নিউজ ডেস্ক:
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রোববার রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। ফেভারিট দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট কেটেছে পাকিস্তান, কিন্তু আন্ডারডগ শ্রীলঙ্কা যেন পুরো টুর্নামেন্টের বিস্ময়।
ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের সমীকরণ এলোমেলো করে দিয়ে রোহিত শর্মার ভারতকে হটিয়ে জায়গা করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আফগানদের কাছে হেরে শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কার। বাংলাদেশকে বিদায় করে দিয়ে যেন আলাদীনের চেরাগ পেয়ে যায় লঙ্কানরা। এরপর টানা তিনটি ম্যাচই জিতেছে দলটি। ভারতের পর ফাইনালের মহড়ায় হারিয়েছে পাকিস্তানকেও।
অন্যদিকে ভারতের কাছে হার দিয়ে শুরু করা পাকিস্তান সেই প্রতিশোধ নেয় সুপার ফোরে। বাবর আজমের দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে মুহূর্তেই। সেই পুরস্কার পেলো ফাইনাল নিশ্চিত করে। তবে তাদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল আফগানিস্তান। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়ে ফাইনালে ওঠার কঠিন সমীকরণে যেতে হয়নি।
ইতিহাস বলছে এশিয়া কাপে অন্যতম সফল দল শ্রীলঙ্কা। এটি তাদের দ্বাদশ ফাইনাল। যদিও শেষবার তারা এশিয়া কাপ জিতেছে ঢাকায় সেই ২০১৪ সালে। পাকিস্তানকে হারিয়ে আজ তাদের সামনে ষষ্ঠ শিরোপার হাতছানি। আর চারবার ফাইনাল খেলে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হয়েছে তিনবার। তাতে জয়ের পাল্লা ভারি শ্রীলঙ্কার। তাদের জয় দুটি আর পাকিস্তানের একটি।
কাগজে-কলমের হিসেবে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। শুধু তাই নয় চলমান আসরে একবারের দেখায়ও জয় শ্রীলঙ্কার। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের হারের পর যেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে তারা। ভয়ডরহীন ক্রিকেটের সবচেয়ে উপযুক্ত উদাহরণ হতে পারে দলটি। তাদের ধ্যানজ্ঞান যেন আসো, মারো, এবং জিতো। ১১ জনের একই মানসিকতা। তাই তো থিকসানা বলেছিলেন, ‘আমাদের ১১ জন ভাই আছে।’
লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা বলেন, ‘হার দিয়ে আসর শুরু করলেও আমরা কিন্তু দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এতেই আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। ট্রফি জয়ের পথে যেটা আমাদের এগিয়ে রাখবে। পাকিস্তান শক্তিশালী দল, ফাইনালে তাদের হারানো সহজ কথা নয়। আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা সাজাবো।’
তবে দুর্দান্ত বোলিং অ্যাটাক নিয়ে পাকিস্তান ছেড়ে কথা বলবে না। নাসিম শাহ-হাসনাইনরা হয়ে উঠতে পারেন বাজির ঘোড়া। তবে ব্যাটিংয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছে না বাবর আজমদের। একেক ম্যাচে একেকজন পারফর্ম করছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তো পেসার নাসিম জিতিয়েছেন তাদের। আর অলরাউন্ডার শাদাব খান ছিলেন ম্যাচসেরা। বোলিং-ব্যাটিংয়ে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন তিনি। ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যাশা থাকলে ব্যাটসম্যানদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
পাকিস্তান অধিনায়ক বাবরের তো তর সইছে না ফাইনালে নামার জন্য, ‘অধিনায়ক হিসেবে ফাইনালে কোনও দলকে নেতৃত্ব দেওয়া দারুণ কিছু। আমরা ট্রফি জয় থেকে এখন মাত্র এক পা দূরে। সব অধিনায়ক এবং সব দল ট্রফি জিততে চায়। দল হিসেবে আমাদের লক্ষ্য ভালো পারফর্ম করা এবং ট্রফি জেতা।’
ফাইনালের লড়াইয়ে টসভাগ্য হতে পারে বড় ফ্যাক্টর। টুর্নামেন্টে একটি বিষয় যেন এক প্রকার নিশ্চিত, টস জয় যেন ম্যাচই জয়। এই ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা না। রান তাড়া করা দলগুলো যে সবচেয়ে বেশি সফল এবারের আসরে। বাবর-শানাকা এই টসেও অবশ্য জিততে চাইবেন।
দুই দলের লড়াইয়ে ট্রফি জিতবে একটি দলই। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হতে হতেও হয়নি বাবরদের। এই এশিয়া কাপ দিয়েই কি তবে বাবর যুগের শুরু হতে যাচ্ছে? নাকি উত্থান হবে ভয়ডরহীন লঙ্কা ব্র্যান্ডের ক্রিকেটের? অপেক্ষা করতে হবে রাত অব্দি।