শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিকঠাক রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। ঘুমের ঘাটতির সঙ্গে নানারকম দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে।
ঘুমের অভাবে হৃদরোগ, রক্তনালীর রোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও স্মৃতিভ্রংশতার ঝুঁকি বাড়ে। এমনকি একদিনের ঘুমের ঘাটতিও সুস্থতার ক্ষতি করতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা পর্যাপ্ত ঘুমান না তাদের উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও আকস্মিক মেজাজ পরিবর্তন বা বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বেশি।
তবে কম ঘুমানোর মতোই বেশি ঘুমানোটাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তর্গত কেক স্কুল অব মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক রাজ দাসগুপ্ত বলেন, একজন মানুষের কতক্ষণ ঘুমানো দরকার তার উত্তর সহজে দেয়া যায় না। কতক্ষণ ঘুমানো প্রয়োজন তা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু সাধারণ সুপারিশকৃত পরিসর হলো- প্রতিরাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা। বয়স অনুসারেও সুপারিশকৃত পরিসর রয়েছে।
ডা. রাজের মতে, ঘুমের পরিমাণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ঘুমের মানও বজায় রাখতে হবে। ঘুমের পরিমাণ ঠিক থাকার পরও ক্লান্তি লাগলে বুঝতে হবে যে ঘুমের মান বজায় ছিল না। ঘুমের মধ্যে আমরা কিছু স্টেজে চলে যাই, কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন ঘুম না হলে এসব স্টেজে পৌঁছানো অসম্ভব হতে পারে। ঘুমের স্টেজগুলোতে পৌঁছলে দিনের বেলা শরীর ও মন দুটোই সতেজ থাকে।
বয়স অনুসারে ঘুমের পরিমাণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের পরামর্শ হলো-
* শূন্য থেকে ৩ মাস বয়সী শিশুদের ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
* ৪ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের জন্য ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুম দরকার হয়।
* ১ থেকে ২ বছর বয়সী শিশুদের দরকার হয় ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টার ঘুম।
* ৩ থেকে ৫ বছর বয়সীদের জন্য ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা।
* ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুদের রাতে অন্তত ৯-১১ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তবে নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঠিকঠাক ঘুমাতে পারলেও ওরা নিজেকে চালিয়ে নিতে পারে।
* ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের।
* ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী মানুষের রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
* ২৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষের রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
* ৬৫ বছরের চেয়ে বেশি বয়সীদের জন্য ঘুমানো প্রয়োজন ৭-৮ ঘণ্টা।
তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন