দেশে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশ ও উন্নয়নের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। অন্যথায় উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না।’
রোববার (৫ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষরোপণ অভিযান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই জীবনযাপন’ এর ওপর জোর দিয়ে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘শুধু একটাই পৃথিবী’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের পথে সবাইকে প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধান গ্রহণ করতে হবে। ‘এটি অবিলম্বে প্রয়োজন।তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পে একটি শর্ত পূরণ করতে হবে: প্রতিটি গাছ কাটার বিপরীতে কমপক্ষে পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির জন্য উন্নয়ন প্রয়োজন। তবে উন্নয়ন অবশ্যই প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে ন্যায়সঙ্গতভাবে ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে।
সরকার এলোমেলো শিল্পায়ন রোধ এবং আবাদি জমি সংরক্ষণের জন্য সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এসব প্রকল্পে ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণের জন্য বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব খাদ্যশস্যের ঘাটতির ঝুঁকির মধ্যে থাকায় এক ইঞ্চি আবাদি জমি অনাবাদি না রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জমি উর্বর এবং আমাদের জনবল আছে। আমাদের নিজেদের ফসল উৎপাদন করতে হবে, আমাদের যা প্রয়োজন তাই উৎপাদন করতে হবে। আমাদের অন্যের ওপর নির্ভরতা ত্যাগ করতে হবে।’
তিনি বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জনবল ২৬৫ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ১৩৩ করা হয়েছে। ৫০টি জেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় একটি করে কার্যালয় স্থাপন করা হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ স্বাগত বক্তব্য দেন।
পরিবেশ রক্ষায় সরকারি কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শন করা হয়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পরিবেশমন্ত্রী বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বঙ্গবন্ধু পুরস্কার এবং জাতীয় পরিবেশ পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেন।
শেরে বাংলা নগরে জাতীয় পরিবেশ মেলা ও জাতীয় বৃক্ষমেলা-২০২২ এরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।