স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের শিবালয়ের আমডালা বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে অন্তত ৩৫/৪০টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বহু বছর ধরে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এই নদীর ওপর স্থাপিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারপার হচ্ছে।
জনসাধারণসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিশাল এই বাঁশের সাঁকো পারাপারের সময় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে দারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কৃষকদেরও। ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
এলাকাবাসী জানান, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আমডালা বাজারের পশ্চিমপাশ দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদী। এই নদীর ওপর একটি সেতু না থাকায় দুই পাড়ের অন্তত ৩৫/৪০টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে দুবলাডাঙ্গা, চরেরডাঙ্গা, নতুন ফরিদপুর, অন্বয়পুর, দাসকান্দি, রুপসা, নালী, হিমগঞ্জ, আনুলিয়া, ঋভাদি, চকপাড়া, আড়পাড়া, পাইপাড়া, মাধবদিয়া, উত্তর কাসাদুর, চরআমডালা, টেপড়া, দশচিড়া, উলাইল, কোনাবাড়ি, রঘুনাথপুরসহ অন্তত ৩৫/৪০টি গ্রামের মাানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে থাকে। বাজারের সাথেই রয়েছে আমডালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ভূমি অফিস। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় সব সেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর নিজস্ব খরচে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো। আর এই বিশাল সাঁকো ঝুঁকি নিয়ে পার হতে গিয়ে প্রায়দিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্কুলের শিক্ষার্থীসহ বয়স্ক নারী-পুরুষ। সাঁকো পার হয়ে হাসপাতালে যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় দুই পাড়ের অসুস্থ্য রোগীদের।
এ অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি বাজারজাতকরণে বিকল্প রাস্তায় অতিরিক্ত ৬/৭ কিমি. ঘুরে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয় স্থানীয়দের। তাই জনস্বার্থে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি অত্র এলাকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষের।
স্থানীয়রা ক্ষোভের সাথে জানান, স্বাধীনতার পর বিএনপি ও আওয়ামীলীগ যে দলই ক্ষমতায় এসেছে এমপিরা এখানে একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাসে শুধু ভোটই নিয়েছেন কিন্তু নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সেই প্রতিশ্রুতিও ভুলে গেছেন। আর কোন খোঁজখবর নেন নাই। তারা শুধু আশ্বাসই পেয়ে যাচ্ছেন কিন্তু সেতু আর পাচ্ছেন না। তাই এ অঞ্চলটি এখনো উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত হয়ে অন্ধকারেই রয়ে গেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। প্রতি বছরই বিভিন্ন এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোকজনের কাছ থেকে ধান, চাল ও টাকা সংগ্রহ করে সেই টাকা দিয়ে এই বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। তাই এখানে ব্রীজ না হওয়া পর্যন্ত দূর্ভোগের শেষ নেই।
মানিকগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, কোন স্থানে সেতু নির্মাণ করতে হলে ওই স্থানের দুই পাশে এলজিইডি’র তালিকাভুক্তি রাস্তা থাকতে হবে। ইছামতি নদীর ওই স্থানের দুইপাশে এলজিইডি’র তালিকাভুক্তি কোন সড়ক নেই। তাই এতোদিন সেতু নির্মাণ হয়নি। বিষয়টি আমি এখন জানলাম। অতি দ্রুত নদীর দুইপাড়ের রাস্তা এলজিইডি’র তালিকাভুক্তির জন্য আগে আবেদন করবো। রাস্তাটি তালিকাভুক্তি হয়ে গেলে ওই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। প্রস্তাবনা পাশ হয়ে গেলেই এরপর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।