্টাম্প বরাবর পিচ করে বাক খেয়ে করুণারত্নের মিডল স্টাম্পে আঘাত করে। বলের ফ্লাইট দেখে পায়ের ব্যবহার করে সামনে খেলতে চেয়েছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক। তাতেই বিপদ ডেকে আনেন। ৮০ রানে সাজঘরে ফিরেছেন করুণারত্নে। সাকিব পেয়ে গেলেন নিজের দ্বিতীয় উইকেট।
রাজিথাকে ফিরিয়ে দিন শুরু বাংলাদেশের
নাইটওয়াচম্যান ব্যাটসম্যানকে থিতু হতে দিলেন না ইবাদত হোসেন। দিনের দ্বিতীয় বলে কাশুন রাজিথাকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখালেন। তৃতীয় দিনের শুরুতে বল হাতে সাফল্য পেল বাংলাদেশ। দল যেমন শুরু চেয়েছিল তেমন শুরু এনে দিলেন ডানহাতি পেসার। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। চট্টগ্রামে ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান ১৯৯ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হন শূন্য রানে। আজ কেমন করেন সেটাই দেখার।
সুযোগ নিতে পারবে তো বাংলাদেশ?
পড়ন্ত বিকেলে সাকিবের বলে কুশল মেন্ডিস এলবিডব্লিউ। এরপর কাশুন রাজিথাকে নিয়ে দিন কাটিয়ে দেন দিমুথ করুণারত্নে। অথচ এই ইনিংসে তিনটি সুযোগ দিয়েও টিকে আছেন। তাইজুলের বলে শর্ট লেগে জয়, স্কয়ার লেগে মুমিনুল তার ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি। আরেকবার তার নিশ্চিত এলবিডব্লিউয়ে রিভিউ নিতে সাহস করেননি মুমিনুল হক। তাতে লঙ্কান অধিনায়ক পেয়ে যান সুযোগ। সেগুলো হাতছাড়া না হলে ম্যাচের গল্পটা অন্যরকম হতে পারতো। হয়নি। তবে সুযোগ আবারো আসবে। আজ সেই সুযোগগুলো নিতে পারলেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
কে নেবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ?
ঢাকা টেস্টের দুই দলই ফল প্রত্যাশা করছে। অতীত রেকর্ড তাই বলে। এই মাঠে আগের ২২ ম্যাচের ১৯টিতেই হয়েছে ফল। ড্র হওয়া তিন ম্যাচেই বড় প্রভাব ছিল বৃষ্টির। এবার বৃষ্টির চোখ রাঙানি নেই। তবে প্রকৃতির ওপর তো কারো হাত নেই।
বৃষ্টির প্রভাব থাকুক আর নাই থাকুক ম্যাচে ফল চায় দুই দল। দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত দুই দল সমানে সমান লড়াই করেছে। আজ যারা এগিয়ে থাকবে ম্যাচের নাটাই থাকবে তাদের হাতেই। বাংলাদেশ সকালের সেশনে দুই-তিনটি উইকেট নিতে পারলে এগিয়ে যাবে। আর শ্রীলঙ্কা চাইবে রান বড় করতে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কে নেবে সেটাই দেখার।