নিউজ ডেস্ক:
গতকাল শুক্রবার দুপুরেই আব্বু-আম্মুর সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিলো। আম্মু আব্বুকে বলেছিলেন আমাকে মাদরাসায় দিয়ে আসতে। কিন্তু আব্বু দিয়ে আসেনি। এসব বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া শফিয়ার রহমান (৩৮) ও নাসরিন আক্তার (৩৬) দম্পতির বড় ছেলে শাহরিয়ার নাফিস।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদরাসা থেকে মাকে দেখতে বাড়িতে এসেছিলেন নাফিস। কিন্তু এই দেখাই যে শেষ দেখা হবে তা কে জানতো।
একদিকে শফিয়ার-নাসরিনের দগ্ধ লাশ অন্যদিকে ঘরের বাইরে নাফিসের চিৎকারে থমকে গেছে পরিবেশ। নাফিসের কান্না দেখে আশপাশের শতশত মানুষকেও কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে।
নাফিস বলে, ‘আমার মা অনেক কষ্ট করতেন। চাকরি করে আমাকে টাকা দিতেন। কিন্তু আমার মা বাবার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো।’ কথা শেষ করতেই জ্ঞান হারান নাফিস।
নাফিসের মতো নিহত স্বামী-স্ত্রীর পরিবারের অনেক সদস্যদের একই কথা। দীর্ঘদিন ধরেই এই দম্পতির পরিবারে ঝগড়া-বিবাদ চলচিল। তবে এমন মৃত্যুতে তারা সবাই স্তম্ভিত হয়ে গেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুকুর শিকদারের ছয়তলা ভবনের নিচতলাতে ভাড়া থাকতেন ওই দম্পতি। বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রহরী ওই রুমে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান। পরে তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাদের মধ্যে একজন ৯৯৯ ফোন দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সিআইডি এসে আলামত সংগ্রহ করেন।
নাসরিনের ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ওদের মধ্যে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো। গত কয়েকদিন আগেও এসে তাদের ঝামেলা মিটিয়ে গিয়েছি। বোনটা জীবনেও সুখ পেল না। ঘরে কীভাবে আগুন লাগলো এটাই বুঝতে পারছি না। এতো কষ্ট করে মারা গেলে। কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।