হার থেকে যদি ভালো কিছু হয়, তবে হারই ভালো- এমন কথা শ্রীলঙ্কার জন্য একদম ফিটফাট খেটে যায়। প্রথম ম্যাচে ধাক্কা খেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প ইদানিং ভালোভাবে লেখছে তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও হলো তাই। ‘পুঁচকে’ নামিবিয়ার কাছে বিব্রতকর হারের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথম রাউন্ড থেকে সবার আগে সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নিলো দাসুন শানাকার দল। হারলেও ডাচদের বিদায় নিতে হচ্ছে না এখনই। নামিবিয়া আমিরাতের কাছে হারলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গী হবে তারাও।এর আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হার দিয়ে শুরু হলেও সিরিজ হাতছাড়া হয়নি। ১০ উইকেটে হার দিয়ে শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচ ইনিংস ব্যবধানে জিতে টেস্ট সিরিজ ১-১ এ ড্র। ওয়ানডেতেও প্রথমটি হেরে পরের তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়। পাকিস্তানের বিপক্ষেও তো একইভাবে দারুণ প্রত্যাবর্তন, প্রথম টেস্ট হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ ভাগাভাগি। আর এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে বড় ব্যবধানে হারার পর আর মাটিতে নামেনি। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে ঘরে নিয়ে গেলো ট্রফি। নামিবিয়ার কাছে বিবর্ণ বোলিং-ব্যাটিংয়ে ৫৫ রানে হার মানে শ্রীলঙ্কা। নেট রান রেটে এতই পেছনে পড়েছিল যে প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিয়ে কথা উঠছিল। কিন্তু আমিরাতকে ৭৯ রানে হারিয়ে পথে ফেরে তারা। সবশেষ বাঁচা-মরার লড়াইয়ে টানা দুই ম্যাচ জেতা ডাচদের ১৭ রানে হারিয়ে নিশ্চিত করলো সুপার টুয়েলভ। অবশ্য শ্রীলঙ্কাকে সহজে ছেড়ে দেয়নি ডাচরা। ১৫তম ওভারে ১০০ রান যোগ করে চোখ রাঙাচ্ছিল তারা। কিন্তু স্কট এডওয়ার্ডসের উইকেট পড়ার পর পথ হারায় দলটি। ৪ উইকেটে ১০০ রান করা ডাচরা ১০৯ রানেই ৮ উইকেট হারায়। দলীয় ১২৩ রানে নবম উইকেট পড়ার পর একপ্রান্ত আগলে রাখা ম্যাক্স ও’ডাউড শেষ লড়াই চালিয়ে যান। ১৮ ওভার শেষে যখন স্কোর ৯ উইকেটে ১২৪, তখন ১৯তম ওভারে মাহিশ ঠিকশানার নো বলে ছয় মারেন এই ডাচ ওপেনার। একই ওভারে আরেকটি ছয় মেরে ১৬ রান তুলে নেন। তাতে ম্যাচে উত্তেজনা ছড়ায়। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৩ রান।লাহিরু কুমারা বল হাতে নিয়ে চাপ সামলে নেন দারুণভাবে। গত বছরের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলারের কাছে শেষ ওভারে ১৮ রান হজম করে হারার স্মৃতি এখনও যার মন থেকে মুছে যায়নি। অবশ্য এবার তেমন কিছু হয়নি। দেন মাত্র ৬ রান। ১৬৩ রানের লক্ষ্যে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৬ রান করে ডাচরা। ৫৩ বলে ৬ চার ও ৩ ছয়ে সাজানো ও’ডাউডের অপরাজিত ৭১ রান বৃথা গেলো। আর কুশল মেন্ডিসের ৪৪ বলে ৭৯ রানে ভর করে সব আশঙ্কা উড়িয়ে পরের পর্বে পা রাখলো শ্রীলঙ্কা। তাদের স্পিনারদের অবদানও কম নয়। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা তিন উইকেট নেন, দুটি পান মাহিশ ঠিকশানা।