নিউজ ডেস্ক:
ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনার হাত ধরে ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তুলেছিল আর্জেন্টিনা। তিন আসরে দ্বিতীয় ফাইনাল খেলে পশ্চিম জার্মানিকে হারানোর সুখস্মৃতি নিয়েই এতদিন কেটে গেছে আলবিসেলেস্তেদের। নতুন করে লেখা হয়নি কোনও সাফল্যের গল্প। আবার এসেছে সুযোগ। তিন বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ফাইনাল, ব্রাজিলের ব্যর্থতা ভুলে নতুন উদ্যোমে এগিয়ে মাঠে নামার পালা। আর্জেন্টিনা কি পারবে ৩৬ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাতে?
আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স, যারা গত আসরের চ্যাম্পিয়ন। রাশিয়ায় শিরোপা জেতার পথে শেষ ষোলোতে এই দলকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল ফরাসিরা। তাদের সামনে ইতিহাস গড়ার সুযোগ, ইতালি ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জেতার হাতছানি।
বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে এই বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। দুই দলের আগুন-বারুদে লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বকাপে এটাই লিওনেল মেসির শেষ ম্যাচ। শেষটা রাঙাতে প্রস্তুত তিনি, তাকে জীবনের সেরা উপহার দিতে কোমর বেঁধে নামছে সতীর্থরা।
দুই দলেরই প্রধান অস্ত্র মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। তাদের থামাতে পারলেই যেন জয় অনেকটা সহজ হয়ে যায়। কিন্তু তারা শুধু প্রতিপক্ষের এই অস্ত্র নয়, পুরো দলকে নজরে রেখেছে।
আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেন, ‘ফ্রান্স শুধু এমবাপ্পে নির্ভর নয়। তাদের অনেক ফুটবলার আছে যারা ভয়ানক। এমবাপ্পে এখনও তরুণ, ফুটবলার হিসেবে সে আরও উন্নতি করতে পারে।’
ফ্রান্সের অধিনায়ক উগো লরিস বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, শুধু একজন খেলোয়াড়ের দিকে মনোযোগ দেওয়াটা ভুল। কারণ, ফাইনাল হবে দুটি বড় দেশের মধ্যে।’
তবে মেসিকে নিয়ে সতর্ক এই গোলকিপার, ‘প্রতিপক্ষ দলে মেসির মতো কেউ থাকলে বিশেষ নজর দিতেই হয়। তবে শুধু ওর দিকে তাকালেই হবে না। কারণ, আর্জেন্টিনা দলে বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে, তরুণ খেলোয়াড় আছে। ওরা সবাই জেতার জন্য এসেছে।’
মাঠে নামার আগে পুরো ফিট দলকে নিয়ে উজ্জীবিত আর্জেন্টিনা। প্লেমেকার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে এই ম্যাচে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক। তবে ফ্রান্সের ক্যাম্প ক্যামেল ভাইরাসে বিপর্যস্ত। তাদের পাঁচ খেলোয়াড় আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও শনিবার তারা অনুশীলন করায় কিছুটা স্বস্তি। এদিকে হাঁটুর সমস্যায় পড়েছেন দেশের সর্বকালের শীর্ষ গোলদাতা অলিভিয়ের জিরুদ।
দুই দলই দুইবার করে বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনা এবং ১৯৯৮ ও ২০১৮ সালে ফ্রান্স। সাফল্যের দৌড়ে কে এগিয়ে যায়, সেটাই প্রশ্ন। দুই দল ১২ বার মুখোমুখি হয়েছে ফুটবল মাঠে, যেখানে ৬ বার জিতেছে আর্জেন্টিনা, তিনবার জয় ফ্রান্সের, বাকি তিনটি ড্র।
তবে দোহায় আর্জেন্টিনাকে উজ্জীবিত রাখতে উপস্থিত ৪০ হাজারেরও বেশি দর্শক। সাদা ও আকাশি নীল জার্সিতে হয়তো ছেঁয়ে যাবে প্রায় ৯০ হাজার আসনের লুসাইল স্টেডিয়াম।
মেসির শেষ বিশ্বকাপ ও বিশ্বমঞ্চে শেষ ম্যাচ বলে কথা। তার হাতে ট্রফির প্রত্যক্ষদর্শী হতে কে না চাইবে! প্রায় চার দশকের অপেক্ষার অবসান হোক মেসির হাত ধরেই, এমনটাই চাওয়া সম্ভবত গোটা বিশ্বের।